ভারতীয় ক্রিকেটে এখন সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয় হলো রবি শাস্ত্রী। ও আমার খুব ভালো বন্ধু। রবি জাদুকর নয়। কিন্তু ভারতের সব কিছু ঠিকঠাক করার জন্য ও-ই সঠিক লোক। তবে পাঁচটা ওয়ান ডের মধ্যে বড় প্রভাব তৈরি হবে বলে মনে হয় না। ওর মতো মেন্টরকে টিম ইন্ডিয়ার আরো বেশি সময়ের জন্য দরকার। রবি খুব টাফ, লড়াকু ক্রিকেটার ছিল। এই মানসিকতাটাই ও টিমের মধ্যে নিয়ে আসবে। টেস্ট সিরিজে দেখলাম ধোনি ছাড়া কোনো নেতা নেই যে তরুণ বোলারদের সঙ্গে কথা বলবে। স্লিপ ফিল্ডিংও খুব খারাপ হচ্ছিল। তাই মনে হয় রবিকে আনাটা সঠিক পদক্ষেপ। সঞ্জয় আর অরুণের জন্যও ভালো লাগছে। কিন্তু ওদেরও আরো বেশি সময় দরকার। ছ’মাস বা এক বছর।
ড্রেসিংরুমে নিজের দেশের লোক থাকাটা টিমকে সাহায্য করবে। আমার মনে হয় শ্রীলঙ্কার চেয়ে ভারত আর পাকিস্তানিরা বিদেশি কোচের সঙ্গে কথা বলতে বেশি সমস্যায় পড়ে। আমাদের দেশ আয়তনে বেশি বড়, ইংরেজি আমাদের প্রথম ভাষাও নয়। নিজের ভাষার লোকের সঙ্গে কথা বলা বেশি সহজ কারণ তারা স্বদেশি মানসিকতা ভালো বুঝবে। সফরের মাঝখানে বদল করা ভালো নয়, মানতে পারছি না। এর চেয়ে খারাপ আর কী হতে পারে? এই পরিস্থিতিতে এ রকম পদক্ষেপই দরকার ছিল। অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ড হলে ব্যাপারটা নিয়ে হয়তো টিমে অসন্তোষ থাকত। কিন্তু ভারত বা পাকিস্তানের ক্ষমতা আছে এ সবের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে নিজেদের কাজটা করে যাওয়ার।
ওয়ান ডে একটা আলাদা ফরম্যাট, যেটা ভারতীয়রা খেলতে পছন্দ করে। গোটাদুয়েক ম্যাচ জিততে পারলেই টিম ইন্ডিয়ায় একতা ফিরে আসবে। তবে বিদেশে ভারতের সাম্প্রতিক ওয়ান ডে রেকর্ড খুব ভালো নয়। দক্ষিণ আফ্রিকা আর নিউজিল্যান্ডে ধোনিদের নড়বড়ে দেখিয়েছে। তার সঙ্গে যোগ করুন শক্ত উইকেটে সুইং আর সিম। তার ওপর এখন দুটো নতুন সাদা বল ব্যবহার হবে, তাই বোলাররা পুরনো বলে কারিকুরি দেখানোর অত সুযোগ পাবে না। অাগস্টের শেষে ইংল্যান্ডে ঠাণ্ডা বেশি। বল ভালোই মুভ করবে। আশা করি ভারতীয়রা নিজেদের টেকনিক নিয়ে কাজ করবে আর ঠিকঠাক ক্রিকেটিং শট খেলবে।
প্ল্যানটা হওয়া উচিত ৫০ ওভার ব্যাট করা। সেটা করতে পারলে সফল হওয়ার সুযোগ আছে ভারতের। আর সেটা না হলে ইংল্যান্ডই এগিয়ে যাবে। এটা ওদের চেনা পরিবেশ। টার্ন পাবে না ভারতীয় স্পিনাররা। ভারতীয় মিডিয়াম পেসাররা যথেষ্ট প্রতিভাবান। কিন্তু ভুবনেশ্বর কুমারের মতো বোলার কাউন্টি ক্রিকেটে প্রচুর আছে। সুইং খেলতে ভালোই জানে ইংল্যান্ড। এখানে আমার বাজি উমেশ যাদব। ওর সেই গতিটা আছে। সিরিজে এক্স ফ্যাক্টর হতে পারে উমেশ। ‘এ’ টিমের অস্ট্রেলিয়া সফরে ব্যাটে-বলে দারুণ ছিল উমেশ। ওর সঙ্গে বেশ কিছু দিন কাজ করেছি। কাজের প্রতি ওর মনোভাবটা আমার ভালো লাগে। করণ শর্মাকেও খেলতে দেখতে চাই। যথেষ্ট প্রতিভাবান লেগ স্পিনার করণ। তবে অশ্বিন আর জাডেজা থাকায় তিন জন স্পিনার হয়তো খেলানো যাবে না। বরুণ অ্যারন যে বিশ্রাম পেল, সেটা বেশ ভালো ব্যাপার। আমি হলে এখন ওকে শুধু টেস্টেই খেলাতাম। শামি এখন ফর্মে নেই, তাই উমেশ-বরুণের পেস জুটি হয়তো ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেই দেখা যাবে।