ব্রাজিল সবশেষ বিশ্বকাপের দেখা পেয়েছিল ২০০২ সালে। এরপর কেটে গেছে ২০ বছর, ট্রফি শূন্যতার কাল চলছে দেশটির। সেই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ব্রাজিলের কোচ তিতে শোনালেন আশার কথা। এবার তার ব্রাজিল আছে সেরা ছন্দে। বাছাইয়ে অপরাজিত ও গ্রুপ সেরা হয়ে নিশ্চিত করেছে কাতার বিশ্বকাপের টিকিট। দেশকে বিশ্বসেরা করার তীব্র বাসনা তিতের। তবে প্রত্যাশা পূরণে কিছুটা ভয়ও আছে। তবে সেসব শঙ্কা কাটিয়ে শিরোপা ঘরে তুলতে চান তিতে।
সম্প্রতি দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এমনই আশা ব্যক্ত করেছেন। কোচ তিতে মনে করেন অনেকেই ব্রাজিলকে হিংসে করে। তিনি বলেন, ‘ব্রাজিলকে অনেকেই হিংসে করে, তবে স্বীকার করে না।’ নেইমারদের এই কোচকে প্রশ্ন করা হয় ‘ব্রাজিল কি সবচেয়ে ঈর্ষণীয় দল?’ উত্তরে তিতে বলেন, ‘অনেক মানুষই ব্রাজিলকে ঈর্ষা করে। কিন্তু তারা স্বীকার করে না। সম্ভবত এটা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ঈর্ষণীয় দল।’
তিনি আরও বলেন, “একটা ঘটনা বলি। একজন ইতালিয়ান কোচ বিদ্রুপ করে মিরান্ডাকে (ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার) বলেছিলেন- বেলজিয়ামের কাছে হেরে বিদায় নেয়ার অনুভূতিটা কেমন? আমি এ কথা মিরান্ডার কাছ থেকে শুনি। আমি মিরান্ডাকে বলেছিলাম, তিনি (ওই ইতালিয়ান কোচ) তো এই অনুভূতি কখনও বুঝতে পারবেন না, কারণ তিনি কখনও ব্রাজিলের মতো দলকে এমনকি নিজের দেশকেও কোচিং করাননি। এটা হিংসা..।”
তিতে বলেন, ‘গত বিশ্বকাপে ভিন্ন এক পরিস্থিতিতে কোচ ছিলাম আমি। এবার পুরো চার বছরের চক্র পূরণ করার সুযোগ পেয়েছি। তবে আমার মধ্যেও ভয় কাজ করে, কিন্তু আমি আতঙ্কিত নই। স্বপ্ন সত্যি হওয়ার প্রশ্নে আমি দারুণ আশাবাদী। আমরা বিশ্বকাপে পৌঁছেছি; এখন আমাদের ফাইনালে উঠা এবং চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পালা। এটিই লক্ষ্য।’
ব্রাজিল দল বর্তমান তারকা পূর্ণ। ক্লাবের হয়ে আলো ছড়াচ্ছেন, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, রদ্রিগো, গ্যাব্রিয়েল জেসুস। আছেন পোস্টার বয় নেইমার। জাতীয় দলের হয়ে ৭৪ গোল করা এই পিএসজি তারকাকে ঘিরেই রচিত হবে সব পরিকল্পনা। এমনটাই ইঙ্গিত কোচ তিতের। তিতে বলেন, ‘নেইমার তো নেইমারই...বড় মাপের ফুটবলার হওয়ায় নেইমারকে নিয়ে সব সময়ই বড় প্রত্যাশা থাকবে। কারণ সময় আর অভিজ্ঞতার সঙ্গে মানুষের মধ্যে পরিণতিবোধ আসে।’
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে ব্রাজিলের জয়ের স্বপ্নভঙ্গ করে বেলজিয়াম। সেমিফাইনালে উঠার লড়াইয়ে সেলেসাওদের ২-১ গোলের ব্যবধানে হারায় বেলজিয়াম। এতে সেবার ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জেতা হয়নি নেইমারদের। রাশিয়া বিশ্বকাপের ওই ম্যাচের ১৪ মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিল। ফেলাইনির শট মিরান্ডার পায়ে লেগে বাইরে চলে গেলে কর্নার পায় বেলজিয়াম। ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেই জালে ঢুকিয়ে দেন ফার্নান্দিনহো। ওই আত্মঘাতী গোলই শেষ পর্যন্ত কাল হয়েছে ব্রাজিলের।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক