১৯৫০ সালের পুনরাবৃত্তি ঘটছে কি? প্রশ্নটা শুনে ব্রাজিলীয় সমর্থকরা তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠতে পারেন। কেননা দুনিয়া জুড়ে ব্রাজিলভক্তদের প্রত্যাশা এবার নিজ দেশে নেইমাররা স্বপ্নের ট্রফি জিতবেন। ব্রাজিল সর্বোচ্চ পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হলেও একটাই স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে গেছে। তাহলো নিজ দেশে বিশ্বকাপ জেতা। ব্রাজিল প্রথম বিশ্বকাপ জিতেছিল ১৯৫৮ সালে। অথচ আট বছর আগেই তাদের স্বপ্নপূরণ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা জেগেছিল। ১৯৫০ সালে নিজ দেশে বিশ্বকাপ আয়োজন করে ব্রাজিল প্রায় শিরোপার কাছাকাছি চলে যায়। শেষ ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে ড্র করতে পারলেই তারা বিজয়ের নিশানা উড়াত। হলো না, বিশ্বজয়। উরুগুয়ের কাছে হেরে তীরে এসে ডুবে গেল স্বপ্নের তরী।
অতীত যাই হোক না কেন? ব্রাজিল সমর্থকদের প্রত্যাশা এবার আর হতাশা নয়। ব্রাজিল নিজ দেশে বিশ্বকাপ জিতবেই। কিন্তু গ্রুপের দুই ম্যাচ দেখে শিরোপার ব্যাপারে কি নিশ্চিত থাকা যায়। প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ৩-১ গোলে জয় পেলেও ব্রাজিল মনোমুঙ্কর পারফরম্যান্স প্রদর্শন করতে পারেনি। তবে নেইমার ও অস্কার নিজেদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন। দ্বিতীয় ম্যাচে মেক্সিকোর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র। অনেকে বলছেন প্রতিপক্ষের গোলরক্ষক ওচোয়ার দৃঢ়তার কারণে ব্রাজিল জিততে পারেনি। একজন গোলরক্ষক অসাধারণ খেলতেই পারেন। এ জন্য ওচোয়া প্রশংসিত হচ্ছেন কিন্তু ব্রাজিলের মতো শক্তিশালী দল জিততে পারবে না কেন এটাই প্রশ্ন। ওচোয়া প্রশংসায় ভাসছেন। বলা হচ্ছে মেক্সিকোর নিশ্চিত পরাজয় রক্ষা করেছেন তিনি। ম্যাচটাতো আবার তারাও জিতে যেতে পারত। শেষ মুহূর্তে যে সুযোগটি এসেছিল তা কাজে লাগাতে পারলেই গোল। আর এ গোল খেলে ম্যাচে ফেরার কোনো উপায় ছিল না ব্রাজিলের। কেন জানি ব্রাজিলের রক্ষণভাগকে দুই ম্যাচে অগোছালো মনে হয়েছে। সামান্য আক্রমণে তারা দিশেহারা হয়ে যাচ্ছে।
আর প্রথম ম্যাচে নেইমার-অস্কার জুটিতে ক্রোয়েশিয়ার রক্ষণভাগ ভেঙে চুরমার করে দিয়েছিল। মেক্সিকোর বিপক্ষে অস্কারকে তো খুঁজেই পাওয়া যায়নি। এক নেইমারই আক্রমণের ভূমিকা পালন করছিলেন। অর্থাৎ নেইমার খেলছেন নেইমার রূপেই। কিন্তু এক নেইমার একা কি করবেন। জিততে হলেতো তাকে ভালোমতো সহযোগিতা করতে হবে। এত তারকার ভিড়ে শুধু নেইমারই যদি জ্বলে উঠেন তাহলে কি পঞ্চাশের ব্যর্থতা দূর করা সম্ভব। কোচ অস্কারকে অবশ্যই ভাবতে হবে। গ্রুপ ম্যাচে ড্র করেছে বলে বড় কোনো ক্ষতি হয়নি। কিন্তু নকআউট পর্বে গেলে এই মানের খেলা খেললে তখনতো আর টিকে থাকার পথ খুঁজে পাবে না।