''কী যাতনা বিষে, বুঝিবে সে কিসে, কভু আশীবিষে দংশেনি যারে।'' এই উক্তিটি তন্ময় ভৌমিকের জন্য যেন পুরোপুরি সত্য। যার দুঃখ সেই জানে। সুখে থাকা মানুষের কাছে গল্পের মতো মনে হয় বেদনার রং কতটা নীল। তন্ময়, অসুস্থ, বাকশক্তিহীন, নিশ্চল আশুতোষ ভৌমিকের ছেলে। তার বসতবাড়ি খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কপিলমুনি বাজারে। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের ছাত্র ছিল। পড়ালেখা শেষ পর্যায়ে চা দোকানদার বাবা ব্রেইন স্ট্রোক করে নিশ্চল হয়ে পড়ে। বাবার চিকিৎসা, অসুস্থ মা, ছোট বোনের লেখাপড়া ও সংসারের হাল ধরতে বাধ্য হয়ে চায়ের দোকানে বসতে হয়। কিন্তু নিষ্ঠুর বাস্তবতায় ভাগ্যের কাছে প্রতিনিয়ত হেরে যাচ্ছে। হিমশিম খেতে হচ্ছে বাবার চিকিৎসা খরচ বহন করতে। এমতাবস্থায় বিষয়টি জানতে পেরে আজ শুক্রবার ( ১৮ জুলাই) বসুন্ধরা শুভসংঘ তার কাছে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। তার হাতে তুলে দেয় তার বাবার জন্য এক মাসের ঔষধ ও চিকিৎসা সামগ্রী। ঔষধ ও চিকিৎসা সামগ্রী পেয়ে তন্ময় আবেগ আপ্লুত হয়ে কান্না বিজড়িত কন্ঠে বলেন, গতকাল বাবার ওষুধ ফুরিয়ে গেছে। আজ কি দিয়ে কিনব জানিনা। একদিন ওষুধ না খেলে বাবার অসুস্থতা বেড়ে যায়। সামনের মাথায় দেখা যায় না কষ্ট। ছেলে হয়ে পিতার ওষুধ না কিনতে পারলে যে কষ্ট তা বোঝানো যায় না। বসুন্ধরা শুভসংঘ যে উপকার করলো তা আমি কোনদিন শোধ করতে পারবো না।
এই মহতী উদ্যোগে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পাইকগাছা সরকারি বয়েজ স্কুলের প্রথিতযশা শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান রাজু। তিনি বলেন, বসুন্ধরা শুভসংঘের মানবিক কাজগুলো সম্পর্কে আমি জানি। বসুন্ধরা শুভসংঘ এভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিক অসহায় মানুষের প্রতি। পাশাপাশি আমিও ব্যক্তিগত ভাবে চেষ্টা করবো তন্ময়ের জন্য কিছু টিউশনি জোগাড় করে দিয়ে। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রভাষক সমীর রায়। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা জেলা সভাপতি বিপুল রায় চৌধুরী। তিনি খুলনা থেকে এসে সার্বিক বিষয় তদারকি করেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সভাপতি কার্তিক রুদ্র, স্বাস্থ্য ও মানব উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক নূর ইসলাম, ক্রীড়া সম্পাদক আবু হোসেন বাবু, সমাজ সেবক সহদেব মন্ডল, রহিতসহ আরও অনেকে।