মঙ্গলবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাতাসে নবান্নের ঘ্রাণ

শাহজাদা মিয়া আজাদ, রংপুর

বাতাসে নবান্নের ঘ্রাণ

‘এই হেমন্তে কাটা হবে ধান; আবার শূন্য গোলায় ডাকবে ফসলের বান’—সুকান্তের কবিতার এই পংক্তি হেমন্তের বাংলার চিরচেনা রূপ। ‘নবান্ন’ হচ্ছে হেমন্তের প্রাণ। যদিও বাঙালির ‘নবান্নের’ উৎসব শুরু হয় পয়লা অগ্রহায়ণ থেকেই। তবে এখন আর অগ্রহায়ণের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় না। আগাম জাতের ধান কাটা-মাড়াই শুরু হওয়ায় হেমন্ত ঋতু শুরুর আগে থেকেই নবান্নের ঘ্রাণে মুখরিত হয়ে উঠেছে রংপুরের বাতাস। 

জেলার বিভিন্ন এলাকা সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, আমন খেতে হালকা শীতল বাতাসে দোল খাচ্ছে ধানের শীষ। কোনো খেতে ধানের শীষ বের হয়েছে। আবার কোনো কোনো খেতে ধানের শীষে কাঁচা-সোনা রং ধরেছে। ছড়াচ্ছে আমনের ঘ্রাণ। কৃষক ও কৃষি বিভাগ বলছে, ১৫-২০ দিন পরই পুরোদমে ধান কাটা-মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়বে কৃষক-কৃষাণীরা। তবে কৃষকরা আগাম জাতের আমন ধান আবাদ করায় মধ্য আশ্বিন থেকেই ধান কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। জেলা  কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শ ম আশারাফ আলী বলেন, নবান্ন উৎসব পালনের জন্য এখন আর পয়লা অগ্রহায়ণের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। আশ্বিন-কার্তিকের অভাব দূর করতে রংপুরের কৃষকরা ব্রি-৩৩, বিনা-৭, বিনা-১১, ধানিগোল্ড, টিয়া ও ময়না জাতের আমন ধান আগাম আবাদ করেন। এসব ধান মধ্য আশ্বিন থেকে কাটা শুরু হয়েছে। ফলে নবান্নের ঘ্রাণ আগাম ছড়িয়ে পড়েছে।

গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘণ্টা ইউনিয়নের কিসামত হাবু গ্রামের স্কুল শিক্ষক সাফিয়ার রহমান বলেন, এক একর জমিতে বিনা-১১ জাতের আমন ধান আবাদ করেছি। সে ধান কেটে ঘরে তোলা হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। নতুন চালের ভাতও খাওয়া শুরু করেছি। পীরগাছা উপজেলার পারুল ইউনিয়নের বিরাহীম গ্রামের কৃষক জুলফিকার আলী বলেন, তিনি ২ একর জমিতে ব্রি-৩৩ জাতের ধান চাষ করেছেন।

ধানে পাক ধরেছে। ৪-৫ দিন পর ধান কেটে ঘরে তোলার পর নবান্ন পালন করবেন। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ১ লাখ ৬২ হাজার ৪১৯ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ১০ হাজার ৩৮ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের ধান চাষ করা হয়। গত সোমবার পর্যন্ত ৫ হাজার ২০০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর