মঙ্গলবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

খালপাড়ের ভবনগুলোর কী হবে?

এভাবে চট্টগ্রাম নগরে এমন কোনো খালই নেই, যে খালের পাড় ঘেঁষে অবৈধ ভবন বা স্থাপনা গড়ে ওঠেনি। চট্টগ্রাম নগরে ছোট-বড় ৩৬টি খাল আছে। এসব খালের পাড়ে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ভবন, মার্কেট ও বাণিজ্যিক স্থাপনা

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম

খালপাড়ের ভবনগুলোর কী হবে?

চট্টগ্রাম নগরের চাক্তাই খালপাড় ঘেঁষেই নির্মিত হয়েছে নয়তলা ভবন। নগরের  খুলশী এলাকায় গয়নাছড়া খালের ওপর নির্মিত হয়েছে ১৮ তলা একাডেমিক ভবন। রাজাখালী খালের ওপর ছয়তলা ভবন নির্মাণ করে পরিচালিত হচ্ছে একটি গার্মেন্ট। চাক্তাই খালের দুই পাড়ে দুই কিলোমিটারের মধ্যে তৈরি হয়েছে প্রায় ১২টি বহুতল ভবন। রাজাখালী খালের শুরু থেকে বাকলিয়া থানা পর্যন্ত তিন কিলোমিটারের মধ্যেও অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে অনেক বহুতল ভবন-মার্কেট। 

এভাবে চট্টগ্রাম নগরে এমন কোনো খালই নেই, যে খালের পাড় ঘেঁষে অবৈধ ভবন বা স্থাপনা গড়ে ওঠেনি। চট্টগ্রাম নগরে ছোট-বড় ৩৬টি খাল আছে। এসব খালের পাড়ে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ভবন, মার্কেট ও বাণিজ্যিক স্থাপনা। ক্রমেই এসব ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। তাছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নেও নানাভাবে বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে- এসব  ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর কী হবে, ভাঙা হবে কি না। সর্বশেষ ২০ ডিসেম্বর নগরের মাঝিরঘাট এলাকার গুলজার খাল খননের সময় খালের পাড়ে থাকা তিনতলা ভবনটি হেলে পড়ে। সঙ্গে পাশের একটি দ্বিতল ভবন ও একটি মন্দিরও ঝুঁকিতে পড়ে। 

প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম মহানগর ইমারত (নির্মাণ, উন্নয়ন, সংরক্ষণ ও অপসারণ)  বিধিমালা, ২০০৮ অনুযায়ী নগরে ভবন নির্মাণে অনুমোদন দেয় নগর চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। খালপাড়ে কোনো নকশা অনুমোদনের সময় নিয়ম অনুযায়ী ১২ ফুট দূরে তা নির্মাণ করার কথা। কিন্তু চট্টগ্রামের খালপাড়ে গড়ে ওঠা ভবনগুলো কোনো নিয়মই মানেনি।  চউকের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন, নগরের খালপাড়ে সিডিএর অনুমোদন না নিয়ে অনেকে ভবন তৈরি করেছেন। তবে জলাবদ্ধতায় প্রকল্পের কাজ শুরুর সময় এ রকম অনেককেই ঝুঁকিপূর্ণ অংশ ভেঙে ফেলতে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশই তা মানেননি। পরে চউকের ম্যাজিস্ট্রেট নগরের ৩৬টি খালে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করে ছোট-বড় ৩ হাজার ১৭৯টি অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করেন। তাছাড়া নগরে এ জাতীয় ঝুঁকিপূর্ণ কতগুলো ভবন আছে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে সিটি করপোরেশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

জানা যায়, নগরের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে হালনাগাদ কোনো তথ্য নেই চউকের কাছে। তবে চউকের ২০০৭ সালের তালিকা মতে, নগরে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন আছে ৫৭টি। এর মধ্যে আবাসিক ভবন ৩৫টি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একটি, আবাসিক ও বাণিজ্যিক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ১২টি এবং শুধু বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে ৯টি। এসব ভবন ভাঙার জন্য চসিককে তালিকা দেওয়া হয়। সেখান থেকে চসিক মাত্র তিনটি ভবন ভাঙে। সর্বশেষ ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে একটি ভবন অপসারণ করে।

সর্বশেষ খবর