সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুক। আর নিয়মিত এই ফেসবুকের ব্যবহারে তৈরি হতে পারে বিষণ্ণতা। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ফেসবুক এবং সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ব্যবহারকারীদের মধ্যে ঈর্ষা ও হিংসার জন্ম দেয়। যা পরবর্তীতে রূপান্তরিত হয় বিষণ্ণতায়। তবে এটি নির্ভর করে ব্যবহারকারী কীভাবে ফেসবুক ব্যবহার করছেন তার উপর।
বর্তমান যুগে ফেসবুকের ব্যবহার প্রায় বেশিরভাগ মানুষের দৈনন্দিন রুটিনে পরিণত হয়েছে। যারা কেউ এই ধরনের মানসিক নেতিবাচক আবেগ সম্পর্কে অবগত নন। কিন্তু গবেষকগণ বের করেছেন প্রতিদিন ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোর ব্যবহার কীভাবে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলছে। ইউনিভার্সিটি অফ মিসৌরি এর বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি নিয়মিত ফেসবুকের ব্যবহার মনের মধ্যে ঈর্ষা বা হিংসা ধরণের আবেগের জন্ম দেয় তবে তা বিষণ্ণতা রোগে আক্রান্তের সম্ভাবনা বাড়ায়। অধ্যাপক মার্গারেট ডাফি বলেন, ‘ফেসবুক আত্মীয় এবং বন্ধুবান্ধবের সাথে যোগাযোগ রাখার একটি ভালো মাধ্যম। কারণ এর মাধ্যমে খুব সহজেই নিজের কাজকর্ম, হাসি, দুঃখসহ জীবনের সবকিছুই শেয়ার করা যায়। কিন্তু যদি অন্য কারো বা বন্ধু কিংবা নিজের আত্মীয়ের সুখ জীবন, সম্পর্ক এবং উন্নত অর্থনৈতিক অবস্থা সামনে আসে তখন অনেকের মধ্যে এক ধরণের ঈর্ষা বা হিংসার জন্ম হয়। এই ঈর্ষা একপর্যায়ে ব্যবহারকারীকে বিষণ্ণ করে তোলে’।
অপ্রাপ্তবয়স্ক প্রায় সাতশজন ফেসবুক ব্যবহারকারীর উপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে, যারা ফেসবুক ব্যবহারের সময় শুধুমাত্র নিজের নিউজফিডে অন্য কারো সফলতা, সুখ, উন্নতি দেখেন অর্থাৎ যাদেরকে মূলত 'surveillance users' বলা হয়, তাদের মধ্যে বিষণ্ণতার লক্ষণ পাওয়া যায়। কিন্তু যারা অন্যের এসকল বিষয় খেয়াল না করে নিজের ব্যাপারগুলো ফেসবুকে শেয়ারে সময় ব্যয় করেন তাদের মধ্যে এইধরনের লক্ষণ একেবারেই দেখা যায় না। ডাফি আরও বলেন, ‘আমরা গবেষণায় দেখেছি যারা ফেসবুকে নিজের বন্ধুবান্ধবের জীবনের উন্নতি, সুখ ও সমৃদ্ধি দেখে ঈর্ষা অনুভব করেন তারা নিজের জীবন সম্পর্কে অনেক বেশি বিষণ্ণ থাকেন। কিন্তু ফেসবুক একে অপরের সাথে যোগাযোগ রাখার বেশ ভালো একটি মাধ্যম। যদি এর ব্যবহারকারীরা নেতিবাচক মনোভাব ধরে না রাখেন। অন্যের জীবনে কি ঘটছে তা জানার আগ্রহ কমিয়ে নিজের জীবন নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তাহলে এইধরনের নেতিবাচক আবেগের জন্ম হয় না। তাই ফেসবুক ব্যবহারকারীদের নিজেদের জন্যই এই মাধ্যমটির সঠিক ব্যবহার করা শেখা উচিত’। এই গবেষণা ও ফলাফলটি ‘কম্পিউটার ইন হিউম্যান বিহেভিয়ার’ জার্নালে প্রকাশিত হয়।
বিডি-প্রতিদিন/ ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫/ রোকেয়া।