প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে নেত্রকোনার পাহাড়ি ও সমতলের কৃষকরা। বেশ ক’বছর ধরেই পাহাড়ি ঢলে কৃষকের বীজতলা ক্ষতি হচ্ছে। এবারও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কয়েক দফা বন্যা মোকাবিলা করেছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। তার ওপর কৃষি উপকরণ সারসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি তো রয়েছেই। সব কিছু মোকাবিলা করে রোপা আমনের আবাদ করেন চাষিরা। তবে ক্ষতি পুষিয়ে উঠবে কিনা এ নিয়ে কিছুটা শঙ্কায়। অন্যদিকে রোপা আমনে খরচ কম হওয়ায় এর আবাদ দিন দিন বাড়ছে বলে দাবি কৃষি বিভাগের।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর ১ লাখ ৩৫ হাজার ১৪০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৩২০ হেক্টর। গত বছর ছিল ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯০ হেক্টর। গত ৫ বছরে রোপা আমনের অনাবাদি সাড়ে ৮ হাজার হেক্টর জমি আবাদের আওতায় এসেছে। যদিও কৃষকদের দাবি প্রতিবছর ভাতের চাহিদা মেটাতেই তারা চাষাবাদ করে থাকেন। এদিকে সার ও কৃষি উপকরণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানোর দাবি করে কলমাকান্দা অঞ্চলের কৃষক রতন মিয়া, এরশাদ মিয়াসহ প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকরা বলেন কোনোবারই ধানের দাম বাড়ানো হয় না। যে সরকারই ক্ষমতায় থাকুক না কেন তাদের কিছু যায় আসে না। কারণ তারা খাদ্য জোগান দিলেও তাদের দিকে ভাবে না কেউই। সার ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে সব ব্যবসায়ীর দিকেই সরকারের নজর থাকে। সরেজমিন দেখা গেছে, পাহাড় কিংবা সমতল জেলার সর্বত্র রোপণ করা হয়েছে রোপা আমন। কোথাও কোথাও ঢলের পানি কয়েকবার আসায় চারা রোপণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে কলমাকান্দাসহ বেশ কয়েকটি হাওর উপজেলায়। আবার কোথাও কোথাও চলছে পরিচর্যার কাজ। জমিতে দেওয়া হচ্ছে সার। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (খামারবাড়ি) উপপরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, বন্যার পানি বারবার এলেও দ্রুত চলে যাওয়ায় ক্ষতি হয়নি তেমন। পর্যাপ্ত সার মজুদ থাকার কথা জানিয়ে তিনি বলেন- নির্ধারিত মূল্যের বাইরে কেউ বেশি রাখলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।