ছয় বছরেও শেষ হয়নি জয়পুরহাট শহরের আড়াই কিলোমিটার চার লেন সড়কের কাজ। চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে শহরবাসী। কয়েক বছর ধরে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে তারা। দুই পাশের পাকা ভবন ভেঙে জমি অধিগ্রহণ করা হলেও পুরনো ড্রেনসহ রাবিশ ও মাটি অপসারণ না হওয়ায় সড়কটি সরু হয়ে গেছে। প্রতিদিন সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। খানাখন্দে ভরা এ সড়কে বর্ষায় চলাচল দায় হয়ে পড়েছে। জেলা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জয়পুরহাট শহরের হারাইল থেকে রেলঘুমন্টি পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার সড়ক ৬০ ফুট প্রশস্ত করে চার লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। ২০১৭ সালে একনেকের বৈঠকে প্রকল্প অনুমোদন পাওয়ার পর দরপত্রের মাধ্যমে কাজ পায় নাভানা কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চুক্তি মোতাবেক কাজটি দেড় বছরের মধ্যে সম্পন্ন করতে ২০১৮ সালের ২৭ জুন তাদের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। চুক্তিমতে কাজ না করায় ২০২০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা করে সড়ক বিভাগ নাভানা কনস্ট্রাকশনের চুক্তি বাতিল করে। পরবর্তীতে রিলায়েন্স বিল্ডার্স লিমিটেড ও হাসান টেকনো নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জয়েন ভেঞ্চারে কাজের দায়িত্ব পায়। কার্যাদেশ দেওয়া হয় ২০২২ সালের ২০ জুলাই। ব্যয় ধরা হয় প্রায় ২৫ কোটি টাকা। দ্বিতীয় দফায় সময় বাড়িয়ে চলতি বছরের ৩০ জুনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা। কাজ না হওয়ায় তৃতীয় বার সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। শহরের রিকশাচালক আবদুস সোবহান বলেন, বেহাল রাস্তার কারণে তার গাড়ি প্রায়ই মেরামত করা লাগে। এতে বাড়তি খরচ হয়। এভাবে কি চলা যায়। সড়কটা কি ঠিক হবে না? অটোচালক হারুনুর রশিদ বলেন, পেটের দায়ে আমরা অটো চালাই। সড়কের যে অবস্থা তাতে অটো চালাতে গিয়ে লোকসানই হচ্ছে বেশি। ভাঙাচুরা সড়কে অটো প্রায়ই বিকল হচ্ছে। ছোটখাটো পার্টস ভেঙে যাচ্ছে। বাগিচাপাড়া মহল্লার গৃহবধূ রাহেলা বেগম বলেন, ‘ভাঙা সড়কে হেঁটে যাওয়াও দায়। প্রতিদিন ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়। বৃষ্টি হলে চলাচলই করা যায় না।’ পাঁচুর মোড়ের আবদুল হাকিম বলেন, ‘একটু বৃষ্টিতে সড়কে হাঁটু পানি জমে। কয়েক বছর থেকে এ অবস্থা চললেও দেখার কেউ নেই। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিয়ায়েন্স বিল্ডার্স লিমিটেডের প্রকল্প ব্যবস্থাপক সাজ্জাদ কাদির খান বলেন, ড্রেন নির্মাণ সম্পন্ন না হওয়ায় জুনের মধ্যে কাজটি শেষ করা যায়নি। সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে বর্ষা শেষ হওয়া মাত্র সড়কের কাজ শুরু করা হবে’। জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘তৃতীয় দফায় ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানোর জন্য কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন পাঠানো হয়েছে।’