সাদেক হোসেন খোকা ও ওবায়দুল কাদের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর দু’বার জাতীয় ক্রীড়া সম্মেলনের আয়োজন করেন। তাদের এ উদ্যোগ ক্রীড়াঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিল। ১৯৯৫ সালে প্রকৌশলী মিলনায়তনে ক্রীড়া সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ১৯৯৬ সালে বিকেএসপিতে অনুষ্ঠিত আরেক সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দুই অনুষ্ঠানে দুই প্রধানমন্ত্রীর সামনে ক্রীড়া সংগঠক ও ক্রীড়াবিদরা ক্রীড়াঙ্গনে নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন। বাংলাদেশের খেলাধুলার বাস্তবচিত্রটা সরকার প্রধানের সামনে উপস্থাপন করাতে খালেদা জিয়া ও শেখ হাসিনা সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, ক্রীড়া উন্নয়নে এ ধরনের সম্মেলন খুবই জরুরি। কেননা ব্যস্ততার কারণে একমাত্র ক্রীড়ামন্ত্রী ছাড়া তারা কারও সঙ্গে কথা বলতে পারেন না। ক্রীড়াঙ্গনে সমস্যাগুলো তারা ভালোভাবে টের পান না। ক্রীড়া সম্মেলনে অনেক সমস্যার কথা শোনা যায় তেমনিভাবে সমাধানের পথ খুঁজে পাওয়া যায়। দুই সম্মেলনে শুধু দুই প্রধানমন্ত্রীই উপস্থিত থাকেননি। ছিলেন সে সময়ে দুই অর্থমন্ত্রীও। ক্রীড়াঙ্গনে সরকারের যে বাজেট ও অনুদান দেওয়া হয় তা ঠিক জায়গায় খরচ হচ্ছে কিনা তাও বের হয়ে আসে। সত্যি বলতে কি দু’বারই ক্রীড়া সম্মেলন করে ক্রীড়াঙ্গনে গতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল। অনেক যোগ্য সংগঠকের সন্ধানও মিলে ছিল।
ক্রীড়া সম্মেলনে ক্রীড়াঙ্গনে উপকারের কথা চিন্তা করে দুই সম্মেলন থেকেই ঘোষণা এসেছিল প্রতিবারই এ সম্মেলনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। বাস্তবে কিন্তু তা আর হয়নি। ঘোষণা ঘোষণায় থেকে গেছে। ৯৬ সালের পর দেড় যুগ ধরে জাতীয় ক্রীড়া সম্মেলনের আর দেখা মিলছে না। খোকা, কাদেরের পর ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন ফজলুর রহমান পটল ও আহাদ আলী সরকার। দু’জনার মুখ থেকে একবারও ক্রীড়া সম্মেলনের নাম উচ্চারণ হয়নি। কথা হচ্ছে কেন, যে সম্মেলনের তাগাদা দিয়েছিলেন স্বয়ং দুই প্রধানমন্ত্রী। তাদের কথাকে উপেক্ষিত করা হলো কেন? ১৯৯৬ সালের পর ক্রীড়া সম্মেলনই অনুষ্ঠিত হয়নি। অথচ বড় ধরনের পরিবর্তন না হলেও ক্রীড়া সম্মেলন থেকে ভালো কিছু দিক নির্দেশনা খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। যার বড় উদাহরণ হতে পারে ক্রীড়াঙ্গনে নির্বাচন। ১৯৯৬ সালের সম্মেলন থেকেই বের হয়ে এসেছিল স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য ক্রীড়াঙ্গনে ফেডারেশনগুলোর অ্যাডহক কমিটি বিলুপ্তি করে নির্বাচিত কমিটির প্রয়োজনীয়তা। তাছাড়া কোনো খেলা উন্নয়নে কেমন অর্থ দরকার তার একটা খসড়া হিসাব বের হয়ে এসেছিল। এত কিছু পরও ক্রীড়া সম্মেলনের দেখা মিলছে না কেন? পটল ও আহাদ আলীকে নীরব দেখা গেলেও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের একাধিক সূত্র জানিয়েছে দুই প্রতিমন্ত্রী মনে-প্রাণে চেয়েছিলেন ক্রীড়া সম্মেলন হোক। কিন্তু অন্যদের বাধা দেওয়ার কারণে তা সম্ভব হয়নি। এরা নাকি প্রতিমন্ত্রীর চেয়েও প্রভাবশালী। সম্মেলন হলে ক্রীড়াঙ্গনে অনেক অস্বচ্ছতা প্রধানমন্ত্রীর সামনে বের হয়ে যাবে। এতে করে সুবিধাবাদীদের মুখোশ উন্মোচন হয়ে যাবে। কথা হচ্ছে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী যদি উদ্যোগই নেন তাহলে অন্যরা বাধা দেন কোন সাহসে। আসলে ক্রীড়াঙ্গনে এ ধরনের সাহসী লোকের বিচরণ সব আমলেই থাকে। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তার প্রভাব খাটিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে প্রাধান্য বিস্তার করে। এদের কারণেই ক্রীড়াঙ্গনে দুর্দশা নেমে এসেছে। অযোগ্য লোকের হাতে জিম্মি হয়ে ক্রীড়াঙ্গন অচল হয়ে পড়েছে। ক্রীড়াঙ্গনে গতি বাড়াতে এবারই প্রথম প্রতিমন্ত্রীর পাশাপাশি উপমন্ত্রীও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ জন্য বর্তমান সরকার প্রশংসিত হয়েছে। তবে দুই মন্ত্রীর দায়িত্বের মেয়াদ ৯ মাস হতে চললেও গতির চেয়ে বরং অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যদিও প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার ও উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে দৃঢ়ভাবে বলেছেন, ক্রীড়ার উন্নয়নে তারা কোনো কিছুর ত্রুটি রাখবেন না। তাদের মাধ্যমে ক্রীড়াঙ্গনে গতি ও উন্নয়ন ঘটুক এ প্রত্যাশা সবারই। কিন্তু তাদের মনে রাখতে হবে এই অঙ্গনে সমস্যার শেষ নেই। সবকিছুতেই অনিয়মই প্রাধান্য পাচ্ছে। আট মাসে নিশ্চয় এটা সৃষ্টি হয়নি। আগে থেকেই ক্রীড়াঙ্গন অনিয়মে বন্দী। এ বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেতে ক্রীড়া সম্মেলনটা জরুরি হয়ে পড়েছে। পটল ও আহাদ এ কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এবার দুই মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে প্রধান অতিথি করে যদি ক্রীড়া সম্মেলন করতে পারেন অনেক সমস্যা বের হয়ে আসবে। এতে করে উপকৃত হবে দুই মন্ত্রীই। কারণ প্রধানমন্ত্রী সমস্যার কথা প্রকৃত সংগঠকদের মুখ থেকে শুনতে পারলে সমাধানের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারবেন। ক্রীড়া উন্নয়নে নতুন নতুন দিক নির্দেশনাও মিলবে। ৯ মাস হতে চলেছে। সুতরাং বীরেন ও জয়ের উচিত হবে যত দ্রুত ক্রীড়া সম্মেলনের ব্যবস্থা করা।
শিরোনাম
- বদলে গেল বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-২০ সিরিজের সূচি
- ফাজিল পরীক্ষার ফল প্রকাশ
- কারাগারে থেকেই মেয়র নির্বাচিত হলেন ফিলিপাইনের সাবেক প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো
- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে নারীসহ আহত ২০
- ভারত-শাসিত জম্মু-কাশ্মীরে বন্দুকযুদ্ধ, নিহত ৩
- স্ত্রীসহ সাবেক আইনমন্ত্রীর এপিএসের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
- সৌদি যুবরাজকে বন্ধু বললেন ট্রাম্প
- দিনাজপুরে গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের মাঝে সঞ্চয়পত্র বিতরণ
- বাগেরহাটে ভারতীয় নাগরিককে এনআইডি দেওয়ার অভিযোগ, দুদকের মামলা
- রাতের আঁধারে কুপিয়ে জখম, আরো একজন মারা গেছেন
- ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিষয়ে নাক গলাতে চান না রাহুল গান্ধী
- পেছাচ্ছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান টি-টোয়েন্টি সিরিজ
- পাকিস্তানে হামলা: কাশ্মীর নিয়ে নতুন করে কঠিন চাপে ভারত
- ঢাকার মূল সড়কে কোনো রিকশা চলতে পারবে না : ডিএনসিসি প্রশাসক
- কোম্পানীগঞ্জে প্রবাসীর ওপর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হামলার অভিযোগ
- গুচ্ছ ‘এ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
- কেন মধ্যপ্রাচ্য দিয়ে বিদেশ সফর শুরু করলেন ট্রাম্প?
- টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের স্কোয়াড দিল দক্ষিণ আফ্রিকা
- সৌদি আরবের সাথে ‘১০০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র চুক্তি’ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের
- পুশইন করা ৭৫ জনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর, ৩ ভারতীয়কে আদালতে প্রেরণ
ক্রীড়া সম্মেলন নেই দেড় যুগ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর