অভিষেকেই তাসকিন আহমেদের বোলিং রেকর্ডে জ্বলজ্বল করে উঠছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাস। ফুটবল বিশ্বকাপের ভীড়েও দেশবাসী কিছুটা সময় ক্রিকেট নিয়ে মেতে উঠেছিলেন। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ভারত মাত্র ১০৫ রানে অলআউট করার পর সারাদেশেই খুশির আমেজ। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের খাম খেয়ালীপনায় দেশবাসীর উচ্ছ্বাসটা মিলিয়ে যায় দ্রুতই। ১০৬ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে মাত্র ৫৮ রানে অলআউট হয়ে যায় মুশফিকরা। ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় লজ্জাটা কাল পেয়ে গেল বাংলাদেশ।
২০১১ সালের বিশ্বকাপেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৫৮ রানে অলআউট হয়েছিল মুশফিকরা। কিন্তু সেটি ছিল গেইল-স্যামিদের নিয়ে তারকায় ভরা এক দল। আর এবার মুশফিকরা লজ্জা পেল কোহলি, ধোনি, অশ্বিনবিহীন ভারতের কাছে। নিয়মিত একাদশের সাত সাতজন ক্রিকেটার ছাড়াই এবার বাংলাদেশ সফরে এসেছিল ভারত। আর এই দলটিই কিনা মুশফিকদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করলো। ৪৭ রানে জিতে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ নিশ্চিত করে ফেললো ভারত। বাংলাদেশের নতুন কোচ হাতুরাসিংহের শুরুটাও হলো লজ্জা দিয়ে।
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় লজ্জার দিনে পেসার তাসকিনের শুরুটা অবিস্মরণীয়। মাত্র ২৮ রানে তিনি ৫ উইকেট নেন। অভিষেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল বোলার তিনি। এর আগে অভিষেকে ২৯ রানে চার উইকেট নিয়েছিলেন সোহাগ গাজী, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। ভারতের বিরুদ্ধে অভিষিক্ত কোনো বোলারের সেরা বোলিং ফিগার এটি। আর ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে তাসকিনের বোলিং ফিগারটি (৮-০-২৮-৫) পঞ্চম সেরা। দুরন্ত এই রেকর্ডের পরও কাল হাসতে পারেননি তাসকিন আহমেদ। কেননা নিজের সেরা দিনে দল যে সবচেয়ে বাজেভাবে হেরে গেল।
উইকেট যতই বাজে হোক ৫০ ওভারের ম্যাচে ১০৬ রানের টার্গেট 'ডাল-ভাত' ছাড়া কিছু নয়! কিন্তু কাল ব্যাটসম্যানরা শুরু থেকেই বাজেভাবে আউট হতে থাকে। তারপরেও তিন উইকেটে ৫০ রান হওয়ার পর মনে হচ্ছিল সহজেই জিতে যাবে বাংলাদেশ। কিন্তু ৫০-৫৮ রানের মধ্যেই সুনামী শুরু হয়ে যায়। ৮ রান করতেই ৭ উইকেট হারিয়ে নিঃশেষ হয়ে যায় মুশফিকের দল। এমন পরাজয়ের কোনো ব্যাখ্যা নেই। কাল ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বহীন ব্যাটিং দেখে একটা কথাই মনে হয়েছে 'হারতে চাইলে ঠেকায় কে?'