ঘরোয়া ফুটবলে টানা দ্বিতীয়বার ট্রেবল জেতার সুযোগ ছিল (এক মৌসুমে তিন ট্রফি জয়) বসুন্ধরা কিংসের। পেশাদার লিগে ডাবল হ্যাটট্রিকেও চ্যাম্পিয়নের সুযোগ ছিল। তা আর হলো না, চ্যালেঞ্জ কাপ ও ফেডারেশন কাপে চ্যাম্পিয়ন হলেও পাঁচ মৌসুম ধরে রাখা লিগের ট্রফি হাত ছাড় হয়ে গেছে। নতুন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা মোহামেডান। প্রথম লেগে মোহামেডানের চেয়ে সাত পয়েন্টে পিছিয়ে থাকলেও কিংসকে ঘিরে অনেকেই আশাবাদী ছিলেন। কেননা দলটি যে কোনো পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে। দ্বিতীয় লেগেও একের পর এক পয়েন্ট হারিয়ে শিরোপার রাস্তা থেকে ছিটকে যায় কিংস। আবাহনীকে ২-০ গোলে হারিয়ে প্রথম লেগের প্রতিশোধও নিয়েছিল। এতেও লাভ হয়নি, আগের ম্যাচে রহমতগঞ্জের সঙ্গে ড্র, পরের ম্যাচের ব্রাদার্সের বিপক্ষে ড্র ও পুলিশের কাছে হেরে চেনা ঠিকানা হারিয়ে ফেলে বসুন্ধরা কিংস। টানা দুই ম্যাচে মূল্যবান পাঁচ পয়েন্ট হারানোর পর কিংস জয়ে ফিরেছে। এ শুধু জয় নয়, রীতিমতো জ্বলে ওঠা। এমন সময় তারা চেনা রূপে ফিরল তখন ঘরোয়া ফুটবলে সেরা ট্রফি হাত ছাড়া হয়ে যায়। গতকাল গাজীপুর শহীদ বরকত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত বসুন্ধরা গ্রুপ পেশাদার লিগের ম্যাচে তারা ইয়ংমেন্স ফকিরেরপুলকে ৭-২ গোলে হারায়। দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে কিংসের এমন গোল উৎসব করাটা স্বাভাবিক ঘটনা বলা যায়। কিন্তু গতকাল বরকত স্টেডিয়ামের মাঠের যে চেহারা তাতে ধান খেতের চেয়েও শোচনীয় ছিল। বৃষ্টিতে মাঠ এতটা অনুপযোগী ছিল যে, খেলোয়াড়রা দাঁড়াতেই পারছিলেন না। কিংসের সমর্থকরা এমন মাঠ দেখে চিন্তিত ছিল যে, দুর্বল ফকিরেরপুলের কাছে পয়েন্ট হারায় কি না। না, অনুপযোগী মাঠে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা দুর্দান্ত খেলেছে। ইয়ংমেন্সকে পাত্তায় দেয়নি। কিংসের বড় জয়ের বড় নায়ক রাকিব হোসেন। তিনি হ্যাটট্রিকসহ চার গোল করেন। ২৩, ৬৮, ৭৭ ও ৮৮ মিনিটে রাকিব প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠান। তার এ পারফরম্যান্স জাতীয় দলে অনুপ্রেরণা জোগাবে। ১০ জুন ঢাকায় এশিয়া কাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশ খেলবে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। গাজীপুরে বিজয়ী দলের বাকি তিন গোল করেন গফুরভ, ফাহিম ও রফিক। বিজিত দলের ব্যবধান কমান ট্রুডো ও টি দাস। শিরোপার আকর্ষণ শেষ হয়ে গেলেও রানার্সআপের গুরুত্ব রয়েছে। ঢাকা আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংসই এ লড়াই টিকে আছে। গতকাল এক ম্যাচ বেশি খেলে আবাহনীর সমান ২৮ পযেন্ট সংগ্রহ করেছে কিংস। গোল ব্যবধানে দুইয়ে উঠে এসেছে। লাইসেন্স না থাকায় চ্যাম্পিয়ন হয়েও এএফসি কাপে খেলতে পারছে না মোহামেডান। এ ক্ষেত্রে লিগ রানার্সআপ দলের খেলার সম্ভাবনা রয়েছে।
এরপর আবার ঘরোয়া আসরে চ্যালেঞ্জ কাপের ব্যাপার রয়েছে। সম্ভাবনা কার সেটাই এখন অপেক্ষা।