জুমা আদায় শেষে মসজিদ থেকে ফেরার পথে ঢাকার রামপুরায় গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তালতলী উপজেলার মৌপাড়া গ্রামের অটোরিকশাচালক আমির তালুকদার। তার নিহতের ঘটনায় তিন সন্তান নিয়ে মহাবিপাকে পড়েছেন স্ত্রী মোসাম্মৎ আন্নি আক্তার। কর্মক্ষম স্বামীকে হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তিনি। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার আর কিছুই রইল না। স্বামী গুলিতে মারা না গিয়ে আমি মারা গেলে অনেক ভালো হতো।’ এখন আমার তিন সন্তানকে কে ভরণপোষণ দেবে? আমি কীভাবে তাদের লালনপালন করব, ভেবে পাচ্ছি না? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সন্তানদের ভরণপোষণ ও লালনপালনের জন্য আর্থিক সহায়তার দাবি জানান এ বিধবা।
জানা গেছে, তালতলী উপজেলার মৌপাড়া গ্রামের মৃত আলতাফ তালুকদারের ছেলে আমির হোসেন তালুকদার ছোটবেলায় কাজের সন্ধানে ঢাকায় যান। ২০১৬ সালে মুন্সীগঞ্জের মেয়ে আন্নি আক্তারকে বিয়ে করেন। ঢাকার রামপুরা টিভি সেন্টারের পাশে একটি ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করতেন। আরমান (৬), আরিয়ান (৪) ও আমেনা (১) নামের তিনটি সন্তান রয়েছে। ১৯ জুলাই জুমা আদায় করতে রামপুরা মোল্লা টাওয়ার সংলগ্ন মসজিদে যান। নামাজ আদায় শেষে বাসায় ফিরছিলেন আমির তালুকদার। ওই সময় কোটা আন্দোলনকারী ছাত্র ও পুলিশের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা চলছিল। এ সময় তিনটি গুলি এসে তার শরীরে বিদ্ধ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। পরে স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই গ্রামের বাড়ি তালতলী উপজেলার ছোটবগী ইউনিয়নের মৌপাড়া গ্রামে বাবার কবরের পাশে দাফন করেন। নিহতের চাচা জাকির হোসেন তালুকদার বলেন, গত ১৯ জুলাই ঢাকায় আন্দোলন চলাকালে আমার ভাতিজা আমির হোসেন তালুকদার গুলিতে নিহত হন। আমির হোসেন স্ত্রী ও তিনটি শিশু সন্তান রেখে গেছেন। তার ভরণপোষণের কেউ রইল না। তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, আমির হোসেনের বাড়ি পরিদর্শন করেছি। তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।