১৬ বছর আগে কার্ডিফ। তার এক যুগ পর ২০১৭ সালে মিরপুর। এরপর পাঁচ বছরের ব্যবধানে ফের মিরপুর। আশরাফুল, আফতাব ম্যাজিকে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথম জয় পেয়েছিল ৭ হাজার মাইল দূরে কার্ডিফে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওই জয়ের সুখস্মৃতি নিয়ে ১২ বছর কাটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। কার্ডিফের ঐতিহাসিক জয়টি ছিল ওয়ানডেতে।
এরপর দ্বিতীয় জয় টেস্টে। সাকিব আল হাসানের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সাদা পোশাকে ঐতিহাসিক জয় পায় টাইগাররা। এত দিন ওয়ানডে ও টেস্ট জয়ই ছিল অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সাফল্য। মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) ষোলকলা পূর্ণ করল নাসুম আহমেদের অবিশ্বাস্য স্পিনজাদুতে। মিরপুরে পাঁচ ম্যাচ টি-২০ সিরিজে নাসুমসহ গোটা দলের দুরন্ত পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ ২৩ রানে জয় তুলে ইতিহাস গড়েছে।
করোনাভাইরাস নিয়ে অস্ট্রেলিয়া যেসব শর্ত জুড়েছিল তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় বইছিল চারদিকে। তবে মাঠে মাহমুদুল্লাহ বাহিনী সেসব শর্তের জবাব দিয়েছে ব্যাট ও বলে। ১৩২ রানের টর্গেটে খেলতে নেমে টাইগার স্পিনারদের ঘূর্ণি ও পেসারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ২০ ওভারে ১০৮ রানে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। এর ফলে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো জয় পেল বাংলাদেশ। একই সঙ্গে তিন সংস্করণেই অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর স্বাদ পেল টাইগাররা। অস্ট্রেলিয়ার সাথে আগের চার টি-২০ ম্যাচের সবকটিতে হেরেছিল টাইগাররা।
এ জয়ের প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ তার সতীর্থদের সতর্ক করেছেন। এ প্রসঙ্গে মাহমুদউল্লাহ বলেন, এই জয়ের পরও আমরা মাটিতে পা রাখছি। এই ম্যাচে জয় পেয়েছি। এটা শেষ। এখন সময় পরবর্তী ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হওয়া। আর প্রথম বল থেকেই আমরা প্রাধান্য বিস্তারের চেষ্টা করব। আমাদের মাটিতেই পা রাখতে হবে।
তবে এমন জয়ের জন্য সকল কৃতিত্ব বোলারদের দিলেন তিনি। মাহমুদউল্লাহ বলেন, এটা দারুণ ব্যাপার যে মাঠে সবার মাঝে জয়ের ক্ষুধা ছিল। বোলাররা দারুণভাবে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে। প্রথম বল থেকেই যে আক্রমণাত্মক মনোভাবের দরকার ছিল সেটা আমরা দেখাতে পেরেছি।
এদিকে, বোলারদের নৈপুণ্যেই যে সিরিজের প্রথম টি-২০ ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ তা বললেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েডও। খেলা শেষে তিনি বলেন, বাংলাদেশের বোলাররা অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছে। যেকোনো দলের বিরুদ্ধে ১৩০ রান চেজ করা আমাদের জন্য কোনো বিষয় না। কিন্তু ১০ রানে ৩ উইকেট পড়ার পর আমাদের যে ধরনের ক্রিকেট খেলার প্রয়োজন ছিল তাই খেলেছে মিচেল মার্শ। আমিও চেষ্টা করেছি। কিন্তু ১০০ রান পার করাও আমাদের জন্য কঠিন হয়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা জানতাম, আমাদের প্রচুর স্পিন বল খেলতে হবে। যদি আমাদের বোলাররা ১৩০ রানের মধ্যে আটকে রাখে তাহলে যে কোনোভাবেই আমরা জিতব। এ পরাজয়ের জন্য আমি কোনো অজুহাত দেব না।