‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ নারীদের সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ সব ধরনের অর্জন উদ্যাপনের একটি বৈশ্বিক দিন। সেই সঙ্গে দিবসটি লৈঙ্গিক সমতার বিষয়টিও তুলে ধরে। নারীর প্রতি সম্মান ও সমানাধিকারের বার্তা জানাতে শনিবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বসুন্ধরা শুভসংঘ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। এবারের প্রতিপাদ্য ছিল ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’।
বসুন্ধরা শুভসংঘ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মো. আমিনুর রহমান বলেন, মানবসভ্যতা বিকাশে নারী ও পুরুষের সমান অবদান রয়েছে। নারী-পুরুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়ই গড়ে উঠেছে আমাদের সমাজ, সভ্যতা ও সংস্কৃতি। সৃষ্টিকর্তা নারী ও পুরুষকে সৃষ্টি করেছেন একে অপরের পরিপূরক হিসেবে। তাই নারী ও পুরুষ চিরকালের সার্থক সঙ্গী। যে সমাজের প্রায় অর্ধেক জনসংখ্যা নারী, সে সমাজে নারীকে উপেক্ষা করে কোনো উন্নতি সম্ভব নয়। তাদেরও সব কাজে সমান দায়িত্ব নিতে হবে। ইসলাম ধর্ম সমাজে নারীর মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে এবং শিক্ষার অধিকারসহ সকল অধিকার দান করেছে। তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম শুনিয়েছেন জাগরণের অমর মন্ত্রণা— ‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর’।
আলোচনা সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক রূহানী খাতুন বলেন, পানি ছাড়া যেমন জীবন অচল, তেমনই নারী ছাড়া অচল একটা সভ্যতা ও সমাজ। কখনও মাতৃরূপে, কখনও বোন হয়ে, কখনও বন্ধু বা কখনও প্রেয়সী হয়ে বারবার নারীরা জীবন সমৃদ্ধ করে তোলে। ইংরেজ কবি ও নাট্যকার শেকসপিয়ার নারীর মহিমা ও আদর্শ তুলে ধরে বলেছেন— নারী হচ্ছে গ্রন্থ, শিল্প এবং একাডেমি, সমগ্র পৃথিবী যা ধারণ ও লালন করে।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রতিনিধি শারমিন আক্তার, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল শাখার প্রতিনিধি চৈতি অধিকারী, রোকেয়া হল শাখার প্রতিনিধি শিরিন আক্তার ও সাদিয়া আক্তার, শামসুন্নাহার হল শাখার প্রতিনিধি অনামিকা বর্মন, সুফিয়া কামাল হল শাখার প্রতিনিধি প্রিয়া আক্তার, ইডেন কলেজ শাখার প্রতিনিধি সুমাইয়া আক্তার, গভ. কলেজ অফ অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্স শাখার সাবেক সভাপতি মুসলেমিনা সুলতানা, বেগম বদরুন্নেসা কলেজ শাখার প্রতিনিধি সানজিদা শায়রিন রিপা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সাদিয়া আক্তার, অনামিকা সরকার, ঊন মারমা, হাসি আক্তার, মরিয়ম, সুভী, নির্জনা, ফারিয়া, রোজিনা, সাদিয়া, প্রিয়াংকা, বৃষ্টি, আয়েশা, শামীমা প্রমুখ।
আলোচনা সভা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোতাহার হোসেন ভবনের পাশ দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার প্রদক্ষিণ করে জগন্নাথ হলের পাশে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় শুভসংঘের বন্ধুরা নারী কল্যাণে সচেতনতামূলক বিভিন্ন লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল