তামিম ইকবাল ও পারভেজ হোসেন ইমনের পর বাংলাদেশের তৃতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টি-২০ ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করতে পারতেন তানজিদ হাসান তামিম। ব্যাটিংও করছিলেন সেঞ্চুরির মতো। কিন্তু হেমন্তের সন্ধ্যায় ক্লান্তির সঙ্গে পেরে ওঠেননি তানজিদ। ব্যক্তিগত ৮৯ রানে আউট হন মিড অফে। ক্যারিয়ারের তানজিদের এটা ১০ নম্বর হাফ সেঞ্চুরি। বাংলাদেশের তৃতীয় ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ স্কোর। সেঞ্চুরিম্যান তামিম ১০৩* ও পারভেজ ইমন ১০০ রান করেন। তানজিদের টানা হাফ সেঞ্চুরির দিনে হ্যাটট্রিক করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের রোমারিও শেফার্ড। চট্টগ্রাম বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে গতকাল ছিল তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজের শেষটি। ম্যাচটি ছিল বাংলাদেশের হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচও।
হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর ম্যাচে লিটন বাহিনী খেলেছে একাদশে চার পরিবর্তন নিয়ে। পূর্ব ধারণা মতো বাদ পড়েছেন বাঁ-হাতি ব্যাটার শামীম হোসেন পাটোয়ারী। যিনি সর্বশেষ ১০ ম্যাচে চারটি শূন্য করেছেন। টানা খেলার ক্লান্তি এড়াতে বিশ্রাম দেওয়া হয় বাঁ-হাতি কাটার বোলার মুস্তাফিজুর রহমানকে। ছন্দ হারানোয় বাদ পড়েছেন তাওহিদ হৃদয়। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে আরেক ফাস্ট বোলার তানজিদ সাকিবকে। তাদের পরিবর্তে একাদশে সুযোগ পেয়েছেন বাঁ-হাতি পেসার শরিফুল ইসলাম, ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন, উইকেটরক্ষক ব্যাটার নুরুল হাসান সোহান ও স্পিন অলরাউন্ডার শেখ মেহেদি হাসান। সিরিজে এই প্রথম টস জিতে ব্যাটিং করে লিটন বাহিনী। আগের দুই ম্যাচে টাইগাররা হেরেছিল যথাক্রমে ১৬ ও ১৪ রানে। গতকাল ফ্লাইড লাইটে দুই বাঁ-হাতি ওপেনার তানজিদ ও পারভেজ ১৯ বলে ২২ রানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হন। সিরিজে প্রথমবার খেলতে নেমে ব্যর্থ হয়েছেন পারভেজ। আউট হয়েছেন ৯ রানে। অধিনায়ক লিটনও ৬ রানের বেশি করতে পারেননি। ৪৪ রানে ২ উইকেট পতনের পর জুটি গড়েন তানজিদ ও সাইফ হাসান। আগের দুই ম্যাচে ওপেন করা সাইফ গতকাল ৪ নম্বরে ব্যাট করেন। দুজনে ৭.১ ওভারে ৬৩ রান যোগ করেন স্কোর বোর্ডে। সাইফ ২৩ রানে সাজঘরে ফেরেন। তানজিদ আউট হন ২০ নম্বর ওভারের প্রথম বলে। তানজিদ ৮৯ রানের ইনিংস খেলেন ৬২ বলে ৯ চার ও ৪ ছক্কায়। বাঁ-হাতি ওপেনার তানজিদ ও সাইফ ছাড়া আর কোনো ব্যাটার দুই অংকের স্কোর করতে পারেননি।
দ্বিতীয় টি-২০ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের নায়ক ছিলেন রোমারিও শেফার্ড। তৃতীয় ম্যাচেও গতকাল দুরন্ত বোলিং করেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে টি-২০ ক্রিকেটে হ্যাটট্রিক করেন। ২০২২ সালে জেসন হোল্ডার প্রথম ক্যারিবীয় বোলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করেছিলেন ইংল্যান্ড ম্যাচে। ডান হাতি ফাস্ট বোলার হ্যাটট্রিক করেছেন দুই ওভারে। হ্যাটট্রিক করেছেন ১৬.৬, ১৯.১ ও ১৯.২ ওভারে উইকেট নিয়ে। ১৭ নম্বর ওভারের শেষ বলে শেফার্ড প্রথম আউট করেন নুরুল হাসানকে। ক্যারিবীয় বোলারকে তুলে মারতে যেয়ে লং অনে রভম্যান পাওয়েলের ক্যাচ হন সোহান। এরপর শেফার্ড বোলিংয়ে আসেন বাংলাদেশের ইনিংসে শেষ ওভারে। ইনিংসের শেষ ও ২০তম ওভারের প্রথম বলে আঘাত হানেন। শেফার্ডের বলে একটু সরে খেলতে চেষ্টা করেন সিরিজে টানা দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি করা তানজিদ তামিম। ব্যক্তিগত ৮৯ রানে ব্যাট করতে থাকা ক্লান্ত তানজিদ মিড অফে আউট হন হোল্ডারের হাতে। ওভারের দ্বিতীয় বলে বোল্ড করেন শরিফুল ইসলামকে। দুই ওভারে টানা তিন বলে উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম, ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ও ক্রিকেট বিশ্বের ৭৭তম হ্যাটট্রিক করেন। শেফার্ডের হ্যাটট্রিকের ম্যাচে বাংলাদেশের পক্ষে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৮৯ রান করেন তানজিদ। এটা তার ক্যারিয়ারসেরা এবং আসরে টানা দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি।