বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ সবকটি উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছে ১৬০ রান। বৃষ্টির কারণে খেলা নির্ধারণ হয়েছিল ৪০ ওভারে। তবে বাংলাদেশ অলআউট ৩৬.৩ ওভারে। প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ জিততে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ১৬১ রান।
বৃষ্টির শংকা উড়িয়ে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে শুরু হয় বালাদেশ-দ.আফ্রিকার মধ্যকার তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে। বৃষ্টি ভেজা দিন হলেও বল হাতে এদিন যেন আগুন ঝড়ান প্রোটিয়াদের হয়ে অভিষেকে ম্যাচে নামা কাগিসো রাবাদা। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই করেন হ্যাটট্রিক। সাজঘরে পাঠান বাংলাদেশের তামিম, লিটন ও মাহমুদুল্লাহকে।
অভিষেক ওয়ানডে ম্যাচে হ্যাটট্রিক গড়ার প্রথম রেকর্ড গড়েছিলেন বাংলাদেশের তাইজুল ইসলাম। এরপর দ্বিতীয় বোলার হিসাবে সেই কৃতিত্ব দেখালেন দক্ষিণ আফ্রিকার ক্যাগিসো রাবাদা। শুধু তাই নয় ইনিংস শেষে নিয়েছেন ছয়টি উইকেট। অভিষেক ওয়ানডেতে হ্যাটট্রিকসহ ছয়টি উইকেট নেয়ার ঘটনা এই প্রথম। এর আগে ১১ রানে হ্যাটট্রিকসহ সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেয়ার রেকর্ড আছে বাংলাদেশের তাইজুল ইসলামের। হ্যাটট্রিক ছাড়া অভিষেক ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ৬ উইকেট নেয়ার রেকর্ড আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিদেল এডওয়ার্ডসের। যৌথভাবে সেই রেকর্ডের মালিকও এখন রাবাদা।
৩.৪ ওভারে রাবাদার বলে সরাসরি বোল্ড হন তামিম। ১৩ বল খেলে শুণ্য রান করেন তামিম। পঞ্চম বলে রাবাদা বিদায় করেন লিটন দাশকে (০)। ষষ্ঠ বলে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে (০) এলবিডব্লিউর শিকার বানিয়ে নয়নকাড়া হ্যাটট্রিক তুলে নেন ২০ বছর বয়সী রাবাদা।
এরপর দেখে শুনে খেলার চেষ্টা করেন সৌম্য ও সাকিব। কিন্তু বেশীদূর না যেতেই সেই রাবাদার আঘাত। ৭.২ ওভারে রাবাদার বলে ডুমিনির হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন সৌম্য। ২৭ বলে তিনি করেন ২৭ রান (৪টি চার)। রাবাদার উইকেট বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় চারটিতে।
এরপর সাকিব-মুশফিক বেশ দেখেশুনে ব্যাট চালাতে শুরু করে। পঞ্চম এই উইকেট জুটি থেকে আসে গুরুত্বপূর্ণ ৫৩ রান। দলীয় ৯৩ রানের মাথায় বাউন্ডারি হাকাতে গিয়ে ডুমিনির বলে ইমরান তাহিরের তালুবন্দী হন মুশফিক। সাজঘরে ফেরার আগে করে যান ৩৮ বলে ২৪ রান।
এরপর সাব্বিরের সঙ্গে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন সাকিব। তবে তা সফল হয়নি। ১৩ বলে মাত্র ৫ রান করে সাব্বির সাজঘরে ফেরেন মরিসের বলে বোল্ড হয়ে। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে ব্যাট করছিলেন সাকিব আল হাসান। প্রায় পৌছে গিয়েছিলেন ফিফটির কাছে। কিন্তু হয়নি। ৫১ বলে ৪৮ রান করে ইমরান তাহিরের এলবিডব্লিউর শিকার হন সাকিব। দলীয় রান তখন সাত উইকেটে ১২০।
দলীয় স্কোরে ১৩ রান যোগ হওয়ার পর আবারো রাবাদার আঘাত। তার বলে ককের হাতে ক্যাচ দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ১২ বলে ৪ রান করেন মাশরাফি। এরপর জুবায়েরও রাবাদার শিকার। ৫ রান করে হয়ে যান বোল্ড।
এরপর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে কিছুটা রান বাড়িয়ে দিয়েছেন নাসির হোসেন। তিনি করেন ৪৪ বলে ৩১। মরিসের বলে নাসির বিদায় নিলে ইনিংস শেষ হয় বাংলাদেশের। শুন্য রানে অপর প্রান্তে অপরাজিত থাকেন মুস্তাফিজুর।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৮ ওভারে ১৬ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৬টি উইকেট নেন কাগিসো রাবাদা। এর মধ্যে রয়েছে তিনটি মেডেন। এছাড়া মরিস দুটি, ইমরান তাহির ও ডুমিনি নেন একটি করে উইকেট।