মানুষের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে এবং পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের আশ্বাসে সাড়ে ৪ ঘণ্টা পর বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করেছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে বরিশাল-কুয়াকাটা মহসড়কে যান চলাচল শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) রাত ১১টার দিকে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
সড়ক দুর্ঘটনায় আহত একছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে মহাসড়কের দুইপাশে যানবহনের দীর্ঘ লাইন পড়েছে। চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, শনিবার (৫ নভেম্বর) দিবাগত রাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের পঞ্চম ব্যাচের শিক্ষার্থী ইসমাইল খলিল ইমন ঢাকা থেকে সাকুরা পরিবহনের একটি বাসে করে বরিশালে যাচ্ছিলেন। ফরিদপুরের ভাঙ্গার মাধবপুর অতিক্রমকালে রাত পৌনে ৪টার দিকে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে বাসের ধাক্কা লেগে চারজন নিহত হন। এতে ইমনসহ আহত হন অন্তত ১৫ জন। ইমনকে প্রথমে ফরিদপুর পরে ঢাকা স্পেশাইলজড হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) বেলা ১২ টার দিকে ইমনের মৃত্যু হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যার পর শিক্ষার্থী ক্যাম্পাস সংলগ্ন মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা মহসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, বেপরোয়াভাবে বাসটি চালানোর কারণে এবং সঠিক চিকিৎসার অভাবে মেধাবী শিক্ষার্থী ইমনের মৃত্যু হয়েছে। আমরা পাঁচদফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেছি। দাবিগুলো হলো— নিহত ছাত্রের পরিবারকে সাকুরা পরিবহনের পক্ষ থেকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তদন্ত করে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনা, সাকুরা পরিবহনের রুট পারমিট সাময়িকভাবে বাতিল করা, প্রতিটি বাস জিপিএস ট্রাকিংয়ের আওতায় এনে অতিরিক্ত গতির জন্য স্বয়ংক্রিয় জরিমানার আওতায় আনা।
তারা বলেন, পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্যোগে শিক্ষার্থী এবং সাকুরা পরিবহনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসা হয়েছিল। তবে সাকুরা পরিবহনের প্রতিনিধিদের পক্ষ থেকে দাবি বাস্তবায়নে যথাযথ আশ্বাস না মেলায় কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। রাত ১১টা থেকে বুধবার (৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার সকাল ১০টার দিকে ইমনের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। সাড়ে ১০ টার দিকে মানববন্ধন। এর মধ্যে দাবি মেনে নেওয়ার যথাযথ আশ্বাস পেলে সড়ক অবরোধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হবে। তা না হলে সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে ফের সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করবেন শিক্ষার্থীরা।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর ড. খোরশেদ আলম জানান, সাকুরা পরিবহনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা আলোচনা করেছেন। বুধবারও বিষয়টি নিয়ে ফের আলোচনায় হবে। আশা করছি, বিষয়টি সমাধান হয়ে যাবে।
বরিশাল বন্দর থানার (সাহেবেরহাট) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো আসাদুজ্জামান জানান, রাত ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক ছেড়ে চলে গেছেন। এরপর যানবাহন চলাচল স্বাভাভিক হয়েছে। রাতে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ধরনের ঘটনা এড়াতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মহাসড়কে পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
বিডি-প্রতিদিন/ এ এস টি