প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পাঠ্যপুস্তকে অগণিত ভুল ও সাম্প্রদায়িক বিষয়াদির অন্তর্ভুক্তি সরকারের ধারাবাহিক সাফল্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ডুটা)। শুক্রবার ডুটা সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ও অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ প্রেরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ মন্তব্য করা হয়। এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে শিক্ষক উল্লেখ করা হয়, ১ জানুয়ারি বিলি করা নতুন পাঠ্যপুস্তকে রয়ে গেছে অসংখ্য ভুল। তাতে তথ্য বিকৃতির পাশাপাশি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বিভিন্ন বিতর্কিত ও অপ্রাসঙ্গিক বিষয়, যা সরকারের সাফল্যের ধারাবাহিকতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে যে বই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে, তা রচনা, সম্পাদনা ও পরিমার্জনায় শুধু দায়িত্বহীনতার পরিচয়ই প্রদান করা হয়নি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় লালিত অসাম্প্রদায়িক চেতনা-দর্শন এবং বাঙালির হাজার বছরব্যাপী বহমান ঐতিহ্যকে কলঙ্কিত করা হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষের বীজবপন ও নারী-পুরুষের ভেদ-বৈষম্য সৃষ্টির অপপ্রয়াস নেয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনা অসাম্প্রদায়িক ও বিজ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার অন্তরায় হিসেবে দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি আমরা এও মনে করি, সরকারের চলমান অর্জনকে ব্যাহত এবং অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে একটি প্রতিক্রিয়াশীল স্বার্থান্বেষী মহল পরিকল্পিতভাবে পাঠ্যপুস্তকে তথ্যবিকৃতির আশ্রয় নিয়েছে। এ ঘৃণ্য চক্রান্তকে প্রতিহত করতে দ্রুত সময়ে তদন্তসাপেক্ষে এর হোতাদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এসময় শিক্ষক নেতৃবৃন্দ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননের বিকাশসহ অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধের চর্চার জন্য পাঠ্যপুস্তকের সকল ভুলত্রুটি দ্রুত সংশোধন ও পরিমার্জন করে উদার বিজ্ঞানভিত্তিক পাঠক্রম প্রণয়নের জোর দাবি জানান। এ ধরনের পাঠক্রম রচনায় শিক্ষক-সমাজ সরকারের সহায়তায় এগিয়ে আসতে সদা প্রস্তুত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/২৭ জানুয়ারি ২০১৭/হিমেল