সোমবার, ২ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

এক লাফে ২০ হাজার কোটি ডলার হারিয়ে শীর্ষস্থান হারান ইলন মাস্ক

এক লাফে ২০ হাজার কোটি ডলার হারিয়ে শীর্ষস্থান হারান ইলন মাস্ক

ইলন মাস্ক; প্রযুক্তির এক বিস্ময়। বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবেরের তালিকায় ধূমকেতুর মতো যার উত্থান, আবার হঠাৎ করেই হারিয়ে ফেলেন প্রথম স্থানটি। বিশ্বের কোটিপতিদের তালিকা তৈরি করে যারা সেই ‘ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স’ সম্প্রতি এ খবর দিয়েছে। চলতি বছরে বিশ্বের ৫০০ জন কোটিপতির মধ্যে দুই নম্বরে চলে এসেছেন তিনি।

পাগলাটে স্বভাবের কারণে নিয়মিতই মিডিয়ায় আলোচিত তিনি। তিনি একমাত্র ব্যক্তি, যিনি কি না সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় ২০ হাজার কোটি ডলারের ব্যক্তিগত সম্পদ অর্জন করে আবার তা অল্প সময়ের ব্যবধানে খুইয়ে বসেছেন। ইতিহাসে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে ২০০ বিলিয়ন ডলার বা ২০ হাজার কোটি ডলার সম্পদের মালিক হন ইলন মাস্ক। প্রথম ব্যক্তিটি ছিলেন অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস। অবশ্য প্রায় কাছাকাছি সময়েই এই মাইলফলকটি অতিক্রম করেছিলেন দুজনই।

স্পেসএক্স ও টেসলার মালিক ইলন মাস্ক ২০২০ সালে প্রথম শীর্ষ ধনীর খেতাব অর্জন করেন। তখন হু হু করে টেসলা মোটরের শেয়ারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ইলনের মোট সম্পদের পরিমাণ বেড়ে হয়েছিল ১২০ বিলিয়ন ডলার বা ১২ হাজার ৭৯০ কোটি ডলার। পরের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালে ২০০ বিলিয়ন ডলার বা ২০ হাজার কোটি ডলার। করোনা মহামারির সময়ও ফুলে ফেঁপে ওঠে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান অ্যামাজনের মালিক জেফ বেজোসের সম্পদ। এ সময় তিনি ২০০ বিলিয়ন বা ২০ হাজার কোটি ডলার সম্পদ অর্জনের মাইলফলক অতিক্রম করেন। তবে ঠিক তার ঘাড়ের ওপরই নিঃশ্বাস ফেলছিলেন টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক।

বৈদ্যুতিক গাড়ির জগতে প্রায় একচেটিয়া রাজত্ব করায় তরতর করে বাড়ছিল টেসলার শেয়ারের দর। যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল ইলন মাস্কের সম্পদের পরিমাণও। এরপর সবকিছু ভালোভোবে চললেও ২০২২ সালের মাস্কের ছন্দপতন শুরু হয়। হঠাৎ করে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাইক্রোব্লগিং সাইট টুইটার কেনার হুজুগে মেতে ওঠেন তিনি। শেষ পর্যন্ত নানা বিতর্ক ও কান্ডকারখানার পর ৪৪ বিলিয়ন ডলারে টুইটারকে বগলদাবাও করতে সক্ষম হন এই খ্যাপাটে ধনী। কিন্তু টুইটারকে কিনতে পারলেও একই সময় পকেট ফাঁকা হতে থাকে ইলন মাস্কের। অত্যন্ত দ্রুতগতিতে সম্পদ হারাতে থাকেন তিনি। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর, এই দুই বছরে ইলন মাস্ক ২০০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি মূল্যের সম্পদ খুইয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ।

অবশ্য মাস্কের দ্রুত সম্পদ অর্জন ও তা খুইয়ে বসার পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান তার পরিচালনায় চলা বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি টেসলার। প্রতিষ্ঠানটির শেয়ারের দর পতনের সঙ্গে সঙ্গেই কমতে থাকে মাস্কের সম্পদের পাহাড়। টুইটার কেনার ৪৪ বিলিয়ন ডলার জোগান দিতে বেঁচে দেন টেসলায় থাকা নিজের অনেকটা শেয়ার। আর ঠিক তখনই হুড়মুড় করে পড়তে শুরু করে টেসলার দাম। শুধু ২০২২ সালেই ৬৫ শতাংশ দর হারিয়েছে টেসলা। বর্তমানে পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে টেসলার শেয়ার আর ইলন মাস্কের সবচেয়ে দামি সম্পদ নয়, বরং মহাকাশ পর্যটন সংস্থা স্পেস এক্সপ্লোরেশন টেকনোলজির ৪৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারের শেয়ারই তার সম্পদের প্রধান উৎস। বর্তমানে টেসলায় ৪৪ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার রয়েছে মাস্কের। অল্প সময়েই ২০ হাজার কোটি ডলারের সম্পদ হারানোর অনন্য রেকর্ডের পরও খুব একটা হেলদোল নেই ইলন মাস্কের।  আছেন আগের মেজাজেই।

সর্বশেষ খবর