হেরে গেল ঢাকা আবাহনী। আকাশি-হলুদ জার্সিধারী আবাহনী হেরেছে আত্মঘাতী গোলে। শিরোপাপ্রত্যাশী আবাহনীকে ১-০ গোলে হারিয়েছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। কাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে খেলার ৩৭ মিনিটে ধানমন্ডি পাড়ার দলটির রক্ষণভাগের নাসিরুল ইসলামের ব্যাকপাস ধরতে পারেননি গোলরক্ষক শাহিদুল আলম সোহেল। এই হারে আবাহনীর পয়েন্ট ১০ ম্যাচে ১৯। হারলেও অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি আবাহনীর। দ্বিতীয় অবস্থানেই থাকছে। বরং ১৩ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে ব্রাদার্স। প্রথম পর্বে হারের প্রতিশোধও নিয়েছে গোপীবাগের দলটি।
আইএএফ শিল্ডে চোধ ধাঁধানো পারফরম্যান্স ছিল শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের। মন জয় করেছিল ভারতীয় ফুটবল সমর্থকদের। ফাইনালে কলকাতা মোহামেডানের কাছে টাইব্রেকারে হেরেছিল শেখ জামাল। কলকাতা থেকে ঢাকায় ফিরেই নিজেদের হারিয়ে ফেলে দলটি। লড়াই করতে থাকে ছায়ার সঙ্গে। হার-জিতের মধ্য দিয়েই পার করতে থাকে সময়। কাল নিটল টাটা বাংলাদেশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে কোনো রকমে জয় পেয়েছে শিরোপা প্রত্যাশী দলটি। দলের 'নিওক্লিয়াস' সনি নর্দেকে ছাড়া কাল বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ২-১ গোলের কস্টার্জিত জয় চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে। ঘাম ঝরানো জয় পেলেও ১০ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরেই অবস্থান করছে দলটি। চট্টগ্রাম আবাহনীর সমান ম্যাচে পয়েন্ট মাত্র ৫।
ক্লাব থেকে ১৫ দিনের ছুটি নিয়েছেন হাইতিয়ান স্ট্রাইকার নর্দে। ক্লাব সূত্র জানাচ্ছে, বেলজিয়াম লিগে খেলার জন্য তিনি ঢাকা ছেড়েছেন। অথচ দেশের ফুটবলাঙ্গনে গুঞ্জন নর্দে কলকাতার জনপ্রিয় ফুটবল ক্লাব মোহনবাগানে খেলার বিষয় নিশ্চিত করেছেন। কাল পয়েন্ট তালিকার নিচু দল চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে জামাল খেলতে নামে নর্দে ও অধিনায়ক মামুনুল ইসলামকে ছাড়া। মূল দুই খেলোয়াড় ছাড়া শুরু থেকেই অলআউট ফুটবল খেলতে থাকে জামাল। প্রতি-উত্তরে বন্দরনগরীর দলটি খেলতে থাকে কাউন্টার অ্যাটাক-নির্ভর ফুটবল। এর মধ্যে ৮ মিনিটে গোল করে চট্টগ্রাম আবাহনী হকচকিয়ে দেয় শেখ জামালকে। ইঙ্গিত দেয় অঘটনের। জামালের রক্ষণভাগের দিদারুল হক ব্যাক পাস করেন গোলরক্ষক জিয়াকে। কিন্তু বল ধরে ফেলেন চট্টগ্রাম আবাহনীর সোহেল মিয়া। এরপর বল ধরে ঠাণ্ডা মাথায় প্লেসিং শটে এগিয়ে নেন দলকে (১-০)।
গোলে পিছিয়ে পড়ে মরিয়া হয়ে ওঠে ধানমন্ডি পাড়ার দলটি। কিন্তু বন্দরনগরীর দলটির রক্ষণভাগ ভাঙতে পারছিল না। এর মধ্যে ২০ মিনিটে জামালের নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার ড্যানিয়েল মাটি কামড়ানো শট নেন। কিন্তু চট্টগ্রাম আবাহনীর গোলরক্ষক সলিমুল্লাহ ডান দিকে ঝাঁপিয়ে কর্ণারের বিনিময়ে রক্ষা করেন সেটা। প্রথমার্ধেই এই একটিই জোরালো আক্রমণ ছিল শেখ জামালের। প্রতিপক্ষের টাইট রক্ষণভাগের জন্য গোলও পায়নি ধানমন্ডি পাড়ার দলটি। ফলে এক গোলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় শিরোপা প্রত্যাশী দলটি।
দ্বিতীয়ার্ধে তেড়েফুরে খেলতে থাকে শেখ জামাল। মরিয়া হয়ে ওঠে গোলের জন্য। এর মধ্যে ৬৬ মিনিটে সফরকারী দলটি সুযোগ পেয়েছিল গোলের। গিনির স্ট্রাইকার ওসমানীর শট জিয়া গ্রিপ করলে কোনো সমস্যা হয়নি জামালের। তিন মিনিট পর সমতা আনার সুযোগ পায় জামাল। ডি বঙ্রে ডান কোনা থেকে ওয়েডসনের ফ্রি কিক কোনো কাজে লাগাতে পারেনি জামালের ফুটবলাররা। অবশ্য ৭৩ মিনিটে সমতা এনে হাফ ছেড়ে বাঁচে দলটি। ওয়েডসনের ক্রসে হেড করে সমতা আনেন নাসির (১-১)। ৮০ মিনিটে আবারও দলকে উচ্ছ্বাসে ভাসিয়েছিলেন নাসির। কিন্তু অফসাইডের জন্য গোলটি বাতিল হলে হতাশ হয়ে পড়ে দলটি। তখন মনে হচ্ছিল খেলা ড্র হবে। খেলা যখন ড্রয়ের দিকে এগুচ্ছিল, ঠিক তখনই ৮৯ মিনিটে দলের মানসম্মান রক্ষা করার পাশাপাশি লিগে সপ্তম জয় উপহার দেন দলকে নাসির নিজের দ্বিতীয় গোল করে। ডানপ্রান্ত থেকে হাইতিয়ান স্ট্রাইকার ওয়েডসন ক্রস করেন, চলতি বলে ভলি করে দলের জয় নিশ্চিত করেন নাসির (২-১)।