টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আফগানিস্তানের ক্রিকেটারদের চাহিদা ও বিশ্বের বিভিন্ন লিগে পারফরম্যান্সের কারণে আফগানিস্তানকে ছোট ফরম্যাটে সমীহ করার মতো দল বলে মনে করা হয়।
এশিয়া কাপে বাংলাদেশের গ্রুপে প্রতিপক্ষ হিসেবে শ্রীলঙ্কার সাথে রয়েছে আফগানিস্তান। টি-টোয়েন্টিতে আফগানিস্তানের সাথে বাংলাদেশের রেকর্ডও ভালো না।
আফগানিস্তানের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকার নাম রশিদ খান। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের শীর্ষ উইকেট শিকারিদের একজন। বিশ্বের টি টোয়েন্টি লিগগুলোতে রশিদের চাহিদা রয়েছে।
ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে এই বছরও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে রশিদ খানের দল গুজরাট টাইটান্স।
আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে রশিদ খান বল করেছেন, ১৩ দশমিক আট শূন্য গড়ে। তার ইকোনমি রেট ছয়ের একটু বেশি। তার চারটি ওভার বিশ্বের যে কোনও বোলিং লাইন আপ একটু দেখেশুনে খেলার চেষ্টা করে।
বল হাতে রশিদ খান যতটা দুর্দান্ত, ব্যাট হাতে ততখানি না হলেও তার ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি স্ট্রাইক রেট ১৪৭ এর মতো। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনেক ম্যাচে তিনি ব্যাটিং করার সুযোগই পাননি। তবে তিনি প্রমাণ করেছেন যে ব্যাট হাতে ম্যাচ জেতানোর সামর্থ্য রাখেন।
সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচে ব্যাট হাতে ১০ বলে ৩১ রানের অপরাজিত একটি ইনিংস খেলেন। তবে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হয়ে যাওয়া এই সিরিজটি আফগানিস্তান হেরে গিয়েছে। আর এখানেই আসে প্রশ্ন, আফগানিস্তান কি দল হিসেবে ততটা ভালো যতটা মনে করা হয়?
আফগানিস্তান এখনও বড় দলগুলোর বিপক্ষে বলার মতো সাফল্য পায়নি
আফগানিস্তান টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে জিম্বাবুয়ে ও বাংলাদেশকে হারিয়েছে এই বছর। এর বাইরে নামিবিয়া, স্কটল্যান্ড, আয়াারল্যান্ড ছাড়া আফগানিস্তানের টি টোয়েন্টি দল জয় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২০১৯ সালে।
যেমন রশিদ খানের টি-টোয়েন্টিতে নেয়া ১১২ উইকেটের মধ্যে ৮৫টি উইকেট বাংলাদেশ, আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে। যে কারণে বিশ্বকাপের মতো জায়গায় গিয়ে আফগানিস্তান খুব একটা সুবিধা করতে পারে না।
২০১৯ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে রশিদ খান সবচেয়ে ফ্লপ ক্রিকেটারদের একজন ছিলেন।
২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও আফগানিস্তান সুবিধা করতে পারেনি।
তবু এশিয়া কাপে ভালো সম্ভাবনা আছে আফগানিস্তানের
টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের এই এশিয়া কাপে প্রথম পর্বে আফগানিস্তানের দুই প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আফগানিস্তান এখনও পর্যন্ত একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে, সেখানে ৬ উইকেটে হেরেছে আফগানিস্তান। তবে বাংলাদেশের সাথে আটটি ম্যাচের পাঁচটিতেই আফগানিস্তান জয় পেয়েছে। যার মধ্যে একটি সিরিজে বাংলাদেশকে ৩-০ তে হোয়াইটওয়াশ করেছিল আফগানিস্তান।
আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের মূল শক্তি স্পিনাররা-রশিদ খান, মোহাম্মদ নবী, মুজীব উর রহমান। এই বোলাররা সংযুক্ত আরব আমিরাতের কন্ডিশনের সাথে খুবই অভ্যস্ত। দুবাই বা শারজায় যে ধরনের উইকেট সেখানে মাটিতে স্পিন খুব ভালো ধরে। এখন যদি এই দলটি সুযোগ নিতে পারে এবং ভালো পজিশনে বল ফেলে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলতে পারে সেক্ষেত্রে ভালো সুযোগ রয়েছে।
আফগানিস্তানের চমক দেখানো ক্রিকেটার কারা
বাংলাদেশের বিপক্ষে চমক দেখিয়েছিলেন আফগানিস্তানের পেস বোলার ফজল হক ফারুকী। এখনও পর্যন্ত নয়টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ১২ উইকেট পেয়েছেন এই বাঁ হাতি ফাস্ট বোলার।
১৭ বছর বয়সী নুর আহমেদও প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচেই নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন। মাত্র একটি ম্যাচ খেলেছেন তিনি, এই এক ম্যাচে ১০ রান দিয়ে নিয়েছেন চার উইকেট। এর আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে ৪৩ ম্যাচে ২৭ গড়ে ৪৩ উইকেট নিয়েছিলেন নুর।
ওপেনিংয়ে আছেন মারকুটে ক্রিকেটার হজরতুল্লাহ জাজাই। তিনি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১৪৪ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট করেন। আফগানিস্তানের ক্রিকেটারদের সামর্থ্য আছে বাংলাদেশ এমনকি শ্রীলঙ্কার সাথেও জয় পাওয়ার, তাই এই গ্রুপের খেলা জমবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে প্রথম পর্ব পার হলে ভারত কিংবা পাকিস্তানের বিপক্ষে কঠিন হবে দলটির জন্য।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন