২২ জানুয়ারি, ২০১৬ ১৩:৩৯

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য ‌'বিশেষ যন্ত্র' আবিষ্কার

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য ‌'বিশেষ যন্ত্র' আবিষ্কার

ডিভাইস আবিষ্কারক দল

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী তরুণ উদ্ভাবক সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল।  ড্রোন, দেশীয় প্রযুক্তিতে লেজার কন্ট্রোল, ট্রাকিং ডিভাইস উদ্ভাবন করে ইতোমধ্যে সাড়া ফেলেছেন দেশব্যাপী। এছাড়াও তৈরি করেছেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের পথচলার জন্য দৃষ্টিসহায়ক যন্ত্র। সম্প্রতি মেট্রোপলিটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক বিভাগের ইনোভেশন ল্যাবের একদল শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর প্রচষ্টোয় তার দল তৈরী করেছে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য সহায়ক ‌'লো কস্ট ওয়্যারলেস ইলেকট্রনিক ব্রেইল রিডার' যা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীরা যে ব্রেইল বই পড়ে অভ্যন্ত তার ডিজিটাল রূপ।

প্রজেক্টের প্রধান সমন্বয়ক সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল এবং সহ-সমন্বয়ক রবি কর্মকার সিলেট মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক। এছাড়া দলের অন্য সদস্যরা হলেন একই প্রতিষ্ঠানের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী আখলাকউজ্জামান আশিক এবং প্রণব কর্মকার।
গবেষক দল জানান, ব্রেইল প্রিন্টার দিয়ে বিশেষ ধরনের বই ছাপিয়ে দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের পড়ার ব্যাবস্থা অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছে যা ব্যয়বহুল এবং প্রিন্ট না করে পড়া যায় না। পরবর্তীতে রিফ্রেশেবল  ব্রেইল ডিভাইস বিভিন্নভাবে তৈরি হয়েছে যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং আমাদের দেশে পাওয়া যায় না। এসব বিষয় বিবেচনা করে আমরা এটি তৈরি করেছি।  ডিভাইসটির দুটি রূপ রয়েছে তা হল হার্ডওয়্যার এবং একটি মোবাইল অ্যাপস। ডিভাইসটি কম্পিউটার অথবা মোবাইলের সাথে যোগাযোগ করে টেক্স ফাইলকে ব্রেইল পদ্ধতিতে কনভার্ট করে একটা যানি্ত্রক ব্যাবস্থার মাধ্যামে হুবহু ট্রেডিসনাল ব্রেইল সিকোয়েন্সের মত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের হাতে অনুভূতি সৃষ্টি করে যার ফলে ডিভাইসটি ব্যাবহার করে পড়াশোনার জন্য নতুন করে ব্রেইল শিখতে হবে না। ডিভাইসটি যেহেতু মোবাইল ফোনের যোগাযোগ করতে পারে সেহেতু প্রতিবন্ধীদের  স্কুলে এটি সহজেই ব্যাবহার করা যাবে। এতে করে বই প্রিন্ট না করেই তারা বইটি পড়তে পারবে।  
গবেষক দলের প্রধান সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল বলেন, ‌'ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার আমাকে এ ডিভাইসের আইডিয়া এবং দিকনির্দেশনা দেন। পরবর্তীতে আমি আমার ছাত্রদের সাথে কাজ শুরু করি। ডিভাইসের হার্ডওয়্যার অংশটা বানোনো খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল কারণ আমরা প্রতিটি ডটের দূরত্ব অরিজিনাল ব্রেইল সিকোয়েন্সে রাখতে চেয়েছিলাম।  অনেক উপায়ে চেষ্টা করার পর এবং দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের  সাহায্য পরীক্ষা করার পর আমরা সফলতা পাই। এখন আমরা ডিভাইসটিকে আরো উন্নত করার চেষ্টা করছি। পেনড্রাইভ এবং মেমোরিকার্ড থেকে সরাসরি বই পড়ার ব্যাবস্থা অল্প কিছুদিনের মধ্যে হয়ে যাবে তখন মোবাইল অ্যাপস বা কম্পিউটার  ছাড়াও কাজ করতে পারবে। তাছাড়া ডিভাইসটি ব্রেইল পড়ার পাশাপাশি লিখাও যাবে। আরও কিছু ফিচার যুক্ত হবে যা আমি এখন বলতে চাচ্ছি না।'
 সৈয়দ রেজওয়ানুল হক নাবিল আরো জানান, ডিভাইসটি তৈরিতে খরচ হয়েছে মাত্র ৩০০০ টাকা। ইন্টারন্যাশনাল একটি জার্নালে ডিভাইসটি নিয়ে একটি সায়েন্টেফিক পেপার প্রকাশিত হয়েছে। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের পড়ালেখায় ডিভাইসটি কাজে লাগলেই আমাদের কাজ সফল হবে এবং আমরা ডিভাইসের ডিজাইন ওপেন সোর্স করে দিব যার ফলে সবাই এটার উন্নয়নে কাজ করতে পারবেন।


বিডি-প্রতিদিন/২২ জানুয়ারি ২০১৬/শরীফ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর