৩ আগস্ট, ২০২২ ১৯:০৭

মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ ঢাবি ছাত্রলীগের দুই কর্মীদের বিরুদ্ধে

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

মারধর ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ ঢাবি ছাত্রলীগের দুই কর্মীদের বিরুদ্ধে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বহিরাগত এক ব্যক্তিকে মারধর করে মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের দুই কর্মীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রজিত দাস শাহবাগ থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে এগারোটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। 

অভিযোগপত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তুষার হোসেন এবং ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের মো. শামীমুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তারা দুজনেই সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মারিয়াম জামান খান সোহানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘আমি মোটরসাইকেলযোগে পলাশী হতে টিএসসির উদ্দেশ্যে রওনা দিই। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে সূর্যসেন হলের মো. তুষার হোসেন ও মো. শামীমুল ইসলামসহ অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জন আমার মোটরসাইকেল থামিয়ে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এ সময় মোটরসাইকেল ও মোবাইল ফোন জোরপূর্বক নিয়ে যেতে চাইলে আমি প্রতিবাদ করি। পরে তারা আমাকে লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট করে মুখমণ্ডলসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জখম করে। থাপ্পড়ে আমার কানের পর্দা ফেটে যায়।’

অভিযোগে তিনি আরও বলেন, ‘পরে তারা আমাকে সূর্যসেন হলের গেস্টরুমে নিয়ে ফের মারধর করে। তারা আমার পালসার মোটরসাইকেল (ঢাকা মেট্রো ল-৫১-১২৭৫), আইফোন ও নগদ ১৭ হাজার টাকা নিয়ে যায়। তারপর খালি হাতে ধাক্কা মেরে বের করে দিয়ে বলেন, ‘তুই সোজা চলে যাবি। ডানে বামে কোথাও তাকাবি না।’ এ সময় তারা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।’

জানা যায়, প্রজিতের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি ছিলো এসএম হলের ছাত্রলীগ নেতা মিলন খানের। খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে প্রজিতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি করলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন তিনি। এসময় মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার করেন মিলন খান। 

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ কর্মী তুষার হোসেন বলেন, ‘প্রজিতকে আমার একজন বড় ভাই পাঠিয়েছিল আমাকে নিয়ে যেতে। কিন্তু তিনি হলে এসে ‘আমাকে তুলে নিয়ে যেতে এসেছেন’ বলে জানান। আমার জুনিয়রেরা তখন বিষয়টি ভুল বুঝলে সামান্য হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তাকে গেস্টরুমে বসানো হয়। এটি একটি ভুল বোঝাবুঝি, আমি এটি নিয়ে পরে ক্ষমাও চেয়েছি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজেও সব আছে। অন্য অভিযুক্ত শামীমুল ইসলামও একই কথা বলেন। 

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ছাত্রলীগ নেতা মিলন খান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছি। কিন্তু ওরা তাৎক্ষণিকভাবে মোবাইল বা টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তবে, এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সভাপতি মারিয়াম জামান খান সোহান। 

শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার বলেন, মারধরের একটি অভিযোগ গতকাল রাত তিনটার দিকে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে অভিযোগকারীর ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ঘটনার বিষয়ে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর