জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির আসন সংখ্যা মাত্র ৩৫০টি। আসন সংকটসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত লাইব্রেরিটি। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সুযোগ-সুবিধা নেই লাইব্রেরিতে। সেই সঙ্গে পড়াশোনার জন্য যে ধরনের পরিবেশ দরকার তাও পর্যাপ্ত নেই।
বুধবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ ভবনের ছয় তলায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি। সেখানে নেই পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা। পাশাপাশি হওয়ায় আসনগুলোতে বসে পড়াশোনা করা কষ্টসাধ্য। এছাড়া অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা একেবারে নাজেহাল। পুরো লাইব্রেরিতে মাত্র দুইটি অগ্নিনির্বাপক সিলিন্ডার, যার একটিতেও নেই উৎপাদন বা মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি সংলগ্ন কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে আগুন লাগলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে লাইব্রেরিতে। লাইব্রেরিতে প্রবেশের জন্য আছে একটি মাত্র সরু দরজা, যা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে বা আগুন লাগলে বের হওয়া একেবারে অসম্ভব। নেই কোনো জরুরি বহির্গমনের ব্যবস্থা।
লাইব্রেরিতে নিয়মিত পড়তে যাওয়া দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ বলেন, নিয়মিত লাইব্রেরিতে আসা হয় কিন্তু গরমের জন্য পড়তে কষ্ট হয়। লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করতে না পারায় গরমে নাজেহাল অবস্থা। এছাড়াও গাদাগাদি করে বসতে হয়, যা অনেক অসুবিধা হয় আমাদের। আশা করি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অতি শিগগিরই একটা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
লাইব্রেরিতে পড়তে যাওয়া তৃতীয় বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী আবু রায়হান জানান, আমাদের লাইব্রেরিতে শিক্ষার্থীদের তুলনায় আসন সংখ্যা কম। তার উপর লাইব্রেরির ভেতর নেই পর্যাপ্ত আলো বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা। এসির ব্যবস্থা নেই। আবার সিলিং ফ্যানের সংখ্যাও কম। এই তীব্র গরমে পড়তে গিয়ে অনেকে অসুস্থ হয়ে যায়। তাছাড়া শুক্র ও শনিবার লাইব্রেরি অফ থাকে। এই দুইদিন খোলা রাখার ব্যবস্থা থাকলে আমাদের জন্য ভালো হতো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমস্যাগুলো বিবেচনা করলে আমরা যারা লাইব্রেরিতে পড়তে আসি, তাদের অনেক উপকার হবে।
কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারিক মো. এনামুল হক বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমাদের মূলত জায়গা সংকট বিশ্ববিদ্যালয়ের সব জায়গায়। কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে আসন সংখ্যা শিক্ষার্থী অনুপাতে কম, নতুন ক্যাম্পাসের কাজ শেষ হলে এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে। এছাড়া আসন সংখ্যা বাড়ানো সম্ভব হবে বলে মনে হয় না। আমরা পুরো লাইব্রেরি এসি করার কথা বলেছিলাম। কিন্তু কবে লাগাবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
বিডি প্রতিদিন/এমআই