রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে সাড়ে ৫ কোটি থেকে ১১ কোটি টাকার সিট বাণিজ্যের অভিযোগ করেছে ‘রাকসু আন্দোলন মঞ্চ’। বুধবার সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহণ মার্কেটের আমতলায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের রাজনৈতিক ব্লকের নামে ছাত্রলীগের দখলদারিত্ব বন্ধ করে নিয়মিত হল সংসদ চালুর দাবিও জানিয়েছে ‘রাকসু আন্দোলন মঞ্চ’। এছাড়াও তারা আবাসিক হলের সিট বাণিজ্যের সাথে জড়িত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ছাত্রত্ব বাতিলসহ চার দফা দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে তাদের দাবিসমূহ মানা না হলে কঠোর আন্দোলনে যাবেন বলেও হুশিয়ারি দেন তারা।
লিখিত বক্তব্যে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সমন্বয়ক আব্দুল মজিদ অন্তর বলেন, ‘করোনাকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের ১১টি হলে প্রায় দেড় হাজার সিট শূন্য হয় যার মধ্যে ১১শতাধিক সিটে হল ভেদে সিটপ্রতি ৫-১০ হাজার টাকার বিনিময়ে উঠিয়েছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সেই সঙ্গে বৈধ শিক্ষার্থীদের জোর করে হল থেকে বের করে দেওয়া এবং বৈধ আবাসিক শিক্ষার্থীদেরকে হলে উঠতে বাধা দেওয়ার ঘটনাও নিয়মিত ঘটছে।’
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা প্রকট আকার ধারণ করেছে। একজন শিক্ষার্থীর বৈধভাবে হলে সিট পাওয়ার ন্যায্য অধিকার হলেও প্রশাসন সেটা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী হলগুলোতে গণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সিট বরাদ্দের নিয়ম থাকলেও অধিকাংশ হলেই তা মানা হচ্ছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবগুলো হলেই শত শত সিট ফাকা থাকলেও শুধু জিয়াউর রহমান হল এবং শামসুজ্জোহা হলে গণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সিট বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু বরাদ্দকৃত শিক্ষার্থীদের ১০-১৫ শতাংশের বেশি শিক্ষার্থীকে হলে ওঠাতে পারেনি হল প্রশাসন। আর এই সুযোগে হলের সিটগুলো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দখল করে নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ খান, রাবি শাখা নাগরিক ছাত্র ঐক্যের সভাপতি মেহেদী হাসান মুন্না, সাধারণ সম্পাদক মীর আলহাজ হোসেন, শাখা ছাত্র ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মহব্বত হোসেন মিলন, শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হাসান প্রমুখ।
তবে রাকসু আন্দোলন মঞ্চের অভিযোগের বিষয়ে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, ‘সিট বাণিজ্যের অভিযোগ পুরোই ভিত্তিহীন। বানোয়াট গল্প। সিট বাণিজ্য সংক্রান্ত কেউ কোনো প্রমাণ দিতে পারবে না। আর কেউ যদি আমাদের কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সিট বাণিজ্যের প্রমাণ দিতে পারে, তবে সেই নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ