একদিন আগেই বাংলাদেশ গলফ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ গর্ব করে বলেছেন, চলতি বছরে বিশ্বে গলফের যে কয়টি বড় টুর্নামেন্ট হচ্ছে 'বসুন্ধরা বাংলাদেশ ওপেন' তাদের মধ্যে একটি।
-গর্ব করার মতো বিষয়ই বটে! এর আগে কখনো গলফের এত বড় টুর্নামেন্ট বাংলাদেশে হয়নি। শুধু বাংলাদেশ কেন, ভারত ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ার অন্য কোনো দেশেও হয়নি। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় ভালো মানের গলফার থাকলেও তারা এত বড় টুর্নামেন্ট আয়োজন করার সাহস পায়নি। সাহস পাওয়ার কথাও নয়। কেননা গলফের মতো অপরিচিত খেলায় মোটা অঙ্কের টাকা স্পন্সর পাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়! কিন্তু বাংলাদেশ এবার দেখাচ্ছে দুঃসাহস। আয়োজন করতে যাচ্ছে বিশাল টুর্নামেন্ট। এটা সম্ভব হচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপকে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে পাশে পাওয়ায়।
প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের কাজ। বিদেশি গলফার-ম্যাচ অফিশিয়ালরাও আসছেন। দেশি-বিদেশি গলফার, অফিশিয়ালদের পদভারে এখন মুখরিত কুর্মিটোলা গলফ ক্লাব।
আয়োজকরা এই টুর্নামেন্টকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। অবশ্য শুধু সফল আয়োজনই নয়, বাংলাদেশ গলফ ফেডারেশনের প্রত্যাশা এবার শিরোপা জিতুক বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টে ১১৯ জন বিদেশি গলফার অংশ নিচ্ছেন। বাংলাদেশের ৩১ জন। অংশগ্রহণকারী ১৫০ গলফারের মধ্যে ১০ জন রয়েছেন এশিয়ান ট্যুর জয়ী। যাদের মধ্যে বাংলাদেশের সিদ্দিকুর রহমানও রয়েছেন।
দেশসেরা গলফার দু-দুইবার এশিয়ান ট্যুরের শিরোপা জিতেছেন। প্রথমবারের মতো ২০১০ সালে ব্রুনাই ওপেন জিতে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিলেন। মূলত তারপর থেকেই বাংলাদেশে গলফের প্রসার ঘটতে থাকে। এরপর ২০১৩ সালে ভারতের নয়াদিলি্লতে অনুষ্ঠিত হিরো-ইন্ডিয়ান ওপেনে তারকা গলফারদের টপকে দ্বিতীয়বারের মতো জিতেন সিদ্দিকুর। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ট্যুরও একবার জিতেছেন তিনি। এ ছাড়া আরও ৫টি বড় টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতেছেন সিদ্দিকুর। তাই দেশের মাটিতে অনুষ্ঠেয় এই টুর্নামেন্টেও বাংলাদেশের ভরসার নাম সিদ্দিকুর রহমান। দেশবাসীও তাকিয়ে তার দিকেই।
বাংলাদেশ গলফ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আশার বাণী শুনিয়েছেন। তিনি বলেছেন, শুধু সিদ্দিকুর একা নন, অংশ নেওয়া বাংলাদেশের অন্য ৩০ গলফারের মধ্যে ৫-১০ জন গলফার রয়েছেন যারা বিশ্বের যে কোনো গলফারকে হারানোর ক্ষমতা রাখেন। এই ৩০ গলফারকে বিশ্বমানের করে তৈরি করতে কয়েক দিন আগেই অস্ট্রেলিয়া থেকে কোচ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মনোবিদ আনা হয়েছিল। যে কোনো খেলায় কোচের বড় ভূমিকা থাকে, তবে গলফে মনোবিদ খুবই জরুরি। কেননা একজন গলফারকে সব সময় সতর্ক তো থাকতে হবেই, মুহূর্তের জন্যও যাতে মনোসংযোগের বিঘ্ন না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। একটি বিশেষ মুহূর্তের ভুলের কারণে শিরোপা হাত ছাড়াও হয়ে যেতে পারে। আবার দেখা যায়, প্রথম তিন দিন খুব ভালো না করলেও শেষ দিনে অনেক বেশি ভালো খেলে বিজয়ী হতে পারেন কেউ। অনেক টুর্নামেন্টেই দেখা গেছে, সিদ্দিকুর তৃতীয় দিন পর্যন্ত শীর্ষে থাকার পরও শেষ দিনে গিয়ে ভালো করতে না পেরে শিরোপা জিততে পারেননি। সে কারণেই গলফ ফেডারেশন এবার বিদেশ থেকে ভালো মানের মনোবিদ নিয়ে এসেছিল।