১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১৯:৫৬

গৃহকর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি

গৃহকর্মীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) ও বর্তমান বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে তার সাবেক গৃহকর্মী যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানির অভিযোগ তুলেছেন। আজ বুধবার দিনভর চেষ্টার পরও অভিযোগকারীর অভিযোগপত্র গ্রহণ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগকারী তার লিখিত অভিযোগপত্রে বলেন, আমি শাহজাহান স্যারের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতাম। কাজ করার সময় তার স্ত্রী বাসায় না থাকলে তিনি বিভিন্ন অজুহাতে শারীরিকভাবে আমার সাথে ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করতেন, খারাপ উদ্দেশ্য প্রকাশ করতেন এবং আর্থিক প্রলোভন দেখাতেন। আমি নানান কৌশলে তার খারাপ উদ্দেশ্য থেকে বাঁচার চেষ্টা করতাম। কিন্তু বাসা খালি থাকায় কখনো কখনো তা পেরে উঠিনি।

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এরকম শ্লীলতাহানির শিকার হয়ে আমি মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি এবং একই সঙ্গে ভয়-ভীতি প্রদর্শনের ফলে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকি। পরবর্তীতে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষকের কাছে উক্ত ঘটনা সমূহ খুলে বলি এবং বিচার চাই। কিন্তু তখন প্রত্যেক শিক্ষক আমাকে জানান আপনি যার কাছে বিচার চাইবেন তিনিই তো অপরাধী। পরবর্তীতে স্থায়ী ভিসি স্যার আসলে করোনার বন্ধে আমি তার সাথে দেখা করতে পারিনি। আমি আশাবাদী আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া যৌন হয়রানি ও শ্লীলতাহানির সুষ্ঠু বিচার তার কাছে পাবো।

থানায় বা আদালতে অভিযোগ না করে কিংবা মামলা না করে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট কেন অভিযোগ করছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমরা গরীব মানুষ, আদালতে গেলে অনেক টাকা লাগতে পারে। তাই আমি উপাচার্য স্যারের নিকট বিচার চাইছি।”

এদিকে উক্ত গৃহকর্মী উপাচার্য বরাবর যৌন হয়রানির অভিযোগ দায়ের করার জন্য সারাদিন চেষ্টা করলেও অভিযোগপত্র গ্রহণ করেননি উপাচার্য প্রফেসর ড. একিউএম মাহবুব। পরবর্তীতে অভিযোগকারী অভিযোগটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ সেলে জমা দিতে চাইলে যৌন প্রতিরোধ সেলও অভিযোগটি গ্রহণ করেনি।

এ বিষয়ে যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের প্রধান মানসুরা খানম বলেন, “অভিযোগকারীর অভিযোগটি বিধিসম্মত না হওয়ায় অভিযোগটি গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।” অভিযোগ গ্রহণ না করার বিষয়ে উপাচার্য ড. একিউএম মাহবুব বলেন, “ঘটনাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের বাইরের ঘটনা এবং ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ নয়। তাই তার অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়নি। কারণ এ ঘটনার বিচার করার এখতিয়ার আমার নেই।’ এ সময়ে তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় বিচার প্রাপ্তির জন্য ভুক্তভোগীকে প্রচলিত আইনের আশ্রয় নিতে হবে।

অভিযোগের বিষয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য (চলতি দায়িত্ব) ও বর্তমান বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. শাহজাহান বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিন পদত্যাগ করার পর আমাকে ভারপ্রাপ্ত (চলতি দায়িত্ব) উপাচার্যের দায়িত্ব দেয়া হয়। এরপর থেকেই সাবেক উপাচার্যের অনুসারীরা বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয় ও আমার বিরুদ্ধে নানা ধরণের ষড়যন্ত্র করেছেন। এটাও তারই অংশ। মূলত আমাকে সামাজিক ও পারিবারিকভাবে হেয় করার জন্য এ ধরণের মিথ্যা ও ন্যক্কারজনক অভিযোগ করা হচ্ছে। তবে যথাযথ তদন্ত হলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর