জামায়াতে ইসলামীর আমির ডাঃ শফিকুর রহমান বলেছেন, জালিমদের হাত থেকে আল্লাহ বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে মুক্তি দিয়েছেন। বিগত সরকারের অত্যাচার নির্যাতনের কথা তুলে ধরে বলেন, আমাদের শীর্ষ দায়িত্বশীল ১১ জন নেতাকে বুক থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে। মিথ্যা অভিযোগ, সাজানো সাক্ষী, বানানো আদালতে হত্যা করা হয়েছে। বিচার পাবো কিনা জানি না। তবে বিচারের জন্য লড়াই করে যাবো। যারা দেশে ছেড়ে পালিয়ে গেছে সকলকে দেশে ফিরিয়ে এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। আগামী দিনে জামায়াত রাষ্ট্রক্ষমতায় আসলে সকল বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে এবং নারীদের সম্মানের সাথে সমাজ উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যারা সিন্ডিকেট করে বাজারে দাম বাড়িয়েছিলো এখনও তারা সিন্ডিকেট পরিচালনা করছে বলে অভিযোগ করেন ডা: শফিকুর রহমান। বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহ শহরের উজির আলী স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে জেলা জামায়াত আয়োজিত বিশাল এক কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
কর্মী সমাবেশে জেলা জামায়াতের আমির আলী আজম মোঃ আবু বক্করের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় জামায়াতের নির্বাহী পরিষদের সদস্য মোঃ মোবারক হুসাইন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঝিনাইদহ শহর আমির হারুন উর রশীদ, জেলা শিবিরের সভাপতি মনিরুজ্জামান মিঠু,ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শিবিরের সভাপতি হাফেজ আবু মুসাসহ আঞ্চলিক ও জেলা-উপজেলা নেতৃবৃন্দ। কর্মীসভা পরিচালনা করেন ঝিনাইদহ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আব্দুল আওয়াল।
ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে চায়। সেখানে সমাজে উঁচু, নিচু, ছোট-বড় কোন কিছু থাকবে না। সাবাইকে সমান চোখে দেখতে চাই।
তিনি আরো বলেন, ২০১৭ সালে আমি ঝিনাইদহে এসেছিলাম ২টি শহীদ পরিবারের সাথে দেখা করতে। কিন্তু পরিস্থিতি এত ভয়াবহ ছিল যে একটি বাসায় ১৫ মিনিট পর্যন্ত ছিলাম। আরেকটা বাসায় ঢোকার সাথে সাথে নোটিশ পেলাম এই বাসা থেকে এখনি বের হয়ে চলে যেতে হবে। আমি কোন চোর ছিলাম না। আমি কোন ডাকাত ছিলাম। আমি কোন খুনি ছিলাম না। রাহাজানির নায়ক ছিলাম না। আমি দখলদার বাহিনীর নেতা ছিলাম না। চাঁদাবাজাদের গডফাদার ছিলাম না। আমার মত সাধারণ একজন নাগরিককে চলে যাওয়ার নোটিশ কেন। কয়েক মিনিটের অবস্থা যদি এই হয়। ২০০৯ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঝিনাইদহসহ বাংলাদেশের অবস্থা কি ছিল। এখান থেকে আমরা বুঝতে পারি। এ বাংলাদেশকে সোনার বাংলার কথা বলে তারা শোষন বাংলায় পরিণত করেছে। ঘরে ঘরে লাশ, পথে প্রান্তরে ছুপ ছুপ রক্ত, তারা জাতিকে উপহার দিয়েছিল। আমি সেই শহীদের পরিবারের সম্মান জানাতে এসেছি। মন বলে শহীদের প্রত্যেক বাবাকে যদি চুম্বন দিতে পারতাম। আজকের এই সমাবেশে উপস্থিত আছেন শহীদ ইবনুল পারভেজের পিতা মাস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন সাহেব। তিনি যখন হাতটি বাড়িয়ে দিচ্ছেন তখন আমি নিজে ধরে রাখতে পারিনি।
ডাঃ শফিকুর রহমান বলেন, অন্যায়ভাবে আমাদের দলের নিবন্ধন বাতিল ও প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ৪ দিনের মাথায় আল্লাহতালা তাদের নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন। আমাদের জেলার পাশে সাতক্ষীরায় আমাদের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএ