চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীতে মা ইলিশ রক্ষায় অভিযানকারী দলের ওপর দুর্বৃত্তদের হামলায় নৌপুলিশ ও মৎস্য বিভাগের অন্তত ১০ সদস্য আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাতে মেঘনার আমিরাবাদে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাতে অজ্ঞাতপরিচয় ৮০ থেকে ৯০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন মৎস্য কার্যালয়ের ক্ষেত্রসহকারী আতিকুর রহমান।
আহতরা হলেন উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের ক্ষেত্রসহকারী মোহাম্মদ আতিকুর রহমান ও মোশারফ হোসেন, স্পিডবোটের চালক রনি মিয়া, নৌকার মাঝি আলী আকবর, মাঝির সহকারী আবদুল ছাত্তার ও মো. কাউছার, মোহনপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির সদস্য ইমরান হোসেন, মো. রাসেল, কামাল হোসেন ও জসিম উদ্দিন। গতকাল রাতে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। উপজেলা মৎস্য কার্যালয়, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশসূত্র জানান, গতকাল রাত ৮টার দিকে মেঘনার আমিরাবাদে মা ইলিশ রক্ষার অভিযান চালানোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। এ সময় স্পিডবোট ও একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ছিলেন মৎস্য কার্যালয়ের কয়েকজন কর্মচারী (ক্ষেত্রসহকারী) ও মোহনপুর নৌপুলিশ ফাঁড়ির কয়েকজন সদস্য। হঠাৎ সেখানে প্রায় ১০০ জেলেসহ একটি বড় ট্রলার আসে। তারা অতর্কিতভাবে বাঁশ, ইট ও চাপাতি নিয়ে ওই অভিযানকারী দলের ওপর হামলা চালান। এতে মোট ১০ জন গুরুতর আহত হন। তাদের চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে গেলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাস বলেন, ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শুরুর পর থেকে প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি করে ভিজিএফের চাল দেওয়া হয়। এর পরও তারা নিষেধাজ্ঞা ভেঙে মেঘনায় মাছ ধরছেন বা ধরার চেষ্টা করছেন এটি দুঃখজনক। হত্যার উদ্দেশ্যেই এসব অভিযানকারীর ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল হক বলেন, সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও মারধরের অভিযোগে মামলা করেছেন মৎস্য কার্যালয়ের ক্ষেত্রসহকারী মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল জানান, বরিশালে নিষেধাজ্ঞা না মেনে ইলিশ শিকার চলছে। সকাল ও সন্ধ্যায় নদীতীরবর্তী এলাকায় চলে ইলিশের বেচাকেনা। মেঘনা, কীর্তনখোলা, আড়িয়াল খাঁ, তেঁতুলিয়া ও কালাবদর নদে প্রতিদিন সবচেয়ে বেশি চলছে ইলিশ শিকার। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কপথে পুলিশি কঠোর অভিযান না থাকায় অবাধে ইলিশ পাচার হচ্ছে নগরীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। জানা গেছে, হিজলা, মুলাদী, মেহেন্দীগঞ্জ, সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ থেকে শিকার করা ইলিশ চরবাড়িয়া ইউনিয়নের তালতলী বাজারে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে কাভার্ড ভ্যান, মিনিট্রাক, মোটরসাইকেলসহ নানা যানবাহনে বরিশাল নগরীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার হচ্ছে। এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা রিপনকান্তি ঘোষ বলেন, নদী ও তীরে প্রতিদিন ছয়টি টিম দায়িত্ব পালন করছে। আটক ও জরিমানা চলছে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্পটে যাওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন তাঁরা। অভিযান সফল করতে আন্তরিকতার কোনো কমতি রাখছেন না। তার পরও একই সময়ে সব স্পট নিয়ন্ত্রণ করা কিছুটা কঠিন। ইলিশ অভিযানের সার্বিক বিষয়ে বরিশালের সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, অভিযান সফল করতে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, র্যাব, সেনাবাহিনী সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করছেন।