ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সমাজ কল্যাণ বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সোমবার দুপুর ১টার দিকে ঝাল চত্বর এলাকায় এবং অনুষদ ভবন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় ওই ছাত্রী প্রচন্ড অসুস্থ হয়ে পড়ে। আজ এ ঘটনায় ওই ছাত্রী বিভাগীয় সভাপতি বরাবর লিখিত একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী শারমিন সাথী, অনন্যা নারগিস, তাজমীন নাহার এবং জান্নত-ই-কাওনাইন মাকনুন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে একই বিভাগের শিক্ষার্থী তুশারের সঙ্গে ঘুরতে দেখে তাদের পথরোধ করেন। কেন তার সঙ্গে ঘুরছে তা জেরা করতে থাকেন তারা। এসময় অভিযুক্তরা ওই শিক্ষার্থীর উপর চড়াও হন এবং মানসিকভাবে হেনস্থা করেন।
এক পর্যায়ে তুশার ওই ভুক্তভোগি ছাত্রীকে নিয়ে অনুষদ ভবনের সামনে আসলে সেখানে অভিযুক্তরা এসে পথরোধ করেন। একই ভাবে র্যাগিং দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীকে গালি-গালাজ, হুমকি এবং মারধর করার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ।
এসময় ভুক্তভোগী ছাত্রী আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং বমি করেন। পরে তুশার তাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে বাসে করে কুষ্টিয়া শহরে তার ম্যাসে পাঠিয়ে দেয়। এ বিষয়ে তুশার বলেন, ‘আমার অভিযুক্ত ছাত্রীদের সঙ্গে কোন শত্রুতা নাই। তারা কেন এমন উগ্র আচরণ করেছে আমি জানি না। আমি বাধা দিলেও আমাকে উপেক্ষা করে তারা নির্যাতন চালায়।’
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘তারা আমাকে মানসিক নির্যাতন করেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জান্নত-ই-কাওনাইন মাকনুনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে মিডিয়াকে কিছু বলবো না।’
এ ঘটনায় মঙ্গলবার ওই ভুক্তভোগী ছাত্রী বিভাগীয় সভাপতির কাছে অভিযোগপত্র দেন। এছাড়াও অভিযুক্ত এই চার ছাত্রীর বিরুদ্ধে তাদের নিজ বিভাগের নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে সহপাঠীরা জানিয়েছে।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উাপচার্য এবং সমাজ কল্যাণ বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমি র্যাগিং বিষয়ে একটি আবেদন পেয়েছি এবং প্রক্টরের কাছে হস্তান্তর করেছি। প্রক্টর বিষয়টি দেখছেন। সব কিছু যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। আমরা র্যাগিং বরদাশত করবো না, বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং নিষিদ্ধ থাকবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ বলেন, ‘আমি সোস্যাল ওয়েল ফেয়ার বিভাগের সভাপতির কাছে থেকে অভিযোগপত্র পেয়েছি। দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন পেশ করবো।’
বিডি-প্রতিদিন/হিমেল