ভারতের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টানা তিন ম্যাচ হেরে আগেই সিরিজ খুইয়েছে নিউজিল্যান্ড। এবার সিরিজের চতুর্থ টি-২০ ম্যাচে জয়ের খুব কাছাকাছি গিয়েও জয় দেখা হলো। ম্যাচটি ভারতের কাছে সুপার ওভারে হারতে হলো কিউইদের। নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসে আটটি (১টি ওয়ানডে ও সাতটি টি-২০) সুপার ওভারে সাতটিতেই হারলো নিউজিল্যান্ড। এরমধ্যে টানা ছয়টি ম্যাচে হারের স্বাদ পেল কিউইরা।
আজ হ্যামিল্টনে সিরিজের চতুর্থ টি-২০ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৫ রান করে ভারত। জবাবে নিউজিল্যান্ড নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৫ রান করলে ম্যাচটি টাই হয়। ফলে সুপার গড়ায় চতুর্থ টি-২০। সেখানে প্রথমে ব্যাট করে ১ উইকেটে ১৩ রান করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে ১ বল বাকি রেখে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় ভারত। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত। দেশটির হয়ে লোকেশ রাহুল ৩৯ এবং মনিশ পাণ্ডে ৫০ রান করেন। কিউইদের পক্ষে ইশ সোদি ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৪টি উইকেট নেন।
১৬৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা নিউজিল্যান্ডের শুরুটা ভালো হয়নি। ভারতের টাইট বোলিং-এ প্রথম ৫ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৩ রান তুলতে পারে কিউইরা। ৪ রান করে ভারতের পেসার জসপ্রিত বুমরাহর বলে প্যাভিলিয়নে ফিরেন ওপেনার মার্টিন গাপটিল।
শুরুটা নড়বড়ে হলেও দ্বিতীয় উইকেটে ভারতীয় বোলারদের উপর চড়াও হন আরেক ওপেনার কলিন মুনরো ও উইকেটরক্ষক টিম সেইফার্ট। ভারতের পেসার ঠাকুরের ষষ্ঠ ওভারে ১৬ রান তুলে পাওয়ার প্লে শেষ করেন মুনরো। তখন নিউজিল্যান্ডের স্কোর ছিলো ১ উইকেটে ৩৯ রান। পরের ওভারগুলোতে রানের চাকা দ্রুত ঘুড়িয়ে দলের স্কোরকে শতরানের কাছাকাছি নিয়ে যান মুনরো ও সেইফার্ট। এরমধ্যে টি-২০ ক্যারিয়ারের ১১তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান মুনরো। রান আউট হয়ে ব্যক্তিগত ৬৪ রানে থামেন মুনরো। এই জুটিতে ৪৪ বলে ৭৪ রান যোগ হয়। মুনরোর ইনিংসে ৬টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিলো।
চার নম্বরে নামা টম ব্রুসকে শুন্য রানে বোল্ড করে ভারতকে খেলায় ফেরান স্পিনার যুজবেন্দ্রা চাহাল। দলীয় ৯৬ ও ৯৭ রানে দুই উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন সেইফার্ট ও রস টেইলর। চতুর্থ উইকেটে ৪১ বলে ৬২ রানের জুটি গড়ে নিউজিল্যান্ডের জয়ের পথ সহজ করে ফেলেন তারা। ১৯ ওভার পর্যন্ত খেলে দলের স্কোর ৩ উইকেটে ১৫৯ রানে নিয়ে যান সেইফার্ট ও টেইলর। এমন অবস্থায় শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৭ রান দরকার পড়ে কিউইদের। আগের টি-২০তে ৯ রানের লক্ষ্যে ম্যাচ টাই করেছিলো নিউজিল্যান্ড।
আগের ম্যাচে ভারতের পক্ষে শেষ ওভার করেছিলেন মোহাম্মদ সামি। এ ম্যাচে বিশ্রামে ছিলেন তিনি। তাই বল হাতে আক্রমণে আসেন শার্দিল ঠাকুর। প্রথম বলেই টেইলরকে বিদায় করেন ঠাকুর। পরের বলে বাউন্ডারি মারেন ড্যারেল মিচেল। তৃতীয় বলে রান আউট হন সেইফার্ট। চতুর্থ ডেলিভারিতে ১ রান নেন মিচেল স্যান্টনার। ফলে শেষ দুই বলে জিততে ২ রান দরকার পড়ে নিউজিল্যান্ডের। পঞ্চম বলে আউট হন মিচেল। আর ষষ্ঠ বলে ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হন স্যান্টনার। ফলে ১ রান পেয়ে ম্যাচ টাই করে নিউজিল্যান্ড। শেষ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৬ রান তুলে স্বাগতিকরা। ফলে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৬৫ রান করে কিউইরা। ৩৯ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৭ রান করেন সেইফার্ট। ঠাকুর ৩৩ রানে ২ উইকেট নেন।
সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করে ১ উইকেট হারিয়ে ১৩ রান করে নিউজিল্যান্ড। বোলার ছিলেন ভারতের বুমরাহ। ১টি করে চার মারেন সেইফার্ট ও মুনরো। গত ম্যাচে সুপার ওভারে ১৭ রান করেছিলো কিউইরা।
আগের ম্যাচে সাউদির শেষ দুই বলে ১০ রানের লক্ষ্যমাত্রায় দু’টি ছক্কা মেরে ভারতের জয় নিশ্চিত করেছিলেন রোহিত। এবার ভারতকে জয়ের স্বাদ দেন রাহুল ও অধিনায়ক কোহলি। এবারও বল হাতে আক্রমণে ছিলেন সাউদি। প্রথম বলে ছক্কা ও দ্বিতীয় বলে চার মেরে দলের জয়ের পথ সহজ করেন রাহুল। তৃতীয় বলে আউট হন তিনি। চতুর্থ বলে ২ রান নেন কোহলি। তাই শেষ দুই বলে জিততে ২ রান লাগে ভারতের। পঞ্চম বলে বাউন্ডারি মেরে সিরিজে টানা দ্বিতীয় সুপার ওভারে ভারতকে জয়ের স্বাদ দেন কোহলি। ম্যাচের সেরা হয়েছেন ভারতের শার্দিল ঠাকুর।
বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব