১৬ মে, ২০২১ ০২:০১

মঙ্গলের মাটিতে মহাকাশযান রোভার ঝুরং, যেভাবে 'অসাধ্য' সাধন করল চীন!

অনলাইন ডেস্ক

মঙ্গলের মাটিতে মহাকাশযান রোভার ঝুরং, যেভাবে 'অসাধ্য' সাধন করল চীন!

মঙ্গলপৃষ্ঠে অবতরণ করল বেইজিংয়ের মঙ্গলযান ঝুরং নামের রোভার। শনিবার রোভার রোবটের লাল গ্রহের বুকে সফলভাবে নামার খবর প্রকাশ্যে আনা হয়েছে। চীনের সিসিটিভি জানিয়েছে, মিশনটি 'সফলভাবে পূর্ব-নির্বাচিত অঞ্চলে অবতরণ করেছে'। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, ঝুরং নামের রোভার রোবটিতে মোট ছয়টি চাকা আছে। এটি মঙ্গলের ইউটোপিয়া প্লানিটিয়ায় তার মিশন শুরু করবে। বর্তমানে এটি মঙ্গলের উত্তরাঞ্চলের পার্বত্য এলাকায় অবস্থান করছে।

মঙ্গল গ্রহের পরিবেশ অত্যন্ত প্রতিকূল। কিন্তু সেই প্রতিকূলতার মধ্যেও ঝুরং-এর এই অবতরণ ছিল লাল ফৌজের কাছে বেশ চ্যালেঞ্জিং। ঝুরং এর অর্থ ‘গড অফ ফায়ার’। নিজের সুরক্ষার স্বার্থে এই রোভারটি মঙ্গলে অবতরণের জন্য সুরক্ষাধর্মী ক্যাপসুল, একটি প্যারাস্যুট ও একটি রকেট প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করেছিল।

আমেরিকা, রাশিয়ার পর চীনের এই রোভার লাল গ্রহের মাটি ছুঁলেও, এই রোভারের বেশ কিছু বিশেষত্ব রয়েছে। বলা যায় চীনই বিশ্বের প্রথম দেশ, যা কিনা মঙ্গল গ্রহে প্রথম যাত্রার সময় প্রদক্ষিণ, অবতরণ এবং রোভিং অভিযান পরিচালনা করেছে। যার সঙ্গে আমেরিকা ও রাশিয়ায় লাল গ্রহে পৌঁছানোর সাদৃশ্য ছিল না।

তিন মাসের মিশন-
প্রযুক্তিগত দিক থেকে দুই সুপার পাওয়ারের বিরুদ্ধে লড়ে ইতিহাস গড়তেই এই মিশন বেইজিংয়ের। যার নাম দেওয়া হয়েছে নিহাও মার্স (Nihao Mars)। চীনের পৌরাণিক অগ্নি দেবতার নামে নামকরণ করা হয় ঝুরং-এর।

ছয় চাকাযুক্ত, সৌরশক্তি দ্বারা চালিত এবং প্রায় ২৪০ কেজি ওজনের এই চীনা রোভার মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠ থেকে শিলা নমুনা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের সন্ধানে রয়েছে। এছাড়া মঙ্গলের মাটির রাসায়নিক বিশ্লেষণ করে সেই তথ্য গ্রাউন্ড স্টেশনে পাঠানোর কাজ করবে এই রোভার।

গতবছর জুলাই মাসে মঙ্গল অভিযানে পাঠানো হয় এই রোভারটি। তাইওয়ান-১ অর্বিটারের মাধ্যমে এই রোভারকে লাল গ্রহে পাঠানোর কর্মসূচি নিঃসন্দেহে এক বড় মাইলফলক হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে।

মহাকাশযানটি ফেব্রুয়ারিতে মঙ্গল গ্রহের কক্ষপথে প্রবেশ করেছিল এবং সেখান থেকে বেশ কিছু ছবিও পাঠায় সে। মঙ্গলের কক্ষপথে অবস্থান করে ২২ কিলোমাটার দূরের দু'টি গহ্বরের ছবি তুলতে সক্ষম হয় চীনের এই মঙ্গলযান। অবশেষে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম শুক্রবার ঘোষণা করে যে, এটি 'গুরুত্বপূর্ণ স্পর্শঘাট পর্যায়ে' (Crucial Touchdown Stage) পৌঁছেছে।

জটিল এই অবতরণ প্রক্রিয়াটিকে 'সাত মিনিটের সন্ত্রাস' বলা হয়েছে। কারণ রেডিও সংকেতগুলাে মঙ্গল থেকে পৃথিবীতে পৌঁছতে যত সময় নেয়, তার চেয়ে এটি দ্রুত ঘটেছে।

মঙ্গলে অবতরণের ক্ষেত্রে বেশ কিছু মার্কিন, রাশিয়ান এবং ইউরোপীয় রোভারের প্রচেষ্টা অতীতে ব্যর্থ হয়েছিল। তবে সর্বশেষতম সফল অবতরণ ফেব্রুয়ারিতে হয়েছিল, যখন মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা তার রোভার পারসিভারেন্স অবতরণ করায়, যা এখনও লাল গ্রহটিকে অন্বেষণ করে চলেছে।

বিডি প্রতিদিন/ মজুমদার 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর