মঙ্গলবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

বর্জ্য থেকে সার উৎপাদন

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

বর্জ্য থেকে সার উৎপাদন

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) গার্ভেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট প্রকল্পের মাধ্যমে আবর্জনা থেকে জৈব সার উৎপাদন করছে। এই সার ব্যবহার করা হচ্ছে কৃষি ও সবজি চাষে। উৎপাদিত সার প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা দরে। বাজারের সাধারণ সার থেকে দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় এগুলোর ব্যবহার বাড়ছে। এর মাধ্যমে আবর্জনার সৃষ্ট দূষণ থেকে পরিবেশ রক্ষা, মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি, মাটি নরম করা এবং মাটি বেশি করে পানি শোধন করে। ফলে বৃক্ষ ও ফসল দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ২০০৫ সালের ৯ এপ্রিল সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী দুই একর জায়গায় ‘গার্ভেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট’ প্রকল্পটি উদ্বোধন করেন।

চসিক সূত্রে জানা যায়, নগরে প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার টন আবর্জনা অপসারণ করা হয়। এর মধ্যে সার তৈরির উপযোগী পচনশীল আবর্জনাগুলো পৃথকভাবে সংগ্রহ করা হয়। পচনশীল ছয় টন আবর্জনা থেকে দুই টন সার উৎপাদন করা যায়। প্রতিদিন চার টন করে মাসে ১২০ টন আবর্জনা প্রক্রিয়া করে ৭০ থেকে ৮০ টন সার উৎপাদন করা হয়। উৎপাদিত প্রতি কেজি পাউডার সারের মূল্য ৯ টাকা এবং দানাদার সারের মূল্য ১২ টাকা। ডিলারের মাধ্যমে সারা দেশে এবং পাইকারি ক্রেতার মাধ্যমে চট্টগ্রামে বাজারজাত করা হয়।

প্রকল্প ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইউসুফ খান বলেন, ‘প্রকল্পের মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, আবর্জনাকে বাণিজ্যিক আকার দিয়ে আয় করা, নতুন করে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা ও কার্বন-ডাই অক্সাইড শোধন করা হয়। আবর্জনার দূষিত বায়ু বাতাসকে দূষিত করে। কিন্তু সার তৈরি হলে আবর্জনা বাতাসকে আর দূষিত করতে পারে না। তাছাড়া আবর্জনা থেকে সার উৎপাদন করাটা অনেক বেশি লাভজনক। বর্তমানে সার তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে দুটি কাটিং মেশিন, একটি নেটিং মেশিন, চারটি মিলিং মেশিন ও চারটি দানাদার মেশিন।’

জানা যায়, গার্ভেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্টে আবর্জনাগুলো আনা হয়। এরপর প্রাথমিক বাছাইয়ে এগুলোকে ‘এ’, ‘বি’ ও ‘সি’ তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। এ ক্যাটাগরির আবর্জনা অতি দ্রুত পচনশীল, বি ক্যাটাগরি এর চেয়ে বেশি ও সি ক্যাটাগরির তার চেয়েও বেশি সময় ধরে পচে। এরপর আবর্জনাগুলো মিশিয়ে নির্দিষ্ট বক্সে প্রক্রিয়ার জন্য রাখা হয়। প্রতিটি বক্সে ১০ ধাপে রাখা আবর্জনাগুলো ৪০ দিন পর্যন্ত থাকে। এ সময় সেখান থেকে একটি মাত্রার গরম হাওয়া বের হয়। এরপর আবর্জনাগুলোর গরম হাওয়া স্বাভাবিক মাত্রায় এলে বক্স থেকে নিয়ে খোলা জায়গায় রাখা হয়। এগুলো দৈনিক তিনবার করে নাড়াচাড়া করতে হয়। এরপর চকলেট রং আসা পর্যন্ত রোদের তাপে রাখতে হয়। পরে মেশিনে আবর্জনাগুলো কাটিংয়ের পর বড় ছোট পৃথক করা হয়। এ প্রক্রিয়ায় একটি অংশ সার ও অপরটি হবে অপ্রয়োজনীয়। সারের জন্য বাছাই করা আবর্জনাগুলোকে এরপর মিলিং করা হয়। এখানে কিছু পাউডার, কিছু দানা হিসেবে বের হয়। এরপরই এগুলো পৃথক প্যাকেট করে বাজারজাত করা হয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর