বুধবার, ১৭ জুন, ২০২০ ০০:০০ টা

করোনায় হাতের যত্ন

করোনায় হাতের যত্ন

♦ মডেল : অপ্সরা সুহী ♦ ছবি : মনজু আলম

সময়টা অন্যরকম। করোনায় আক্রান্ত বিশ্ব। বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়াই ভালো থাকার একমাত্র উপায়। উজ্জ্বল ত্বকের আড়ালে হাতের রুক্ষতা আর খসখসে ভাব। সৌন্দর্যের প্রশ্নে সম্পূর্ণ মার্কস পেতে শরীরের অন্যান্য অংশের মতো এ সময় প্রয়োজন হাতেরও যত্ন। পাঠকদের জন্য রইল বিশেষ গাইডলাইন।

 

চলছে করোনাকাল। বিশ্বজুড়ে তান্ডব চালাচ্ছে করোনাভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এ সময় করোনামুক্ত থাকতে বারবার হাত ধোয়ার বিকল্প নেই। কিন্তু বেশি সাবান ব্যবহারের ফলে অনেকের হাতের ত্বকে দেখা দিতে পারে কিছু সমস্যা। বারবার সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার ফলে দেখা দিতে পারে হাতের চামড়ার রুক্ষতা, হাত জ্বালাপোড়া এবং নখ ফেটে যাওয়ার মতো সমস্যা। অনেকের তো আবার হাতে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দেয়। ফলে সমস্যা বেড়ে হতে পারে নানা রকম সংক্রমণ। এসব সমস্যা যাদের হচ্ছে, তারা এ সময় ঘরে থাকা কিছু উপাদান ব্যবহার করতে পারেন। সমস্যার সমাধান তো হবেই, আপনিও থাকবেন সুরক্ষিত।

বারবার সাবান-পানি দিয়ে হাত ধোয়ার জন্য অনেকের হাতের চামড়া হয়ে পড়েছে রুক্ষ। যারা এ সমস্যায় ভুগছেন তারা সব সময় সঙ্গে রাখুন কার্যকরী স্যানিটাইজার। একটু পর পর ভালোভাবে হাত স্যানিটাইজ করে নিন। শুধু খাবার খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন। আর হ্যাঁ, সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়ার পর অবশ্যই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।

দীর্ঘক্ষণ হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করলেও হাতের চামড়া কুঁচকে যায়, রুক্ষ হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে হ্যান্ড গ্লাভস পরার আগে হাতে বেশি করে ট্যালকম পাউডার লাগিয়ে নিন। তবে ঘরে ফিরে হ্যান্ড গ্লাভস খোলার পর হাত কিছুক্ষণ বরফ পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।

হাতের চামড়া উঠলে বেশি ঘষাঘষি করবেন না। সমস্যার সমাধানে বারবার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। হাতের খসখসে ভাব দূর করতে সমপরিমাণ নারিকেল তেল ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর সামান্য চিনি মিশিয়ে স্ক্যাবিং করতে পারেন। এরপর গরম পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন।

নখ বেশি শুষ্ক হয়ে গেলে নেইল কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে। রাতে ঘুমোতে যাওয়ার সময় হাত এবং নখে অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন। ভালো ফল পাওয়ার জন্য অলিভ অয়েলের সঙ্গে রসুন ছেঁচে মিশিয়ে গরম করে নখে ব্যবহার করতে পারেন।

ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে।

এছাড়াও পানি জাতীয় খাবার যেমন- স্যুপ, ফলের রস, সবজির রস, ডাবের পানি ইত্যাদি খেতে হবে। আর গোসল শেষে  ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। ছুটির দিনে পুরো শরীরে অলিভ অয়েল মেখে হালকা গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিতে পারেন।

এছাড়া রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে গ্লিসারিন ও গোলাপজল একসঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এটি হাতের ত্বক নরম রাখতে সাহায্য করবে।

অনেক সময় অতিরিক্ত ক্ষারযুক্ত সাবান-পানি ব্যবহারে হাত কালচে দেখায়। সেক্ষেত্রে লেবু অর্ধেক করে কেটে চিনির সঙ্গে মিশিয়ে হাতে বেশ কয়েকবার ব্যবহার করতে পারেন। চিনি যতক্ষণ না গলে যাচ্ছে ততক্ষণ ঘষুণ। নিয়মিত ব্যবহারে কালচে ভাব অনেকটা কমে আসবে। এ ছাড়া বেসন, সামান্য দই ও হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে পেস্ট করেও ব্যবহার করতে পারেন।

করোনা নিরাময়ের জন্য কার্যকরী এবং অপেক্ষাকৃত কম খরচে কাজ করা যায় এমন ব্লিচ ব্যবহার ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। তাই করোনাকালে ব্লিচ পরিহার করাই উত্তম। এ ছাড়া স্যাভলন বা ডেটলের স্পিরিটও সরাসরি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। তাই এসব জীবাণুনাশক ব্যবহার করার আগে অবশ্যই পানি মিশিয়ে হালকা করে নিতে হবে।

 

প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক

করোনার পিএইচকে মেরে ফেলে এমন প্রাকৃতিক জিনিসগুলোর মধ্যে আমরা লেবু বেছে নিতে পারি। কিন্তু লেবু বারবার ব্যবহার ব্যয়বহুল হতে পারে। কিন্তু আপনি যদি চান তাহলে লেবুর রস বোতলে ভরে ব্যবহার করতে পারেন। এটি ন্যাচারাল ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও দারুণ। তবে স্বাস্থ্যবিদরা এখনো কিন্তু প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক ব্যবহারের বিষয়ে কিছু বলেননি।

এছাড়া আপনি চাইলে প্রাকৃতিক জীবাণুনাশক স্প্রে বানিয়ে নিতে পারেন। পুদিনাপাতা, নিমপাতা এবং তুলসীপাতা বেটে চার কাপ পানি মিশিয়ে ভালোভাবে জ্বাল দিয়ে নির্যাস বের করে নিন।

সঙ্গে সামান্য বেকিং সোডা এবং কর্পুর মিশিয়ে রেখে দিন। এটি খুব ভালো টোনার ও জীবাণুনাশক (অ্যান্টিসেপটিক) প্যাক হিসেবে কাজ করবে। হাত ধোয়ার পর এটি স্প্রে করে লাগিয়ে নিলে হাত জ্বালা করবে না আর জীবাণুও থাকবে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর