অ্যাপলের বহুল প্রত্যাশিত ফোল্ডেবল আইফোন অবশেষে বাজারে আসতে চলেছে। ২০২৬ সালে আসতে পারে এই ডিভাইস, যা অ্যাপলের ডিজাইনে আনতে যাচ্ছে যুগান্তকারী পরিবর্তন। নতুন লিক বলছে, ‘আইফোন ফোল্ডে’ থাকছে পাঞ্চ-হোল ডিসপ্লে, শক্তিশালী টাইটানিয়াম ফ্রেম, ডুয়াল ক্যামেরা, আর সম্ভবত বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা ফোল্ডেবল ডিজাইন।
প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, এটি হবে অ্যাপলের সবচেয়ে বড় ডিজাইনের ফোন হবে। বর্তমান ফোল্ডেবল ট্রেন্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এটি স্যামসাং গ্যালাক্সি জেড ফোল্ড-এর মত বুক-স্টাইল ডিজাইন হতে পারে।
থাকবে পাঞ্চ-হোল ডিসপ্লে, বাদ পড়ছে ডাইনামিক আইল্যান্ড
ডাইনামিক আইল্যান্ডের যুগ শেষ হতে চলেছে—আইফোন ফোল্ডে থাকতে পারে “হোল স্ক্রিন টেকনোলজি”। চীনের সোশ্যাল প্ল্যাটফর্ম উইবোতে ডিজিটাল চ্যাট স্টেশন নামে পরিচিত এক বিশ্বস্ত লিকার জানিয়েছেন, এক্সটারনাল স্ক্রিনে দেখা যেতে পারে পাঞ্চ-হোল ডিসপ্লে।
এমনকি ভবিষ্যতের আইফোন ১৮ ও ১৮ প্রো ম্যাক্সেও ডাইনামিক আইল্যান্ড বাদ পড়তে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে, যেখানে ফেইস আইডি চলে যেতে পারে স্ক্রিনের নিচে। তবে iPhone Fold-এ পাঞ্চ-হোলটি কোথায় থাকবে—মাঝে না কি পাশে—তা এখনও নিশ্চিত নয়।
কতটা পাতলা হবে এই ফোন?
আইফোন ফোল্ড খুললে এর পুরুত্ব হতে পারে মাত্র ৪.৫ মিমি এবং ভাঁজ করা অবস্থায় ৯–৯.৫ মিমি। এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে পাতলা ফোল্ডেবল ফোনগুলোর একটি বানাতে চায় অ্যাপল। এতে থাকবে সাইড-মাউন্টেড টাচ আইডি এবং টাইটানিয়াম ফ্রেম, যা ফোনটিকে আরও বেশি টেকসই করে তুলবে।
স্ক্রিন ও ক্যামেরা: দুই অবস্থায়ই ব্যবহারযোগ্য
ফোল্ড করার পর বাইরের স্ক্রিন হতে পারে ৫.৫ ইঞ্চি, আর ওপেন করলে তা হয়ে উঠবে ৭.৮ ইঞ্চির ট্যাবলেট আকৃতির ডিসপ্লে। থাকবে ডুয়াল রিয়ার ক্যামেরা এবং দুই অবস্থাতেই সেলফি ক্যামেরা—যা ভিডিও কল এবং ভিন্ন ভিন্ন ফটোগ্রাফি অভিজ্ঞতায় সহায়তা করবে।
কবজায় নতুন প্রযুক্তি
আইফোন ফোল্ড-এর সবচেয়ে আলোচিত বৈশিষ্ট্য হতে পারে এর hinge বা কবজা। এতে থাকতে পারে লিকুইড মেটাল অ্যালয়, যা পূর্বে শুধুমাত্র সিম ইজেক্টর তৈরিতে ব্যবহৃত হতো। এই প্রযুক্তি ব্যবহারে স্ক্রিনে ভাঁজের দাগ অনেক কম দেখা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
কবে আসছে আইফোন ফোল্ড?
বিশ্লেষক জেফ পু জানিয়েছেন, ফক্সকন ইতোমধ্যেই এই ফোনের New Product Introduction বা এনপিআই প্রক্রিয়া শুরু করেছে। অ্যাপল একইসঙ্গে একটি ফোল্ডেবল আইফোন এবং একটি ফোল্ডেবল আইপ্যাড নিয়ে কাজ করছে। সব কিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালের দ্বিতীয়ার্ধে ফোনটির উৎপাদন শুরু হতে পারে এবং বছরের শেষ দিকে বাজারে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বিকল্পভাবে, এটি ২০২৭ সালেও আসতে পারে।
সবই এখনো গুজবের পর্যায়ে
বিশ্লেষক মিং-চি কুও, জেফ পু ও ডিজিটাল চ্যাট স্টেশন বলছেন, অ্যাপল ফোনটির ডিজাইন ও প্রযুক্তি প্রায় চূড়ান্ত করেছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু ঘোষণা দেয়নি, ফলে সব তথ্যই এখনও গুজবের পর্যায়ে রয়ে গেছে।
বিডি প্রতিদিন/আশিক