দিনের চতুর্থ বলেই শেষ বাবর আজমের দেড়শ ছাড়ানো ইনিংস। শুরুতেই অধিনায়ককে হারিয়ে চাপে পড়া পাকিস্তানের হাল ধরলেন আঘা সালমান। শেষের ব্যাটসম্যান নিয়ে দলের রান নিয়ে গেলেন সাড়ে চারশর কাছে। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে উপহার দিলেন ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি।
স্বাগতিকদের বড় পুঁজি গড়ার স্বস্তি হারিয়ে যেতে বসেছে নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনার টম ল্যাথাম ও ডেভন কনওয়ের দৃঢ়তায়। তাদের রেকর্ড গড়া অবিচ্ছিন্ন উদ্বোধনী জুটিতে করাচি টেস্টের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) বেশ ভালোভাবেই শেষ করেছে সফরকারীরা।
৫ উইকেটে ৩১৭ রান নিয়ে মঙ্গলবার দিন শুরু করা পাকিস্তানের প্রথম ইনিংস থামে ৪৩৮ রানে। পরে ব্যাটিংয়ে নেমে ল্যাথাম ও কনওয়ের চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় বিনা উইকেটে ১৬৫ রান করে নিউ জিল্যান্ড। এখনও তারা পিছিয়ে ২৭৩ রানে। ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টেস্টে এসে সেঞ্চুরির দেখা পান সালমান। সাত নম্বরে নেমে ১৭ চারে ১৫৫ বলে ১০৩ রানের ইনিংস খেলেন ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। তার আগের সেরা ছিল ৬২।
ল্যাথাম ও কনওয়ের অবিচ্ছিন্ন ১৬৫ রান পাকিস্তানের মাটিতে নিউ জিল্যান্ডের কোনো উদ্বোধনী জুটির সর্বোচ্চ। আগের রেকর্ডটি ছিল গ্রাহাম ডাউলিং ও টেরি জার্ভিসের। ১৯৬৫ সালে লাহোর টেস্টে উদ্বোধনী জুটিতে ১৩৬ রান করেছিলেন তারা।
৮ চারে ৭৮ রানে খেলছেন ল্যাথাম। কনওয়ে অপরাজিত ১২ চারে ৮২ রানে। এতে নিউ জিল্যান্ডের হয়ে দ্রুততম এক হাজার রানের রেকর্ড গড়েন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান, ১৯ ইনিংসে। আগের রেকর্ড ছিল যৌথভাবে জন রিড ও মার্ক রিচার্ডসনের, ২০ ইনিংসে।
শেষের মতো দিনের শুরুটাও দারুণ ছিল কিউইদের। বাবরকে কট বিহাইন্ড করে দেন টিম সাউদি। আগের দিনের ১৬১ রানের সঙ্গে কোনো রান যোগ করতে পারেননি পাকিস্তান অধিনায়ক। এনিয়ে চতুর্থবার দিনের শুরুতে রান করা ছাড়াই ফিরলেন বাবর। এরপর দলকে টানেন ৩ রান নিয়ে খেলা শুরু করা সালমান। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন নুমান আলি। মাটি কামড়ে উইকেটে পড়ে থাকেন তিনি।
তাদের দুইজনের জুটি ৫৪ রানের, যেখানে নুমানের অবদান ৭৫ বলে ৭। তাকে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন নিল ওয়্যাগনার। পরের ওভারে ইশ সোধির বলে কট বিহাইন্ড হন মোহাম্মদ ওয়াসিম। ততক্ষণে ৯৭ বলে ফিফটি করে খেলছেন সালমান। এরপর তিনি দ্রুত রান বাড়াতে থাকেন। তাকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দিয়ে ফিরে যান মির হামজাও।
একটা সময় শঙ্কায় পড়ে যায় সালমানের সেঞ্চুরি। তবে সুযোগটি হাতছাড়া করেননি তিনি। শেষ ব্যাটসম্যান আবরার আহমেদকে স্ট্রাইক না দিয়েই দুই ওভার খেলেন। এর মাঝেই সোধিকে টানা দুই চার মেরে কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কে পা রাখেন ২৯ বছর বয়সী সালমান। তাকে এলবিডব্লিউ করেই পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে দেন সাউদি।
করাচির মন্থর উইকেটে ব্যাটিংয়ে নেমে পাকিস্তানকে কোনো ধরনের সুযোগই দেননি ল্যাথাম ও কনওয়ে। তাদের তেমন কোনো অস্বস্তিতে ফেলতে পারেননি স্বাগতিকদের বোলাররাও। দেখেশুনে খেলে ৮৯ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন কনওয়ে। ল্যাথামের পঞ্চাশ আসে ৮৬ বলে। শেষ পর্যন্ত তাদের প্রতিরোধ আর ভাঙতে পারেনি পাকিস্তান। রেকর্ড গড়া জুটিকে কতদূর নিয়ে যেতে পারেন এই দুইজন, সেটাই এখন দেখার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ১৩০.৫ ওভারে ৪৩৮ (আগের দিন ৩১৭/৫) (বাবর ১৬১, সালমান ১০৩, নুমান ৭, ওয়াসিম ২, হামজা ১, আবরার ৬*; সাউদি ২৫.৫-৪-৬৯-৩, ওয়্যাগনার ২১-২-৬৬-১, এজাজ ৩৬-৬-১১২-২, ব্রেসওয়েল ২৪-৬-৭২-২, সোধি ২১-০-৮৭-২, মিচেল ৩-০-১৯-০)
নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৪৭ ওভারে ১৬৫/০ (ল্যাথাম ৭৮*, কনওয়ে ৮২*; হামজা ৭-১-২৩-০, ওয়াসিম ৯-২-৩২-০, আবরার ১৭-৩-৫৭-০, নুমান ১১-১-৩৭-০, বাবর ৩-০-১১-০)
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ