মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

মাথা ভাঙা জেব্রার চিড়িয়াখানা

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

মাথা ভাঙা জেব্রার চিড়িয়াখানা

এক যুগ থেকে বেহাল অবস্থা কুমিল্লা চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেনের। সিমেন্টের তৈরি জেব্রার মাথা  ভেঙে গেছে। ছিঁড়ে গেছে দোলনার শিকল। নেই তেমন প্রাণী। প্রাণী দেখতে আসতে লোকজন শূন্য খাঁচা দেখে মন খারাপ করে ফিরে আসেন। বোটানিক্যাল গার্ডেনের এক কোনে শিশুদের বসায় ব্যবহার করা প্লাস্টিকের খেলনা রাখা হয়েছে, যা দৃষ্টিকটু।

সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ১২ ডিসেম্বর যুবরাজ নামের সিংহটি মারা গেছে। খাবার না দেওয়ায় সিংহটি মারা গেছে বলে অভিযোগ ওঠে। তবে তখন জেলা পরিষদের দাবি ছিল, বার্ধক্যের কারণে যুবরাজের মৃত্যু হয়। গত মাসে চিড়িয়াখানা থেকে একটি মেছো বাঘ পালিয়ে যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লা চিড়িয়াখানায় নেই উল্লেখযোগ্য পশু-পাখি। যে কয়েকটি পশু-পাখি আছে তাও মুমূর্ষু প্রায়। অধিকাংশ খাঁচা শূন্য। একটু বৃষ্টি হলে চিড়িয়াখানা ডুবে যায়, ডুবে যায় এর প্রবেশ পথও। পশু-পাখি না থাকায় দর্শনার্থী কমে গেছে। এক যুগ ধরে এমন দুরবস্থা কুমিল্লা চিড়িয়াখানার। তেমন দর্শনার্থী নেই, অনেকটা পরিত্যক্ত বাড়ির মতো।

চিড়িয়াখানার প্রাণী পরিচর্যাকারী মো. শাহ আলম বলেন, সব মিলিয়ে রয়েছে ১০টি বানর, তিনটি বন মোরগ, চারটি মেছো বাঘ, অজগর সাপ একটি, হরিণ তিনটি, ময়ূর একটি ও চিল তিনটি।

সূত্র জানায়, ১৯৮৬ সালে কুমিল্লা নগরীর কালিয়াজুরি মৌজায় জেলা প্রশাসকের বাংলোর পাশে ১০ দশমিক ১৫ একর ভূমিতে গড়ে ওঠে কুমিল্লা চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন। কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে চিড়িয়াখানায় পরিবার নিয়ে আসেন ব্যবসায়ী আহমেদ আলম। তিনি বলেন, ‘শিশুরা একটি খারাপ অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়ি ফিরছে। খালি খাঁচাকে তারা চিড়িয়াখানা বলে ভাববে। এখানে ২০ টাকা টিকিট কেটে কয়েকটি বানর আর খাঁচা ছাড়া দেখার কিছু নেই।’

চিড়িয়াখানার লিজ গ্রহীতা আনিসুর রহমান বলেন, ‘এখানে তেমন কোনো প্রাণী নেই, তাই দর্শনার্থী আসছে না। লিজের এত টাকা কীভাবে তুলব জানি না।’ কুমিল্লা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘জেলা পরিষদের নিজস্ব আয় কম। আমরা দেওয়াল সংস্কার, সড়কসহ কিছু কাজ করেছি। কিছু প্রাণী আনার পরিকল্পনা রয়েছে। বড় বরাদ্দ পেলে এর ব্যাপক সংস্কার করা যাবে।’

সর্বশেষ খবর