বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও হলগুলোতে গত ১৫ বছরে যেসব নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে ৭৮ শতাংশ শিক্ষার্থীকে রাজনৈতিক ট্যাগ ব্যবহার করে নির্যাতন করা হয়েছে। এ ছাড়া ১৪ শতাংশ শিক্ষার্থী ছাত্রশিবির ও ২ শতাংশ শিক্ষার্থী ছাত্রদলের রাজনীতি করার কারণে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিগত সরকারের আমলে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ না করা, রাতে হলে গেস্টরুমের মিটিংয়ে অনুপস্থিত থাকা, জ্যেষ্ঠ নেতাদের যথেষ্ট সম্মান-সমীহ না করাসহ নানা কারণে এসব নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ‘সোচ্চার-টর্চার ওয়াচডগ বাংলাদেশ’। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্যাতিত ৫০ জনের সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে সংগঠনটি। সোমবার রাতে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্যাতনের শিকার ২৬ শতাংশ শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের, ১৮ শতাংশ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এবং ১৬ শতাংশ বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের। এ ছাড়াও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় এবং এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটিতেও নির্যাতনের ঘটনা রয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, নির্যাতনের সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে ২০১৭ সালে। মাস হিসেবে সবচেয়ে বেশি নির্যাতন করা হয়েছে আগস্ট মাসে। ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকিব বলেন, ছাত্র নির্যাতনের ঘটনার ইতিহাস অনেক দীর্ঘ। স্বাধীনতার আগে ও পরে হয়েছে। এটার সঙ্গে মূল রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। ৮০ ও ৯০ দশকে ছিল ছাত্র সংঘর্ষ। কিন্তু গত ১৫ বছরের ঘটনাকে ছাত্র সংঘর্ষ বলা যায় না, ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য রাখেন, বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল হাসিব চোধুরী, আইন ও শালিস কেন্দ্রের সাবেক নির্বাহী পরিচালক নূর খান লিটন, অধিকারের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. সি আর আবরার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর শেহরিন আমিন ভুঁইয়া, মানবাধিকার আইনজীবী ব্যারিস্টার শাইখ মাহদি, আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ প্রমুখ।