পারল না শেখ রাসেলও। হলো না তাদের ইতিহাস গড়া। এএফসি প্রেসিডেন্ট কাপ ফুটবলে বাংলাদেশের প্রথম দল হিসাবে চূড়ান্ত পর্বে গেলেও গ্রুপ পর্ব খেলেই বিদায় নিতে হয়েছে। ফাইনালে ওঠার জন্য ম্যাচে রাসেলকে জিততেই হতো। কিন্তু শক্তিশালী উত্তর কোরিয়ার রিমস্থ ক্লাবের কাছে ৪-০ গোলে হেরে যায়। অর্থাৎ টুর্নামেন্টে ফাইনাল খেলার যোগ্যতা পেয়েছে রিমস্থ ক্লাব। ঢাকা ছাড়ার সময় দলের কোচ জাকারিয়া বাবু ও অধিনায়ক মিঠুন বলে যান ফাইনাল খেলার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবেন তারা। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে মঙ্গোলিয়ার ইনচেম ক্লাবকে ১-০ গোলে পরাজিত করেছিল। কিন্তু রিমস্থ ক্লাব ৫-০ গোলে জেতাতে শেখ রাসেলের আশা অনেকটাই ক্ষীণ হয়ে যায়। কেননা উত্তর কোরিয়া শক্তিশালী দলটি ড্র করলেও গোল পার্থক্য ফাইনালে চলে যাবে। এক সময় এশিয়ান ক্লাব ফুটবলে উত্তর কোরিয়ার চ্যাম্পিয়ন দল এপ্রিল টোয়েন্টি ফাইভের বিপক্ষে ঢাকা মোহামেডানের ড্র করার কৃতিত্ব ছিল। কিন্তু বর্তমানে ফুটবলে যে করুণ হাল তাতে রিমস্থ ক্লাবকে হারানোটা অসম্ভব বলেই ধরে নিয়েছিল অনেকেই। তারপরও ফুটবলে অনেক সময় অঘটনও ঘটে যায়। না, কোনো অঘটন নয়, দাপটের সঙ্গে ম্যাচ জিতে রিমস্থ ক্লাব ফাইনালে চলে যায়।
এশিয়ান গেমসের ইতিহাসে এবারই ফুটবলে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা জেগেছিল বাংলাদেশের। হংকংকে হারাতে পারলেই মামুনুলরা ইতিহাস গড়ে ফেলতেন। দুর্ভাগ্য বলতে হয় ভালো খেলেও ২-১ গোল হেরে বাংলাদেশের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। এই আঘাত কিছুটা কমতো যদি শেখ রাসেল এএফসি কাপে ফাইনালে যেতো। উত্তর কোরিয়া শুধু বিশ্বকাপ খেলেইনি, ১৯৬৬ সালে তারা এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে কোয়ার্টার ফাইনালেও খেলে। এশিয়ান ফুটবলে এখনো তারা শক্তিশালী অবস্থানে আছে। সুতরাং তাদের ক্লাবের বিপক্ষে শেখ রাসেল যদি জয় পেত তাহলে বড় সাফল্য বলেই বিবেচিত হতো। না, গ্রুপ পর্বে মিঠুনদের দৌড় থেমে গেছে। ম্যাচ হারের পর শেখ রাসেলের কর্মকর্তা লাভলু বলেন, দেখেন রিমস্থ ক্লাবে উত্তর কোরিয়ার চারজন ফুটবলার ছিলেন। সুতরাং এই ফলাফলকে আমরা স্বাভাবিক বলেই ধরে নিচ্ছি। জিতলে পুরো দেশবাসীই খুশি হতেন। এখন যতটুকু গেছি তা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে। ফুটবলে এবার এ নিয়ে তিনটি সুযোগ হাত ছাড়া হলো। ইস্টবেঙ্গল ও মোহানবাগানকে হারিয়ে শেখ জামাল ভারতীয় ফুটবলে প্রাচীনতম টুর্নামেন্ট আইএফ শিল্ডে ফাইনালে উঠেছিল। ১৯৯৫ সালে ঢাকা মোহামেডান ফাইনালে উঠলেও শিরোপা জিততে পারেনি। শেখ জামালের সামনে তাই ইতিহাস গড়ার সুযোগ ছিল। দুর্ভাগ্য তাদের ভালো খেলেও ফাইনালে কলকাতা মোহামেডানের কাছে হেরে যায়। এরপর হংকংয়ের কাছে হেরে এশিয়ান গেমসে কোয়ার্টার ফাইনালের স্বপ্নবিলীন। সবশেষ যোগ হলো এএফসি কাপে গতকাল শেখ রাসেলের হার। কলম্বোর সুগাথা দাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এ খেলায় ৩০ মিনিট পর্যন্ত কোনো গেলেই হয়নি। পরে প্রথমার্ধে ২ ও দ্বিতীয়ার্ধে ২ গোল করে জিতে যায় রিমস্থ ক্লাব।