দুনিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগল এতদিন ইন্টারনেটে আপনার জন্য জরুরি তথ্য খুঁজে দিয়েছে কিন্তু এখন তারা বন্যা বা কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আটকে পড়া বা উধাও মানুষজনের হদিশ খুঁজে বের করতেও সাহায্য করছে। আর এর পেছনে আছে গুগলের একটি নতুন ওয়েব-নির্ভর অ্যাপ্লিকেশন, যার নাম 'পার্সন ফাইন্ডার'। এই হাতিয়ারকে কাজে লাগিয়েই ভারতশাসিত কাশ্মীরের হাজার হাজার বন্যার্ত মানুষের সন্ধান পাচ্ছেন তাদের আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবরা।
ভারতের যে ন্যাশনাল ডিসঅ্যাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) কাশ্মীরের বন্যায় উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছে, তাদের সঙ্গে গুগল ইন্ডিয়ার এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই সমঝোতা হয়েছে। আর পার্সন ফাইন্ডার প্রয়োগ করে ফলও মিলছে হাতেনাতে।
পার্সন ফাইন্ডারের কাজের পদ্ধতিটা আপাতদৃষ্টিতে খুব সরল। দুর্যোগকবলিত এলাকায় নিরুদ্দেশ কাউকে আপনি খুঁজছেন এবং ওই এলাকা থেকে যারা উদ্ধার পাচ্ছেন, তাদের মধ্যেকার তথ্য মিলিয়ে দেখে প্রিয়জনদের কাছে হারানো মানুষদের সন্ধান আর খবরাখবর পৌঁছে দিচ্ছে এই অ্যাপ্লিকেশন।
সোজা কথায় এই পার্সন ফাইন্ডার কাজ করছে একটা বিশাল ডেটাবেস বা মেসেজ বোর্ডের মতো। যেমন: কাশ্মীরের বন্যায় যে লক্ষ লক্ষ মানুষ আশ্রয়হীন হয়েছেন, যোগাযোগ-বিচ্ছিন্ন হয়ে প্রত্যন্ত এলাকায় আটকে আছেন কিংবা অনেকে হতাহত হয়েছেন, তাদের সবার ব্যাপারে তথ্য বিনিময়ের একটা বিশাল উন্মুক্ত ক্ষেত্র হয়ে ইঠছে এই অ্যাপ।
কাশ্মীরের বন্যাতেই যেমন সেনা ও বিমানবাহিনী, এনডিআরএফ, বিএসএফ-সহ সরকারের অনেকগুলো সংস্থা একযোগে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। কিন্তু কোথায় কারা বেঁচে আছেন, মারা পড়েছেন বা নিরুদ্দেশ সে ব্যাপারে কোনও সমন্বিত ডেটাবেস এতদিন ছিল না। গুগলের পার্সন ফাইন্ডার সেই অভাব অনেকটাই মেটাতে পারছে।
ভারতে এই পার্সন ফাইন্ডার টুলটি গুগল প্রথম ব্যবহার করেছিল গত বছরের জুন মাসে উত্তরাখণ্ডের বিধ্বংসী ভূমিধস আর বন্যার সময়। তবে কাশ্মীরের বন্যায় এই টুল ব্যবহার করা হচ্ছে অনেক বেশি ব্যাপকভাবে, এবং সরকারি ত্রাণ সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় রেখে।
গত কয়েক বছরে জাপানের সুনামি, চীনের ভূমিকম্প বা বিশ্বের আরও কয়েকটি বড় বড় বিপর্যয়ের সময় গুগল এই পার্সন ফাইন্ডার টুলটি অল্পবিস্তর ব্যবহার করেছিল।
গতকাল বুধবার বিকেলে ভারতশাসিত কাশ্মীরের জন্য গুগলের পার্সন ফাইন্ডার পেজে প্রায় ৩৫০০ রেকর্ড ট্র্যাক করা হচ্ছিল, তবে এই সংখ্যাটা প্রতি ঘণ্টাতেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। বিবিসি বাংলা।