একেকটা গোল হচ্ছে আর মৌমাছির ঝাঁকের মতোই লিওনেল মেসিকে ঘিরে ধরছেন বার্সা তারকারা। দিপোর্তিভো লা করোনার মাঠে এমন আনন্দমুখর দলটাকে দেখে কে বলবে, তাদেরকে নিয়ে মিডিয়ায় গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই চলছে নানান বিতর্ক! মেসিকে গোল করতে দেখে কোচ লুইস এনরিকের বুনো উল্লাস দেখে কে বলবে, মিডিয়ায় দুজনের মধ্যে ফাটল নিয়ে প্রচারিত ঘটনাগুলো সত্য! সব বিতর্ককে পিছনে ফেলে নিজেকে মেলে ধরলেন আর্জেন্টাইন জাদুকর লিওনেল মেসি। রবিবারের ম্যাচটা দেখে অনেকেই বলছে, সেই ২০১২ সালের মেসি ফিরেছেন ফুটবলে। ছন্দে ফিরেছেন বার্সেলোনার ত্রাতা। ছন্দে ফিরল বার্সেলোনাও। লিওনেল মেসির অসাধারণ হ্যাটট্রিকেই রবিবার ৪-০ গোলে দিপোর্তিভো লা করোনাকে উড়িয়ে দিল কাতালানরা।
রিয়াল মাদ্রিদ এবং অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের জয়ের সংবাদ জেনেই মাঠে নেমেছিল বার্সেলোনা। লা লিগায় শিরোপা জয়ের ট্র্যাকে থাকতে হলে দিপোর্তিভোর বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না। তবে জয়ের চেয়েও লুইস এনরিকের সামনে বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছিল, দলটাকে ঐক্যবদ্ধ করা। এই সফলতা নির্ভর করছিল দারুণ একটা ফরমেশন দাঁড় করানোর উপর। অবশেষে নিজের সেরা ফরমেশন খুঁজে পেয়েছেন এনরিকে। মেসিকে কেন্দ্র করেই সাজিয়েছেন দল। ফলাফলটা পেলেন একেবারে হাতে নাতেই। মৌসুমে ২৯ ম্যাচের মধ্যে প্রথমবারের মতো এই ফরমেশনে দল মাঠে নামালেন এনরিকে। মিডফিল্ডে রাকিটিচ-ইনিয়েস্তা-বাসকুয়েটস। আক্রমণে মেসি-নেইমার-সুয়ারেজ। ডিফেন্সে মাসকারেনো-আলবা-আলভেস-পিকে। সেই সঙ্গে মেসিকে স্থান বদলের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা। দিয়েগো ম্যারাডোনা একবার বলেছিলেন, মেসি কোথায় খেলবে তা তাকেই ঠিক করতে দাও। দেখবে দারুণ কিছু বেরিয়ে আসবে। এনরিকে গত ম্যাচে তাই করেছেন। সত্যি বলতে লিওনেল মেসি তার মৌসুমের সেরা ম্যাচ খেলেছেন দিপোর্তিভোর বিপক্ষে। মিডফিল্ডে যেমন ছিল তার সদর্প পদচারণা। তেমনি প্রতিপক্ষের পাল্টা আক্রমণে ডিফেন্সও করেছেন তিনি। বল দখলের লড়াইয়ে ছিলেন দুর্দান্ত। আর লা লিগায় ২২তম হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেছেন তিনটা অসাধারণ গোলে। প্রথম গোলটা করেছিলেন ম্যাচের ১০ মিনিটে রাকিটিচের পাসে দুর্দান্ত হেডে। ৩৩ মিনিটে দ্বিতীয় গোলটা করেন সুয়ারেজের ক্রস থেকে শৈল্পিক ভঙ্গিমায়। ৬২ মিনিটে তৃতীয় গোলটা করেন ২০ গজ দূর থেকে বুলেট গতির শটে। এই হ্যাটট্রিকের মধ্য দিয়েই মেসি স্পর্শ করলেন স্বদেশি আলফ্রেডো ডি স্টেফানোকে।