রংপুর জেলা বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার সকালে রংপুর শিক্ষা অঙ্গন উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।
ক্যাম্পেইনে বসুন্ধরা শুভসংঘ রংপুর জেলা শাখার সভাপতি ও রংপুর সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক মো. সাদাকাত হোসেন সভাপতিত্ব করেন।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা অঙ্গন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আয়শা সিদ্দিকা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মোসলেম উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও শিক্ষা অঙ্গন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মঞ্জুরুল আলম।
ক্যাম্পেইনে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তারা বলেন, তোমাদের জানা উচিত, আমরা যে সহজলভ্য পলিথিন ব্যবহার করি, তা বাস্তুসংস্থানের জন্য কতটা ক্ষতিকর। পলিথিন মাটিতে মিশে যেতে পারে না, এতে করে মাটির উর্বরতা হ্রাস পায়। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি সমতল ভূমিতে আবাদি জমি বিনষ্ট করে। এমন বিভিন্ন কারণে আমাদের প্রিয় ধরিত্রী তার স্বাভাবিক রূপ হারিয়েছে। তাই মানুষসহ অন্যান্য প্রাণীদের জীবনযাপন করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
এছাড়া, মানুষের নতুন নতুন রোগ-ব্যাধি হচ্ছে হয়, বিলুপ্ত হচ্ছে অনেক প্রাণী, যা আমাদের বাস্তুসংস্থানের জন্য ক্ষতিকর। তাই তোমাদের মাধ্যমে পলিথিন ব্যবহারের অপকারিতা সবার মাঝে তুলে ধরতে আমাদের এই প্রয়াস। ‘পলিথিন ব্যবহার করব না,পরিবেশবান্ধব বিকল্প ব্যবহার করব’— এটাই হোক আমাদের অঙ্গীকার। রংপুরে শ্যামাসুন্দরী খালটি পলিথিনে ভরে গেছে। তাই আমরা পলিথিন ব্যবহারের পর যেন তা পুড়িয়ে ফেলি।
প্লাস্টিক হচ্ছে কৃত্রিমভাবে তৈরি পলিমার, যা মূলত জীবাশ্ম জ্বালানি বা প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে রাসায়নিক উপায়ে তৈরি করা হয়। প্লাস্টিক সাধারণভাবে নমনীয়, যা সহজে বাঁকা করা যায়, ক্ষয়রোধী, দীর্ঘস্থায়ী ও কম দামি। এই সহজলভ্য প্লাস্টিক ব্যবহার করে আমরা আমাদের পরিবেশকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিয়েছি। আমরা নিত্যব্যবহার্য প্লাস্টিকের অধিকাংশই একবার ব্যবহার করে ফেলে দেই, যা জলজ প্রাণী, খাদ্য চেইন এবং মানবজাতির জন্য এক বিশাল সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
কারণ খাল, নালা, পুকুর, নদী হয়ে পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের সর্বশেষ আশ্রয়স্থল হলো সমুদ্র। প্লাস্টিক দূষণের কারণে সামুদ্রিক ও বন্যপ্রাণীসহ তাদের আবাসস্থল, জল, স্থল এবং সর্বোপরি মানবগোষ্ঠীর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
তারা বলেন, প্লাস্টিক দূষণ রোধে সচেতন নাগরিক হিসেবে আমাদের সম্মিলিতভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। এ জন্য দৈনন্দিন বাজারের ক্ষেত্রে একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিনের পরিবর্তে কাপড় অথবা পাটের ব্যাগ ব্যবহার করতে হবে। প্লাস্টিক বর্জনের ক্ষেত্রে নাগরিকদের সচেষ্ট হওয়া এবং যত্রতত্র প্লাস্টিক না ফেলে এর ব্যবহার ও ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ রংপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তানজিম হাসান, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রবি দাশ, অর্থ সম্পাদক সোহাগ কুমার দাশ ও বসুন্ধরা শুভসংঘ স্কুলের সমন্বয়ক গোলজার রহমানসহ অনেকে।
বিডি প্রতিদিন/কেএ