জুম্মন লুসাই কি শুধু হকি খেলোয়াড় ছিলেন? এই প্রশ্নটা অনেকের কাছে হাস্যকর মনে হতে পারে। বাংলাদেশে হকির যে ক'জন তারকা আছেন তার মধ্যে জুম্মনের নাম শীর্ষস্থানের থাকবে। হকির ম্যারাডোনা বলে খ্যাত পাকিস্তানের শাহবাজ আহমেদ ঢাকায় এসে বলে গেছেন জুম্মন নিঃসন্দেহে বিশ্বমানের খেলোয়াড়। ওর খেলা দেখে সত্যিই আমি মুগ্ধ। হকির লোক অথচ গোটা ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে জুম্মনের ছিল সুসম্পর্ক। খেলোয়াড় মানেই ছিল তার আপনজন। না ফেরার দেশে চলে গেছেন জুম্মন। সেখানে ক্রীড়াঙ্গনের অবস্থা কি হবে বলার অপেক্ষা রাখে না। শোকে কাতর সবাই। আবাহনী ক্লাব ও মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে জুম্মনকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে ছুটে এসেছিলেন অসংখ্য মানুষ। যারা তার কাছের তারাতো বটেই অন্য খেলোয়াড় বা ফেডারেশনের কর্মকর্তারা জুম্মনের কফিনে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারেননি কেউ। সবাই খেলোয়াড় ও ব্যক্তি জুম্মনের প্রশংসা করে গেছেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহারিয়ার আলম, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বিরেন শিকদার, উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, সংসদ সদস্য নাবিল আহমেদ, আশরাফ উদ্দিন আহমেদ চুন্নু, বাদল রায়, শেখ মো. আসলামসহ ক্রীড়া পরিচিত মুখরা ছুটে আসেন তাকে শ্রদ্ধা জানাতে। আরিফ খান জয় ছিলেন মাঠ কাঁপানো ফুটবলার। অথচ জুম্মন ছিলেন তার কাছের মানুষ। তিনি বললেন, আমি অনেক খেলোয়াড় দেখেছি কিন্তু জুম্মনের মতো সহজ-সরল লোক খুব কম দেখেছি। জুম্মনের মৃত্যুতে হকি শুধু যোগ্য মানুষকে হারায়নি ক্রীড়াঙ্গন হারিয়েছে অকৃত্রিম বন্ধুকে। জুম্মনের মৃত্যুর পর তার পরিবার পরিজনকে আর্থিক সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমতউল্লাহ জানালেন আমরা প্রধানমন্ত্রীর দফতরে এ ব্যাপারে চিঠি পাঠিয়েছি। আশা করছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন। এছাড়া ক্রীড়া পরিষদ থেকেও সহযোগিতার আশ্বাস পাওয়া গেছে। জুম্মনের স্মৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে হকি স্টেডিয়ামের গ্যালারির কোনো অংশ তার নামকরণ করা যায় কিনা সেই চিন্তা ভাবনা চলছে।