২৬ এপ্রিল, ২০১৯ ১৯:৫১

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে আমরণ অনশন স্থগিত

সোমবারের মধ্যে উপাচার্য অপসারিত না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির হুশিয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে আমরণ অনশন স্থগিত

উপাচার্যের পদত্যাগের একদফা দাবিতে আমরন অনশনরত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আগামী সোমবার পর্যন্ত অনশন স্থগিত করেছেন। তৃতীয় দিনের অনশন চলাকালে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বরিশালের শিক্ষাবিদ প্রফেসর মো. হানিফের নেতৃত্বে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা এবং সুশীল সমাজের একটি প্রতিনিধি দলের অনুরোধে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আপাতত অনশন স্থগিত করেন। তারা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জুস পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান। 

তবে আগামী সোমবারের মধ্যে উপাচার্যকে অপসারণ করা না হলে আবারও ছাত্র-শিক্ষক সভা করে পরবর্তী কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া।

বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে দাবি আদায় না হলে সোমবার থেকে স্থানীয় সুশীল সমাজ নেতৃবৃন্দও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অনশনে যোগ দেবেন জানিয়েছেন প্রতিনিধি দলের অন্যতম অধ্যাপক মহসিন-উল ইসলাম হাবুল। তিনি বলেন, প্রফেসর মো. হানিফ এবং শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুসও শিক্ষার্থীদের অনশনে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানান তিনি। 

এর আগে উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএস ইমামুল হকের অপসারনের একদফা দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আমরন অনশনের তৃতীয় দিন অতিবাহিত হয়। তৃতীয় দিন পর্যন্ত অনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ ৪ জন শিক্ষক এবং ১০ জন শিক্ষার্থী। তাদের শের-ই বাংলা মেডিকেল এবং বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

দুপুরে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙ্গাতে গিয়েছিলেন সিন্ডিকেট কমিটির সদস্য ও বরিশাল শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস। কিন্তু শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের অপসারণ সংক্রান্ত প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের ঘোষণা ছাড়া অনশন ভঙ্গ করবেন না বলে তাকে জানিয়ে দেন। যদিও তিনি প্রফেসর হানিফের সাথে ফের সন্ধ্যায় তাদের অনশন ভাঙ্গাতে যান।

এর আগে দুপুরে শিক্ষার্থীদের শারীরিক অবস্থা দেখতে যান শের-ই বাংলা মেডিকেলের পরিচালক ডা. মো. বাকীর হোসেন। 

উপাচার্যের অপসারণের একদফা দাবিতে টানা একমাস ধরে আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় গত বুধবার সকাল ১১টায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যলেয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। ওই রাতেই তাদের সাথে অনশনে যোগ দেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকসহ ৫ জন শিক্ষক। 

শিক্ষার্থী তনুশ্রী ভট্টাচার্য জানান, উপাচার্যের অপসারন দাবিতে চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন। আগামি সোমবারের দাবি উপাচার্য অপসারণ না হলে ফের কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুশিয়ারি দেন তিনিসহ অন্যান্যরা। 

গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানোয় প্রতিবাদ করলে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের কটুক্তি করেন। এর প্রতিবাদ ও প্রত্যাহার সহ ১০ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। গত ২৯ মার্চ ভিসি তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। এতে শিক্ষার্থীরা শান্ত না হওয়ায় ভিসির পদত্যাগের একদফা দাবিতে আন্দোলন শুর করে। কিন্তু তিনি পদত্যাগ না করে ১৫ দিনের ছুটিতে গিয়ে উল্টো গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আন্দোলনরত শিার্থীদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেয়। এতে শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে উপাচার্যের অপসারণের একদফা দাবিতে বুধবার থেকে আমরণ অনশন শুরু করেন।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর