বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ তাদের ব্যাবসায়িক সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে দেশের সুবিধাবঞ্চিত জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে। শুভসংঘের মাধ্যমে তারা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ায়। শিক্ষকদের মেধা, মনন ও ত্যাগের স্বীকৃতি দিতে তৃণমূল পর্যায়ে সেরা শিক্ষক সম্মাননা প্রদানও তাদের একটি ভালো উদ্যোগ। এটি শিক্ষকদের আরো কর্মনিষ্ঠ করছে।
পাশাপাশি অন্যান্য শিক্ষকও উৎসাহিত হচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের সহপাঠ্যক্রম কার্যক্রমেও বসুন্ধরা গ্রুপ শুভসংঘের মাধ্যমে বিগত বছরগুলোতে কাজ করে যাচ্ছে। আমি তাদের অনেকগুলো বিতর্ক প্রতিযোগিতাও পর্যবেক্ষণ করেছি। বর্ষাকালে বন্যা পরিস্থিতিতে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ায়; আবার শীতকালে কম্বলসহ গরম কাপড় নিয়ে অসহায়দের মাঝে উষ্ণতা ছড়াতে বসুন্ধরা শুভসংঘ ছুটে যায় একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ে।
অসহায় ও সহায়-সম্বলহীন দম্পতির নবজাতক শিশুদের পাশেও থাকছে তারা। সামাজিক অগ্রগতি ও কল্যাণ ছাড়া দেশ তথা বৈশ্বিক উন্নতি সম্ভব নয়। এটি যেন বসুন্ধরা শুভসংঘের ব্রত। আমাদের দেশের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারী।
তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ছাড়া দেশের প্রকৃত উন্নয়ন সম্ভব নয়। এই ধারণা থেকে বসুন্ধরা গ্রুপ গ্রামীণ অসচ্ছল নারীদের আত্মকর্মসংস্থানের উদ্যোগ নিয়েছে। সুবিধাবঞ্চিত তরুণী ও নারীদের বাছাই করে তারা বিনা মূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। সফলভাবে প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর তাদের স্বাবলম্বী করতে বিনা মূল্যে সেলাই মেশিন তুলে দিচ্ছে। বাংলাদেশের অনেক জেলায় হাজার হাজার নারী এর মাধ্যমে আত্মকর্মসংস্থানের আওতায় এসেছে।
বসুন্ধরা গ্রুপের এই উদ্যোগটি সুদূরপ্রসারীই কেবল নয়, সুবিবেচনাপ্রসূতও। যদি শুধু প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো, তাহলে হয়তো পুঁজির অভাবে অনেক নারীর কর্মসংস্থান না-ও হতে পারত। আবার যদি কেবল সেলাই মেশিন দেওয়া হতো, তাহলে অনেকে হয়তো প্রশিক্ষণের অভাবে এর পুরো উপযোগিতা পেত না বা সাময়িক লাভের আশায় তা বিক্রি করে দিত। এতে তাদের অবস্থার কোনো পরিবর্তন না-ও হতে পারত। বসুন্ধরা গ্রুপ প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন উভয় প্রদান করে অসহায় নারীদের সত্যিকারের সহায়তা নিশ্চিত করেছে। কভিড পরিস্থিতিসহ দেশের যেকোনো দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় বসুন্ধরা গ্রুপ অসহায়দের পাশে থেকে উদাহরণ দাঁড় করিয়েছে। এসব মানবিক কর্মসূচি অন্যান্য শিল্প ও ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর জন্য অনুসরণীয়।