৯ এপ্রিল, ২০২৪ ২০:২৫

হারিয়ে যাওয়া রিকশাচিত্রে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

হারিয়ে যাওয়া রিকশাচিত্রে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতি

ইউনেস্কোর অপরিমেয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতির হারিয়ে যাওয়া রিকশাচিত্রকে মূল প্রতিপাদ্য করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এবারের নববর্ষ উদযাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে উৎসব উদযাপনের প্রস্তুতি উপলক্ষে রিকশাচিত্র অঙ্কন করেছেন চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। আসছে ১৪ এপ্রিল এবার ঈদের ছুটি থাকায় আগামী ১৮ এপ্রিল বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এবারের বৈশাখ উদযাপনের মূল অংশজুড়েই থাকবে রিকশাচিত্র। বাংলা নববর্ষ ১৪৩১-কে বরণ করে নিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় ফটকের পাশের দেয়ালে পেইন্টিং করা হয়েছে। রিকশা পেইন্টিংয়ের আদলে দেয়ালে ফুটে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটক, বুড়িগঙ্গার নৌকা, মা ও প্রকৃতির বিভিন্ন চিত্র।

শিক্ষার্থীদের আঁকা দেয়ালচিত্রতে রয়েছে ফুল, মাছ, নৌকা, বাঘ ও ময়ূরসহ নানা ধরনের চিত্র। দেশের রিকশায় আঁকা নানা ধরনের চিত্রের মধ্য থেকে আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন চিত্রগুলোকে উজ্জ্বল রঙে দেয়ালে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এছাড়াও বৈশাখ উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রাতেও থাকবে বড় আকৃতির রিকশা পেইন্টিং। এবারই প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালগুলোতে রং তুলির নান্দনিক ছোঁয়ায় আকর্ষণীয় করে তুলেছে চারুকলার শিক্ষার্থীরা। 

'বৈশাখে নূতন করিনু সৃজন, মঙ্গলময় যত তনু-মন’ স্লোগানে পয়লা বৈশাখ উদযাপন উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। কেউ কেউ পুতুল, পাখি, বাঘের মুখোশ, পেঁচার মুখোশ, পাখির মুখোশ, রাজা-রানির মুখোশ, নানা রকমের মাটির জিনিসপত্র তৈরি করেছেন। এছাড়াও বিভিন্ন আকার ও রকমের চিত্রকর্ম এবং মুখোশে রং করছেন তারা। শিক্ষার্থীদের রং তুলিতে ফুটে উঠছে আবহমান বাংলার রূপ।

আয়োজনের দায়িত্বে থাকা চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী নাঈম মৃধা বলেন, দেয়াল চিত্র, মুখোশ, স্ট্রাকচার সবকিছুতেই  রিকশা পেইন্টিংকে উপস্থাপন করা হয়েছে। দেয়াল পেইন্টিংয়ের ক্ষেত্রে রিকশা পেইন্টিংয়ের বিভিন্ন মোটিভ এবং উজ্জ্বল রংগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। রিকশাচিত্রে সাধারণত নায়ক-নায়িকা, কুমির, বাঘ, মাছ, ময়ূর, ফুল, লতাপাতার ও বিভিন্ন পশুপাখির ছবি দেখতে পাই। এগুলোর মধ্য থেকে দৃষ্টিনন্দন চিত্রগুলোকেই ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে।

দেয়ালচিত্র অঙ্কন করা শিক্ষার্থী পরমা দাস বলেন, এবারে বৈশাখ উপলক্ষে মঙ্গল শোভাযাত্রায়ও রিকশা পেইন্টিংয়ের বিভিন্ন দিক ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। শোভাযাত্রার জন্য আমরা মুখোশ তৈরি করছি। বাঘ ও পেঁচার পাশাপাশি রিকশা পেইন্টিংয়ের বিভিন্ন ফর্ম দিয়ে মুখোশ তৈরি করেছি এবং সবগুলো মুখোশে রিকশা পেইন্টিংয়ের মত উজ্জ্বল রং ব্যবহার করছি। রিকশা পেইন্টিংকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়াই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।

আয়োজন নিয়ে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আলপ্তগীন বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ইউনেস্কোর অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে রিকশাচিত্র স্বীকৃতি পেয়েছে। এজন্যই বাংলা নববর্ষ ১৪৩১ উপলক্ষে রিকশাচিত্রের যত রকমের অঙ্কন, মোটিভ এবং চিত্রায়ণের যতগুলো অলংকরণ রয়েছে- সেগুলো সব নিয়েই পেইন্টিং করেছি। মূলত এবারে আমাদের থিম হচ্ছে রিকশাচিত্র। মঙ্গল শোভাযাত্রাতেও বড় আকৃতির রিকশা পেইন্টিং থাকবে।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে আমরা বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিতে চাই। এজন্য ১৮ এপ্রিল আমরা বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠান করব। মঙ্গল শোভাযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনাসহ বিগত দিনে চলে আসা সকল আয়োজন থাকবে। পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেয়ালগুলোতে চারুকলার শিক্ষার্থীরা নান্দনিক সব চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে।

বিডি-প্রতিদিন/শফিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর