রাজবাড়ী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে ১৯৯৩ সালে। ২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে কিছুদিন চালু ছিল টার্মিনালটি। পরবর্তীতে বন্ধ হয়ে যায় এটি। এরপর আর চালু করা সম্ভব হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, পৌরসভার কাছ থেকে টার্মিনালের কথা বলে ইজারা নিয়ে গ্যারেজ হিসেবে ব্যবহার করছেন পরিবহন মালিকরা। জেলা পরিষদ থেকে চুক্তি অনুযায়ী পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ইজারা দিয়েছে। আরও অভিযোগ রয়েছে, জেলা পরিষদকে টাকা দিচ্ছে না পৌর কর্তৃপক্ষ। জানা গেছে, ১৯৯২-৯৩ অর্থবছরে ১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে শহর থেকে ২ কিলোমিটার দূরে পৌরসভার শ্রীপুর এলাকায় টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়। ২০০০ সালে এটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর প্রভাবশালীদের কব্জায় চলে যায় টার্মিনাল। ২০০৭ সালে তৎকালীন প্রশাসন টার্মিনালটি চালুর উদ্যোগ নেয়। যাত্রীদের সুবিধার জন্য রাজবাড়ীর মুরগির ফার্ম এলাকায় একটি বাসস্টপেজ দেওয়া হয়। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আবার বন্ধ হয়ে টার্মিনাল থেকে যাত্রীবাহী বাসছাড়া।
গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, পরিত্যক্ত টার্মিনাল ভবনের কক্ষগুলোর দরজা-জানালা ভেঙে গেছে। পলেস্তারা খসে যাচ্ছে। টার্মিনালের তিন পাশে ৭০টি দোকান রয়েছে। এর ভিতরে ময়লার ভাগাড়। আগাছায় ভরে গেছে টার্মিনালের বেশির ভাগ এলাকা। বেশ কিছু দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক দোকান পরিবহনের যন্ত্রাংশ বিক্রি করে। কয়েকটি রেস্তোরাঁ ও মুদি দোকান রয়েছে। টার্মিনালের সামনে জমে আছে হাঁটু পানি।
বাস চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টার্মিনালটি মালিক সমিতির নেতাদের কাছে জিম্মি। এখানে বসার জায়গা নেই। চারপাশে জমে আছে ময়লা। টয়লেট নষ্ট হয়ে গেছে। এখান থেকে যাত্রী ওঠানামা করে না। নেতারা শহরের অস্থায়ী টার্মিনাল নির্মাণ করেছেন। এ কারণে শহরে যানজট লেগে থাকছে। শুধু নেতাদের উদাসীনতায় টার্মিনাল থেকে যাত্রী ওঠানামা বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারের কাছে বাস টার্মিনালটি চালুর প্রত্যাশা চালক ও শ্রমিকদের। রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র আলমগীর শেখ তিতু বলেন, রাজবাড়ী বাস টার্মিনালটি শহর থেকে দূরে। যাত্রীরা সেখানে যেতে চায় না। এটি সংস্কার করা প্রয়োজন। নতুন করে টার্মিনালটি সংস্কার করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম শফিকুল মোর্শেদ আরুজ বলেন, পৌরসভা টার্মিনালটি জেলা পরিষদের কাছে ইজারা নিয়েছেন। এটি সংস্কার করা প্রয়োজন।