ডারবান টেস্টে ২২০ রানের হারের পর অনেকেই হয়তো খানিকটা আশাবাদী ছিলেন পোর্ট এলিজাবেথ টেস্ট নিয়ে। বাংলাদেশের টেস্ট কাপ্তান মুমিনুল হকও শুনিয়েছিলের আশার বাণী। বরাবরের মতো সোজাসাপ্টা মুমিনুল জানিয়েছিলেন, তার দলে সবাই আছেন ফুরফুরে মেজাজে। যদিও টাইগারদের খেলার ধরনে মনে হয়েছিল ঈদ সামনে রেখে তাদের বাড়ি ফেরার তাড়াটাই ছিল বেশি।
ডারবান টেস্টে বোলাররা ভালো করেছেন, সেকথা মুমিনুল হকও অকপটে স্বীকার করেছেন। বিপরীতে ব্যাটারদের ব্যর্থতাও তিনি স্বীকার করেছেন কোনও অজুহাত না তুলেই। সেই ব্যাটে ব্যর্থদের তালিকায় খোদ মুমিনুলও আছেন। পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টে দুই ইনিংসে কাপ্তান করেছেন মাত্র ১১ রান। আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিক প্রথম ১৩৬ বলে ৫১ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেছেন। তবে সেই সমালোচিত সুইপ শটেই উইকেটটা উপহার দিয়েছেস সাউথ আফ্রিকাকে।
ব্যাটিং বিপর্যয়ে কেমন করে হাল ধরতে হয়, কীভাবে ঘরকুটো ধরে ঘুরে দাঁড়াতে হয় মুশফিক, মুমিনুল, ইয়াসির আলী ও লিটন দাস সেকথা হয়তো ভুলেই গিয়েছিলেন। তাদের ব্যাটিং অন্তত সেকথাই বলছে। তাদের সাজঘরে ফেরার তাড়া দেখে বরং যে কেউ ভাবতেই পারেন তাদের মনে হয় খেলাটা দুদিন আগে শেষ করেই বাড়ি ফেরার তাড়া।
কথা ছিল উইকেট কামড়ে পড়ে থাকবেন ব্যাটাররা। চেষ্টা করবেন দিনটা পার করার, কিন্তু দিনের দ্বিতীয় ওভারেই পোর্ট এলিজাবেথের নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে মুশফিককে কেন ঝুঁকিপূর্ণ ড্রাইভটা খেলতে গেলেন, সে প্রশ্নের উত্তরটা কেউ মেলাতে পারবেন না নিশ্চয়ই। প্রথম ইনিংসে তাঁর রিভার্স সুইপ করে আউট হওয়ার মতোই মিলবে না।
ইয়াসির আলীর কথাই ধরুন, মুমিনুল আউট হওয়ার পরের ওভারেই অফ স্পিনার সাইমন হারমারকে মিডউইকেট দিয়ে উড়িয়ে মারার সাধ জাগে ইয়াসিরের। পার করতে পারেননি, তাই ক্যাচ আউট।
ব্যাটিংয়ে সবাই এমন আসা-যাওয়া মহড়া দিয়েছেন। সিনিয়র কিংবা জুনিয়র কেউ দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারেননি। ফল হয়েছে আরও ভয়াবহ। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ২৩.৩ ওভার ব্যাট করে ৮০ রান তুলতে পেরেছে মুমিনুলের দল। এর মধ্যে আজ ব্যাট করেছে মাত্র ১৩.৩ ওভার। ৫৩ রান তোলার পথে হারিয়েছে বাকি ৭ উইকেট। সব মিলিয়ে ৩৩২ রানের হারের বড় লজ্জা পেয়েছে বাংলাদেশ।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল