২৩ মার্চ, ২০২৩ ০৮:১৫

চার বছর পর ঘরের মাঠে ধরাশায়ী ভারত

অনলাইন ডেস্ক

চার বছর পর ঘরের মাঠে ধরাশায়ী ভারত

সংগৃহীত ছবি

মন্থর ও টার্নিং উইকেটে ব্যাটসম্যানদের জন্য রান করা সহজ ছিল না। রান তাড়ায় তবু ভালোভাবেই পথে ছিল ভারত। কিন্তু পথ হারিয়ে তারা যেতে পারল না লক্ষ্যের ধারেকাছে। দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে সিরিজ জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া। সঙ্গে ফিরল আইসিসি ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে।

চেন্নাইয়ে বুধবার (২২ মার্চ) তৃতীয় ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার জয় ২১ রানে। ২৬৯ রানের পুঁজি গড়ে স্বাগতিকদের থামিয়ে দেয় তারা ২৪৮ রানে। হারে শুরুর পর টানা দুই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া।

চার বছর পর দেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ হারের স্বাদ পেল ভারত। এর আগে সবশেষ ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেই পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে হেরেছিল তারা।

অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং ইনিংসে স্টিভেন স্মিথ (শূন্য) ছাড়া বাকি সবাই যান দুই অঙ্কে। তবে পঞ্চাশে যেতে পারেননি কেউ। ত্রিশ ছাড়াতে পারেন দুজন। মূলত লোয়ার অর্ডারের দৃঢ়তায় আড়াইশ ছাড়ায় তাদের সংগ্রহ। আগের দুই ম্যাচে ঝড়ো ফিফটি করা মিচেল মার্শ এবার ৪৭ বলে ৮ চার ও এক ছক্কায় করেন সর্বোচ্চ ৪৭ রান। অ্যালেক্স কেয়ারি করেন ৩৮।

জবাবে ভারত ৩৫ ওভারে ৪ উইকেটে ১৮৫ রানের শক্ত অবস্থানে থেকে পাঁচ বল বাকি থাকতেই অলআউট হয়ে যায়। বিরাট কোহলি ৭২ বলে খেলেন সর্বোচ্চ ৫৪ রানের ইনিংস। হার্দিক পান্ডিয়া বল হাতে ৩ উইকেট নেওয়ার পর ৪০ বলে করেন ৪০ রান।

দারুণ বোলিংয়ে ৪৫ রানে ৪ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার জয়ে বড় অবদান রাখেন লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা। ব্যাট হাতে ১৭ রানের ছোট্ট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসের পর হাত ঘুরিয়ে ৪১ রানে ২ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার অ্যাশটন অ্যাগার।

অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিংয়ে নামে টস জিতে। ডেভিড ওয়ার্নার ফিরলেও ট্রাভিস হেড ও মার্শের ওপেনিং কম্বিনেশন তারা ধরে রাখে এ দিনও। শুরুটাও হয় তাদের ভালো। ১০ ওভারে রান ছিল বিনা উইকেটে ৬১। এরপরই পথ হারায় সফরকারীরা। পান্ডিয়া টানা তিন ওভারে ফিরিয়ে দেন হেড (৩১ বলে ৩৩), স্মিথ ও মার্শকে (৪৭ বলে ৪৭)।

ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বার ওপেনিং ছাড়া ব্যাটিংয়ে নামেন ওয়ার্নার। চার নম্বরে নেমে তিনি বিদায় নেন ৩১ বলে ২৩ রান করে। মার্নাস লাবুশেনও ইনিংস টেনে নিতে পারেননি। দুইজনই আউট হন রিস্ট স্পিনার কুলদিপ যাদবের বলে বাজে শট খেলে।

তখন ১৩৮ রানে ৫ উইকেট নেই অস্ট্রেলিয়ার। সেখান থেকে ৫৪ বলে ৫৮ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন কেয়ারি ও মার্কাস স্টয়নিস।২৬ বলে ২৫ রান করা স্টয়নিসকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন বাঁহাতি স্পিনার আকসার প্যাটেল। কুলদিপ দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন কেয়ারিকে (৪৬ বলে ৩৮)।

সেখান থেকে লোয়ার অর্ডারদের দৃঢ়তায় আড়াইশ ছাড়ায় অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ। ২৩ বলে ২৬ রান করেন শট অ্যাবট। অ্যাশটন আগার ২১ বলে করেন ১৭। পান্ডিয়া ও কুলদিপ নেন ৩টি করে উইকেট।

রান তাড়ায় রোহিত শর্মা ও শুবমান গিলের দারুণ ব্যাটিংয়ে ভারত ৯ ওভারে তুলে ফেলে ৬৫ রান। এরপরই রোহিতকে (১৭ বলে ৩০) ফিরিয়ে শুরুর জুটি ভাঙেন অ্যাবট। গিলও আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৪৯ বলে ৪ চার ও এক ছক্কায় ৩৭ রান করেন তিনি।

তৃতীয় উইকেটে ভারত আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ জুটি পায় কোহলি ও লোকেশ রাহুলের সৌজন্যে। ৯৩ বলে ৬৯ রানের জুটি ভাঙে রাহুলের বিদায়ে (৫০ বলে ৩২)। পরের ওভারে আকসার কাটা পড়েন রান আউটে। কোহলি ও পান্ডিয়ার ব্যাটে তবু সঠিক পথেই ছিল ভারত। ৩৫ ওভারে রান ছিল ৪ উইকেটে ১৮৫। এরপর অ্যাগারের পরপর দুই বলে কোহলি (৭২ বলে ৫৪) ও সূর্যকুমারের বিদায়ে পাল্টে যায় চিত্র।

সূর্যকুমার সিরিজের তিন ম্যাচেই আউট হলেন প্রথম বলে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তিনবার শূন্য রানে আউট হওয়া প্রথম ব্যাটসম্যান তিনি।
এরপর চেষ্টা করেন পান্ডিয়া ও জাদেজা। নিজের পরপর দুই ওভারে এই দুজনকে ফিরিয়ে ভারতকে ম্যাচ থেকে প্রায় ছিটকে দেন জ্যাম্পা। ম্যাচের সেরাও তিনিই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া: ৪৯ ওভারে ২৬৯ (হেড ৩৩, মার্শ ৪৭, স্মিথ ০, ওয়ার্নার ২৩, লাবুশেন ২৮, কেয়ারি ৩৮, স্টয়নিস ২৫, অ্যাবট ২৬, অ্যাগার ১৭, স্টার্ক ১০, জ্যাম্পা ১০*; শামি ৬-০-৩৭-০, সিরাজ ৭-১-৩৭-২, আকসার ৮-০-৫৭-২, পান্ডিয়া ৮-০-৪৪-৩, জাদেজা ১০-০-৩৪-০, কুলদিপ ১০-১-৫৬-৩)

ভারত: ৪৯.১ ওভারে ২৪৮ (রোহিত ৩০, গিল ৩৭, কোহলি ৫৪, রাহুল ৩২, আকসার ২, পান্ডিয়া ৪০, সূর্যকুমার ০, জাদেজা ১৮, কুলদিপ ৬, শামি ১৪, সিরাজ ৩*; স্টার্ক ১০-০-৬৭-০, স্টয়নিস ৯.১-০-৪৩-১, অ্যাবট ১০-০-৫০-১, জ্যাম্পা ১০-০-৪৫-৪, অ্যাগার ১০-০-৪১-২)

ফল: অস্ট্রেলিয়া ২১ রানে জয়ী

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১-এ জয়ী অস্ট্রেলিয়া

ম্যান অব দা ম্যাচ: অ্যাডাম জ্যাম্পা

ম্যান অব দা সিরিজ: মিচেল মার্শ


বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর